
নরসিংদীর মাধবদীতে পায়ে থুতু ফেলাকে কেন্দ্র করে মোবারক হোসেন (১৮) নামে এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমিন। এর আগে, রোববার (১২ নভেম্বর) দিনগত রাতে মাধবদী ও আড়াইহাজার থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত মোবারক হোসেন
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার সাতগ্রাম ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নুরুল
ইসলামের ছেলে। তিনি এবার মাধবদীর এসপি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি
পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
গ্রেফতারকৃতরা
হলেন- নরসিংদী সদরের দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আলী আহম্মেদের ছেলে আরাফাত (১৯), মধ্য
বিরামপুরের আব্দুর রহিমের ছেলে রাহাত (১৮), মাধবদী থানার দড়িপাড়া এলাকার সেলিমের ছেলে
অলিউল্লাহ (২১) ও একই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে অলি (১৮)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১০ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে মোবারক হোসেন রিক্সাযোগে বাড়ি ফেরার পথে মাধবদীর বাহাদুরপুরে পাকা রাস্তার মাথায় এলে তার মুখে থুতু আসে। পরে সেই থুতু ফেললে ইয়াছিন মিয়া নামে এক কিশোরের গায়ে না পড়ে পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে। এতে ইয়াছিন মোবারককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। ইতোপূর্বে
মোবারক এর সঙ্গে ইয়াছিন এর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আড়াইহাজার থানার বাহাদুরপুর এলাকায়
বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় একাধিক বার ঝগড়া বিবাদ ও মারামারি হয়। এই ঝগড়া বিবাদকে কেন্দ্র
করে ইয়াছিন ও তার অপরাপর সহযোগীরা পরিকল্পনা করে হত্যার জন্য সুযোগ খোঁজতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায়
শনিবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মাধবদী থানাধীন দক্ষিণ বিরামপুর আউয়ালের চায়ের দোকানের
সামনে মোবারক হোসেনকে পেয়ে ইয়াছিন ও অন্যান্য সহযোগিরা পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক হত্যার
উদ্দেশ্যে লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি নিয়ে কিছু বোঝার আগেই মোবারকের ওপর
অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয়রা গুরুতর
আহত অবস্থায় মোবারককে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে
দাঁড়িয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে ১২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবারকের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রোববার
মাধবদী থানায় মামলা দায়ের করার হয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায়
মাধবদী ও আড়াইহাজার থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ আসামিকে
গ্রেফতার করা হয়।
নরসিংদীর অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার মো. আল আমিন বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। গ্রেফতারদের
আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।