পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের উত্তর করিমপুর কসবা মাঝিপাড়া গ্রামে রোববার রাত (১৭ অক্টোবর) দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে ৩০ হিন্দু বাড়ির ৬০টি ঘর পুড়ে গেছে। এ সময় নগদ অর্থ, মূল্যবান দ্রব্য, গরু-ছাগল লুট করে নিয়ে যায় দুবৃর্ত্তরা। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে এবং পুলিশ ৪২ জনকে আটক করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের খাবার ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার বলেন, রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননামূলক পোস্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে। রবিবার এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তবে থানা পুলিশ সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পৌর মেয়রসহ ওই কিশোরের বাড়িতে অবস্থান নেয় বলে দাবি করেন পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার। তিনি বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত কিশোরের বাড়ি ঘিরে ফেলে। অবশ্য এর আগেই স্বপরিবারে তারা পালিয়ে যায়। পরে রাত ৯ টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত ওই কিশোরের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে করিমপুর-কসবার এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ৩০টি বাড়ির ৬০টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় দুটি মন্দিরসহ আশপাশের দোকানপাটেও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আতঙ্কিত নারী ও পুরুষরা ধানক্ষেতসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেন। পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সেখানে ফাঁকাগুলি ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে । রাত আড়াইটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার আরো বলেন, রাতভর ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।