রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায় আধিপত্য
বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর)
দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে এই সংঘর্ষ। এ ঘটনায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান- পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহত সকলের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের আলোচনা
সভার আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান এমপির পক্ষ
উপজেলা পরিষদ গেটের সঙ্গে অডিটোরিয়াম হলে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের
পক্ষ রংপুর-ঢাকা চারলেন মহাসড়কে ওভারব্রিজের নিচে বিকেলে আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিকেল
সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ একটি মিছিল নিয়ে সভাস্থলে যাচ্ছিল। উপজেলা
পরিষদ গেট অতিক্রম করার সময় অন্য পক্ষের (এমপি পক্ষ) নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি
হয়। এ সময় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষ চলছে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের হাজার হাজার
নেতাকর্মী লাঠি ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে ধাওয়া
পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এ সময় উপজেলা সদরে জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে সন্ধ্যা ৬টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও
পুরো এলাকা জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আহতদের মধ্যে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিরঞ্জন মহন্তসহ ২০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানসহ ১০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। সংঘর্ষে আহত দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের দেখতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান শুক্রবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন।

আহত নেতাকর্মীদের দেখতে হাসপাতালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান।
মিঠাপুকুর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক
মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, 'মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক
লীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগের সকল নেতৃবৃন্দ মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা
জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আনন্দ র্যালির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল,
এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার তার নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের পাশ দিয়ে
যাওয়ার সময় সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান এমপি স্যার ও তার সুযোগ্য সন্তান জননেতা রাশেক রহমান ভাইকে নিয়ে বিভিন্ন
কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেয় এবং একপর্যায়ে আমাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এই ঘটনায়
আমাদের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়।'
উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার বলেন,
'মিঠাপুকুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সমাবেত হওয়ার পর নেতাকর্মীসহ আমরা মিছিল নিয়ে পূর্বনির্ধারিত
আলোচনা সভার স্থানে যাচ্ছিলাম। উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে এমপির পক্ষের লোকজন আমাদের
উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়। পরে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ
গড়ে তোলেন।'
মিঠাপুকুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহিবুর
রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে, পরিস্থিতি
স্বাভাবিক রয়েছে।