পঞ্জাবকে হারিয়ে আইপিএলে প্লে-অফের লড়াইয়ে
থাকল রাজস্থান। কিন্তু তাদের আশা খুবই ক্ষীণ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার
রান তাড়া করতে না পারায় তারা চতুর্থ স্থানে থাকা আরসিবিকে টপকাতে পারল না। পাঁচে এল।
শেষ ম্যাচে আরসিবিকে হারতে হবে বড় ব্যবধানে। তবেই থাকবে রাজস্থানের আশা। এ দিকে, দৌড়ে
রয়েছে কলকাতাও। এখন দেখার, শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে। শুক্রবার আগে ব্যাট
করে ১৮৭-৫ তুলেছিল পঞ্জাব। জবাবে রাজস্থান তোলে ১৮৯-৬।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৮৮ রান ১৮.৩ ওভারে
তুলতে হত রাজস্থানকে। কলকাতার বিরুদ্ধে ইডেনে রান রেট বাড়ানোর জন্যে যে ভাবে আগ্রাসী
খেলেছিল রাজস্থান, এ দিনও একই খেলা খেলতে হত তাদের। কিন্তু শুরুটা খুব একটা ভাল হয়নি।
জস বাটলারের খারাপ ছন্দ অব্যাহত। চারটি বল খেলে শূন্য রান করে সাজঘরে ফিরলেন। শুরুতেই
রাজস্থানের উইকেট চলে যাওয়ায় সঞ্জু স্যামসন তিনে নামেননি। পাঠিয়ে দেন দেবদত্ত পাড়িক্কলকে।
আরও পড়ুন: কোহলির সেঞ্চুরিতে প্লে-অফের দৌড়ে থাকলো ব্যাঙ্গালুরু
রাজস্থানের ইনিংসে দুই তরুণ ক্রিকেটার
এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। এক দিকে পাড়িক্কল আগ্রাসী ক্রিকেট খেললে, উল্টো দিকে চালিয়ে
খেলছিলেন যশস্বী জয়সওয়ালও। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৩ রানের জুটি
তৈরি করে ফেলেন। পাঁচটি চার এবং তিনটি ছয়ের সাহায্যে ৩০ বলে ৫১ করে ফিরে যান পাড়িক্কল।
সঞ্জু চারে নেমেও সুবিধা করতে পারেননি।
৩ বলে ২ রান করে রাহুল চাহারের বলে ফিরে যান। এক দিকে পড়েছিলেন স্রেফ যশস্বীই। রাজস্থানের
আশা তখন ক্রমশ কমছে। যশস্বীর সঙ্গে শিমরন হেটমেয়ার যোগ দেওয়ার পর আশা একটু বাড়ে। দু’জনে রান রেট বাড়ানোর
লক্ষ্যে চালিয়ে খেলতে থাকেন। যশস্বীর আবারও একটি অর্ধশতরান পেলেন। তার পরেই আউট হয়ে
গেলেন মারতে গিয়ে।
রিয়ান পরাগকে এ দিন দলে নিয়েছিল রাজস্থান।
যশস্বী আউট হওয়ার পর তাঁকে নামানো হয়। খেলছিলেনও চালিয়েই। কিন্তু অতিরিক্ত আগ্রাসী
হতে গিয়ে বিদায় নিলেন। হেটমেয়ার লড়লেন অনেকটাই। কিন্তু তাঁকে আর একটু আগে নামানো হলে
হয়তো আরও দ্রুত ম্যাচটা জিতত রাজস্থান।
এ দিকে, আগে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয় হয়
পঞ্জাবের। এক সময় মনে হয়েছিল কম রানেই মুড়িয়ে যাবে পঞ্জাব কিংসের ইনিংস। তা হলে দিলেন
না আইপিএলের সবচেয়ে দামী ক্রিকেটার স্যাম কারেন এবং জিতেশ শর্মা। কারেনের অপরাজিত ৪৯
এবং জিতেশের ৪৪ রানের জেরে রাজস্থানের বিরুদ্ধে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ১৮৭-৫ তোলে পঞ্জাব।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের জন্য দল ঘোষণা করেছে স্কটল্যান্ড
রাজস্থানের বিরুদ্ধে প্রথম ওভারেই উইকেট
হারায় পঞ্জাব। এ বারের আইপিএলে শতরান করা প্রভসিমরন সিংহ আবার ব্যর্থ। ট্রেন্ট বোল্টের
দ্বিতীয় বলেই তাঁর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান। আগের ম্যাচ অর্ধশতরানকারী অথর্ব
তাইড়ে নামেন। তিনি এবং ধাওয়ান মিলে কিছুটা সামাল দেন পঞ্জাবের ইনিংসকে। কিন্তু আগের
ম্যাচে অথর্বর ছন্দ রাজস্থানের বিরুদ্ধে দেখা যায়নি। চালিয়ে খেলে ১২ বলে ১৯ করে ফিরে
যান।
দিল্লির বিরুদ্ধে ৯৪ রান করে পঞ্জাবকে
প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। এ দিন তাঁর ব্যাটে বড় রানের আশা করেছিল
পঞ্জাব। কিন্তু সাইনির বলে ছয় মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস্ করে বোল্ড হলেন মাত্র ৯ রানে।
তার আগের ওভারেই ফিরে গিয়েছিলেন ধাওয়ান। আবারও বড় রান পেতে ব্যর্থ তিনি। ১২ বলে ১৭
করে পঞ্জাবের অধিনায়ক সাজঘরে ফেরেন।
৫০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে
গিয়েছিল পঞ্জাব। উদ্ধার করেন জিতেশ শর্মা। আগের ম্যাচে দলকে ডুবিয়েছিলেন। চাপের মুখে
এই ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এল ২৮ বলে ৪৪ রান। মেরেছেন তিনটি চার এবং তিনটি ছয়। জিতেশ
যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করেন শাহরুখ খান। প্রথম বল থেকে চালিয়ে খেলতে
থাকেন।
তবে পঞ্জাবকে ভদ্রস্থ রানে পৌঁছে দিলেন
স্যাম কারেন। আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামী ক্রিকেটারের তরফে এত দিন বলার মতো কোনও
ইনিংস পাওয়া যায়নি। দলের দরকারে অবশেষে কাজে এলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল জিতল না।