পিরোজপুর জনস্বাস্থ্য
প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আলিম গাজীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও
দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। হেন কোনো অপকর্ম নেই যা হচ্ছে না পিরোজপুর জনস্বাস্থ্য
প্রকৌশল অধিদপ্তরে। টেন্ডারে কারচুপি, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রকল্পে
নয়ছয় করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি নির্বাহী
প্রকৌশলী আব্দুল আলিম গাজী তার পছন্দের ঠিকাদারকে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে ১১০ কোটি টাকার
টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার ঘটনায় স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় কয়েকজন
ঠিকাদার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, পিরোজপুর-১, ২ ও
৩ আসনের সংসদ সদস্য, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), প্রধান প্রকৌশলী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল
বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগ
সুত্রে জানা গেছে, প্রকৌশলী আব্দুল আলিম গাজী পিরোজপুরে যোগদানের পর সরকারি নিয়ম নীতির
তোয়াক্কা না করে তিনি তার ব্যক্তিগত পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফয়সাল এন্টারপ্রাইজকে
একাধিক কাজ পাইয়ে দেন। দিনের পর দিন একই ঘটনা ঘটতে থাকায় ক্ষোভ দানা বেঁধেছে স্থানীয়
ঠিকাদারদের মধ্যে। শূন্য অভিজ্ঞতার লাইসেন্স মেসার্স ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য যা যা করা দরকার তা তিনি করেছেন। অপর দিকে দুই একটি
কাজ অন্যান্য ঠিকাদার পেলেও তাও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের গাড়ির ড্রাইভার শাহিনসহ
তার একান্ত অনুসারি ঠিকাদাররা পান। এছাড়া যেনো তেনো ভাবে কাজ সম্পন্ন করে বিল তুলতে
ঠিকাদারকে সহযোগীতার প্রমানও পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে তার এসব অবৈধ কাজের আর্থিক লেনদেন
করেন ওই অফিসের হিসাব রক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন।
জানা গেছে, ইজিপির
তথ্যানুযায়ী বিগত প্রকৌশলীর আমলে পল্লী অঞ্চল নামে দুইটি পানি বিশুদ্ধ করণ প্লান্টের
টেন্ডার হয়। এই টেন্ডারে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র না থাকায় ফয়সাল এন্টার প্রাইজ সর্বনিম্ন
দর দাতা হওয়ায় (আইডি-৬১৭৮৭৬) কাজটি বাতিল হয়। প্রকৌশল আব্দুল আলিম গাজী এসে পুণরায়
দরপত্র আহবান করে ১০ শতাংশের কাছাকাছি রেট দিয়ে কাজটি ফয়সাল এন্টারপ্রাইজকে পাইয়ে দেয়।
একই ভাবে গত একবছরে ১১০ কোটি টাকার কাজ পায় ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ।
এ ছাড়াও ফয়সাল
এন্টাপ্রাইজকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি
অবৈধভাবে এ কাজ পাইয়ে দেন উল্লেখ করে কয়েকজন ঠিকাদার এ সংক্রান্তে স্থানীয় সরকার পল্লী
উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, পিরোজপুর-১, ২ ও ৩ আসনের সংসদ সদস্য, দুর্নীতি
দমন কমিশন (দুদক), প্রধান প্রকৌশলী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
একজন ঠিকাদার বলেন, বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী পিরোজপুরের বাইরের বিভিন্ন ঠিকাদারী
প্রতিষ্ঠানকে কাজ পেতে সহযোগিতা করেন। তিনি এর আগে খুলনায় তার ভগ্নিপতির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান
ওয়েলকাম মটরর্স এর নামে পিরোজপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক কাজ পাইয়ে
দেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী
আব্দুল আলিম গাজীর বিরুদ্ধে এমন আরো কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)
তদন্ত করছে।
এ ব্যাপারে নির্বাহী
প্রকৌশলী আব্দুল আলিম গাজী বলেন, খুলনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েলকাম মটরস কাজ পেয়েছে
তার কাগজ পত্রের বলে। এছাড়া ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ যে সকল কাজ পেয়েছে ইজিপি টেন্ডারের
মাধ্যমে। যদি কাগজপত্র সঠিক থাকে ইজিপির মাধ্যমে অন্যরাও কাজ পাবে।