আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

পাটুরিয়ায় ফেরি ডুবি, দশজনকে জীবিত উদ্ধার

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার পদ্মা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে আটকে থাকা একটি ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে ফেরির সেকেন্ড ড্রাইভার হুমায়ূন কবির এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের কাছে ভেড়ানোর সময় বাল্কহেডের ধাক্কায় ফেরিটি ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ফেরির নাম রজনীগন্ধা। ফেরিটিতে ৭টি ছোট ট্রাক ও ২টি বড় ট্রাক ছিল।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরিটি ৯টি গাড়ি নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে মাঝনদীতে নোঙর করে। সকাল ৮টার পর পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ৫ নম্বর ঘাটের কাছে ভেড়ানোর সময় বাল্কহেডের ধাক্কায় ফেরিটি ডুবে যায়। আরিচা ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি ইউনিট কাজ করছে।


আরও খবর



অগ্নি নিরাপত্তা

রেস্টুরেন্ট-দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের মতবিনিময়

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অগ্নিঝুঁকি হ্রাস ও অগ্নি নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণে রেস্টুরেন্ট ও দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। বুধবার(৩ এপ্রিল) দুপুরে অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.  মাইন উদ্দিন; পরিচালকবৃন্দসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ এবং দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মহাসচিব জনাব মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া; রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গণি, মহাসচিব ইমরান হাসানসহ সমিতির অন্য প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

মতবিনিময় সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। উপ-পরিচালক (অপারেশন্স ও মেইনটেইন্যান্স) কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া দোকান ও রেস্টুরেন্টের অগ্নিঝুঁকি এবং তা নিরসনে করণীয় বিষয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। প্রেজেন্টেশন শেষে সকলের কাছে উন্মুক্ত মতামত ও বক্তব্য আহ্বান করা হয়।

এ সময় বক্তারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। দোকান ও রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সকল স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে রেস্টুরেন্ট, মার্কেট ও দোকানসমূহে অগ্নি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার বিষয়ে সদিচ্ছা পোষণ করা হয়। রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করার এবং সেফটি ইকুইপমেন্টের ট্যাক্স কমানোর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন অগ্নিঝুঁকি নিরসনে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।

তিনি বলেন, আমরা নিরাপদ দেশের পক্ষে। কেউ আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। আমরা সকলকে সাথে নিয়ে দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাই।


আরও খবর



২৪ ঘণ্টা না যেতেই আবারও কমলো স্বর্ণের দাম

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

একদিন না যেতেই আবারও স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ দাম এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্প‌তিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আজ বিকেল ৩টা ৫০ মি‌নিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল স্বর্ণের দা‌ম বা‌ড়ি‌য়ে‌ছিল বাজুস। এর ম‌ধ্যে ৬ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর একদিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।

এর দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২০৯৯ টাকা ও ২৫ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণ ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোরর ঘোষণা দিলো বাজুস। অর্থাৎ তিন দিনে ভ‌রি‌তে স্বর্ণের দাম ক‌মেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।


আরও খবর



আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেলের পিলারে বাসের ধাক্কা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে সড়ক বিভাজনে উঠে মেট্রোরেলের পিলারে সজোরে ধাক্কা মেরেছে নিউমার্কেট-আজিমপুরগামী সেফটি এন্টারপ্রাইজের একটি সিটি বাস। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

যাত্রীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত গতির কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়ক বিভাজনের ওপর উঠে যায়।

কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রশিদ জানান, খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। বাসটির চালক এবং হেলপার পলাতক। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরে গাড়ির কাগজপত্রসহ চালক এবং হেলপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



মাথাপিছু ঋণ বেড়ে দেড় লাখ টাকা: সিপিডি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

গত তিন বছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলেছে, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখ টাকা। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, ফলে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, আশির দশকে অনেক আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান দেশ স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়েছিল। সম্প্রতি এর বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে এ দেশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণের বড় বাধা এখন ঋণগুলোর শর্ত এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন।

আমরা যদি আশির দশকে ওপেকের সময় ঋণের সংকটের দিকে তাকাই, সেখানে দুটি পরিস্থিতি ছিল। একটি, লাতিন আমেরিকায় খুব বেশি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়া। তারা বিপদে পড়েছিল স্বল্পমেয়াদি ঋণে, সেগুলো তাদের খুব সস্তায় দেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা একসময় গিয়ে ঋণসংকটে পড়েছিল। একই ঘটনা শ্রীলঙ্কার ঋণ সংকটের। শ্রীলঙ্কার অনেক ঋণ স্বল্পমেয়াদি। শ্রীলঙ্কার একই সময় অনেক আফ্রিকান দেশেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’

ড. রেহমান সোবহান বলেন, একইভাবে বাংলাদেশও স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে সংকটের পথেই আছে। এটা খুবই উল্লেখ করার মতো, এ ধরনের ঋণ এখন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের রপ্তানি আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো, তাই এ জায়গায় তেমন সংকট নেই।’

মূল প্রবন্ধে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমাদের বিদেশি ঋণ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। আমরা এখন যদি সতর্ক না হই, তাহলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সরকার যে সতর্ক তা আইএমএফের কাছে ৪.৭ বিলিয়নের জন্য যে গেল সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।’

প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, বিদেশি ঋণ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, ১৯৮০ সালের দিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিদেশি ঋণ নিয়ে এ ধরনের বড় সমস্যায় পড়েছিল। সাম্প্রতিক ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়া গ্রিস বড় উদাহরণ। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ও ঘানার মতো দেশের উদাহরণ তো আছেই।’

আন্তর্জাতিকভাবে এ প্রভাব পড়ার বৈশ্বিক কারণগুলো হলো—কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব, বিশ্বে মালামাল ও সেবার চাহিদা কমে যাওয়া। দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কারণ—ঋণ ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, অনেক দেশ অদূরদর্শী ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন শর্তে ঋণ নেওয়া হয়েছে, মুদ্রার ওঠানামাও অনেক দেশে হয়েছে। এসব কারণ অভ্যন্তরীণ।’

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত ও বেশি বিদেশি ঋণ নিয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেই এ কারণে তা উদ্বেগের কারণ হয়েছে। ঋণের চাপে অনেকে আছে, অনেকে খেলাপি হয়েছে।

উন্নয়নশীল এসব দেশের সরকারি ঋণ ২০১০ সালে জিডিপির তুলনায় ৩৫ শতাংশ ছিল, ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। এর মধ্যে একই সময় দেশগুলোর বিদেশি ঋণ ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। এসব বিদেশি ঋণের মধ্যে ব্যক্তি খাতের ঋণও একইভাবে বেড়েছে। একই সময় ব্যক্তি খাতের ঋণ ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

বিশ্বব্যাংকের গবেষণার একটি অংশ তুলে ধরে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যেটি দেশগুলোর জিডিপির ৩৩ শতাংশ। পাবলিক অ্যান্ড পাবলিকলি গ্যারান্টেড (পিপিজি) ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

আইএমএফের সতর্কবাণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এসব দেশকে সতর্ক করে একটি প্রতিবেদন বানিয়েছে। আমরা কি আরেকটি ঋণ সংকটের দিকে যাচ্ছি?

তার মতে, বাংলাদেশের ঋণ ও পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে, যা সরকারকে অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা পাকলিক ও পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

সিপিডি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮.৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরো কঠোর হচ্ছে।

বিশেষ করে জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতা দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এর সঙ্গে ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেগাপ্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থপাচারের সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বড় আকারের অনেক প্রকল্পই অতিমূল্যায়িত করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। আবার প্রকল্পের ভেতরে বাস্তবায়ন পর্যায়ে কোনো না কোনো স্বার্থগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অন্যান্য দেশে জনগণের প্রাথমিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিয়ে ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে জনসাধারণের টাকা লুটের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠেছে। বিদেশি ঋণ নেওয়া প্রকল্পগুলোর মাধ্যমেও ব্যক্তি খাতে পুঁজি গড়ে উঠেছে। এটা বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজি সঞ্চয়কারী অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক নেতারা যে আশায় এই প্রকল্পগুলো নিয়েছিলেন, সেটায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশি-বিদেশি ঋণ থেকে সরকারের দায় বৃদ্ধির প্রবণতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের মাথাপিছু বিদেশি ঋণ তিন হাজার ১০ ডলার। আর অভ্যন্তরীণ উৎসর ঋণ মিলে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় আট হাজার ৫০ ডলারে। স্বাধীনতার এত বছর পরে সরকারের মাথাপিছু ঋণ এক লাখ টাকায় উঠেছিল অথচ তা পরের তিন বছরেই দেড়গুণ হয়ে গেছে।

কভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে ঋণ বেড়েছে বলে অনেকে দাবি করলেও প্রকৃত কারণ ভিন্ন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। ঋণ পরিশোধের চাপের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সালেও সরকারের আদায় হওয়া রাজস্বের ২৬ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হতো। অথচ এই হার এখন ৩৪ শতাংশে উঠেছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণ যাচ্ছে ২৮ শতাংশ আর বিদেশি ঋণ সাড়ে ৫ শতাংশ।

বিদেশি ঋণ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে অনেকেই দাবি করলেও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মোডি বা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস হিসেবে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং কমছে বলে দাবি করেন ড. দেবপ্রিয়। সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতাসহ বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ফলাফলের মধ্যেও বিপুল পরিমাণ ঋণে নেওয়া মেগাপ্রকল্প প্রকৃত সুফল দিতে পারছে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, বিনিয়োগ না বাড়লে প্রকল্পের ফলাফল পাওয়া যাবে না।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৪ থেকে ২৩.৮ শতাংশে আটকে আছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। গত দেড় দশকের সাফল্য কেন বিনিয়োগে প্রতিফলিত হয়নি? এফডিআই কেন জিডিপির ১ শতাংশে আটকে আছে? প্রশ্ন রেখে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ২০২৩ সালের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাতে সরকারের হিসেবেই কমেছে। এ ছাড়া শিক্ষা, ট্রেনিং বা কর্মে নেই এমন মানুষের হার বেড়েছে, বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিবারের সংখ্যাও বেড়েছে। ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ঋণ করে চলে।

বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করতে গিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের ক্ষতি হয়েছে মন্তব্য করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, শিক্ষায় গত ১৫ বছরে কোনোভাবেই জিডিপির ২ শতাংশের বেশি এবং স্বাস্থ্যে ১ শতাংশের বেশি বরাদ্দ হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অবহেলার প্রতিফলন এই এসভিআরএস প্রতিবেদনেও এসেছে বলে তিনি জানান। এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যথাযথ কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য তিন মাস পর আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কেবিনেটের সাব কমিটি ক্রয় কমিটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


আরও খবর



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রামের হালিশহর আর্টিলারি সেন্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার সকালে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নতুন এই স্থাপনা উদ্বোধন করেন তিনি। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দরবার করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা ৭৫ জন বাঙালি এবং বেসামরিক কিছু যোদ্ধা নিয়ে ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই ত্রিপুরার কোনাবনে গঠিত হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রেজিমেন্ট অব আর্টিলারির প্রথম ফিল্ড ব্যাটারি। এই ফিল্ড ব্যাটারি দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত মান্দাবাগ বাজার, সালদা নদী, কসবা, আখাউড়া সিংগাইর বিল, ফেনী ও চট্টগ্রাম অভিমুখে পরিচালিত বিভিন্ন অপারেশনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই বাংলাদেশের প্রথম ফিল্ড ব্যাটারি নামকরণ করা হয়।

রোববার আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বাড়াতে এবং মুক্তিযুদ্ধে এই ব্যাটারির অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামের হালিশহরে এই কমপ্লেক্স উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। ফলক উন্মোচনের পর তিনি ঊর্ধ্বতন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রামের মেয়র এবং সেনাপ্রধানকে নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন।

এরপর তিনি কমপ্লেক্সের ভেতর আর্টিলারি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। জাদুঘরে এই আর্টিলারির মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং তারপরের বিভিন্ন স্মারক রাখা হয়েছে।


আরও খবর