
মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি :
প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরেও শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে দলবেঁধে আসা পাখির কলরব কানে আসে স্থানীয়দের। এসব পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে রোজ ঘুম ভাঙে এখানকার মানুষের। অতিথি পাখিদের মনোরম উপস্থিতিতে মাগুরার মহম্মদপুরের প্রকৃতিতে এনেছে নতুন রুপ। তাদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। আবার ভিনদেশি এ সব পাখি হয়ে উঠেছে বিভিন্ন বয়সি মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম।
মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক এই দূশ্য অন্য কোথাও নয়, উপজেলা সদরের ঘোপ বাওড়ে। ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির আগমণে বৈচিত্রময় নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের যেন মেলা বসেছে ঘোপ বাওড়ের বিশাল জলায়তন জুড়ে। শীত মৌসুমের শুরুতেই প্রতি বছরই এসব পাখিদের বিচরণ লক্ষ করা যায়। পাখিদের কলতানে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। চোখে পড়ে মন মাতানো এক অপরুপ দূশ্য। যেন পাখিদের জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে ঘোপ বাওড়টি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখিদের ডানা মেলে উড়া, পানিতে ডুব দিয়ে আহার শিকার করার মতো মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। মনে হয় যেন দল বেঁধে নেমে পড়েছে খাদ্য সংগ্রহের প্রতিযোগিতায়। এরকম খাদ্যের অভিযান ও ছুঁটোছুঁটি আর লুটোপুটি চলে সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। আবার কচুরিপানার উপরে বসেও বিশ্রাম নিতে দেখা যায় পাখিদেরকে।
চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক এই মনেমিুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত নানা শ্রেনি-পেশার মানুষ ছুটে আসেন বাওড়ের তীরে। আগত ব্যক্তিরা দূর থেকেই দু’টোখ ভরে উপভোগ করেন পাখিদের কলরব, মিতালী আর মাতামাতি। যা অন্যরকম এক অনুভুতি।
তেমনই অনুভুতির কথা ব্যক্ত করলেন এই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আশা শিক্ষক আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর শীতের শুরুতেই বাওড়ে এই অতিথি পাখির দেখা মেলে। অতিথি পাখি ঝাঁক বেধে বিচিত্র স্বরে ডাকতে ডাকতে উড়ে চলা, খাবার সংগ্রহ করা কিচিরমিচির শব্দে বাওড়ের পানিতে নেমে আহার শিকারের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠা। এসব সুন্দর দূশ্য আমাদের মুগ্ধ করে তোলে। তাই পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি।
বাওড় কুলের বাসিদা প্রভাষক এস এম আজগার আলী বলেন, প্রতি বছর শীতের সময় অতিথি পাখিদের আগমণে মূখরিত থাকে ঘোপ বাওড়। আমরাও এ অতিথিদের অপেক্ষায় থাকি। শীতকালে বিভিন্ন দেশ থেকে আসে এসব অতিথি পাখি। শীত কমতে শুরু করলেই আবার তাদের দেশে ফিরে যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল জানান, এই অতিথি পাখি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়। এরা ভারসাম্যও রক্ষা করে। জীব বৈচিত্র রক্ষায় ঘোপ বাঁওড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং অতিথি পাখিদের এই অভয়ারণ্য নিরাপদ রাখতে আমাদের লোকজন নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। যদি কেউ এই পাখি শিকার করতে আসে আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।