বিশ্বকাপ শুরুর
আগে দলের মূল স্ট্রাইকার করিম বেনজেমাকে ইনজুরির কারণে হারায় ফ্রান্স। কিন্তু এবারের
ব্যালন ডি'অর জয়ী রিয়াল মাদ্রিদ তারকার অভাব বুঝতেই দিলেন না অলিভিয়ে জিরুদ ও কিলিয়ান
এমবাপ্পেরা।
তাদের দুর্দান্ত
পারফরম্যান্সে ভর করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপুটে জয় তুলে নিল গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
২০২২ বিশ্বকাপের
গ্রুপ 'ডি'-এর ম্যাচে আজ আল জানুব স্টেডিয়ামে ৪-১ গোলে জয় তুলে নিয়েছে দিদিয়ের দেশমের
দল। ফরাসিদের হয়ে জোড়া গোল করেছেন অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড জিরুদ। আর নিজে এক গোল করার পাশাপাশি
জিরুদের গোলে ভূমিকা রেখেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বাকি গোল আদ্রিওঁ রাবিওর।
ম্যাচের শুরুটা
অবশ্য ফ্রান্সের জন্য স্বস্তির ছিল না। কারণ মাত্র নবম মিনিটেই গোল হজম করে বসে তারা।
দারুণ ফিনিশিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে দেন মিডফিল্ডার ক্রেইগ গুডউইন। সেই সঙ্গে ২০১৪
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের (জার্মানির বিপক্ষে) পর এই প্রথম কোনো বিশ্বকাপ ম্যাচে
শুরুতে গোল হজম করল ফ্রান্স।
মড়ার ওপর খাঁড়ার
ঘা হিসেবে দ্বাদশ মিনিটে ফ্রান্সের লেফট-ব্যাক লুকা এরনঁদেজ মাঠ ছাড়েন হাঁটুর চোট নিয়ে।
বদলি হিসেবে নামেন তার ভাই থিও এরনঁদেজ। প্রথম ২৫ মিনিট পর্যন্ত কার্যত ফ্রান্স সেভাবে
অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণে ভীতি ছড়াতে পারেনি। তবে ২৭তম মিনিটে থিও এরনঁদেজের বাড়ানো বলেই
দারুণ হেডে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান রাবিও।
রাবিও নিজে গোল
করার মাত্র দুই মিনিট পরে জিরুদকে দিয়ে করার আরেক গোল। রাবিওর কাটব্যাক ধরে ফাঁকা জালে
বল পাঠিয়ে দেন জিরুদ। মাত্র পাঁচ মিনিটে দুই গোল দিয়ে এগিয়ে যায় ফরাসিরা। বিরতির আগে
ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের
শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েন এমবাপ্পে-গ্রিজমানরা। প্রথম কয়েক মিনিটে
কয়েকবার চেষ্টা করেও জালের দেখা পাননি এমবাপ্পে। তবে ৬৮তম মিনিটে এই পিএসজি তারকাকে
ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। বক্সের ভেতর থেকে তার ক্রসে বল পান বাইরে থাকা উসমানে
দেম্বেলে। বার্সা স্ট্রাইকার বল দখলে নিয়ে দারুণ দক্ষতায় ফের এমবাপ্পের দিকেই ফেরত
পাঠান। ছয় গজ বক্সের সামনে ডিফেন্সের জটলার মধ্যেই দারুণ হেডে বল জালে জড়ান এমবাপ্পে।
গোল দিয়েই থামেননি
এমবাপ্পে। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার ধার যেন আর বাড়তে থাকে। ৭১তম মিনিটে লেফট-উইং
থেকে তার বাড়ানো ক্রসে হেডে অস্ট্রেলিয়ার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জিরুদ। এই গোলের
মাধ্যমে ফ্রান্সের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোলের (৫০) রেকর্ডে ভাগ বসালেন এই এসি মিলান
তারকা। এই রেকর্ডে তার সঙ্গী ফরাসি কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরি।
অন্যদিকে রেকর্ড
গড়েছেন এমবাপ্পেও। ফ্রান্সের জার্সিতে সবচেয়ে কম বয়সে (২৩ বছর ৩৩৭ দিন) পাঁচটি বিশ্বকাপ
গোলের মালিক এখন তিনি। দল হিসেবে রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে ফ্রান্সও। প্রথমবারের মতো টানা
দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ম্যাচে ৪ বা তার বেশি গোল করল তারা। এর আগে এই শতাব্দীতে একই কীর্তি
গড়েছিল ব্রাজিল (২০২২) এবং জার্মানি (২০১০)। শুধু কি তাই, বিশ্বকাপে এই নিয়ে টানা পাঁচ
ম্যাচে জয় পেল ফ্রান্স। এর আগে ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ পর্যন্ত সমানসংখ্যক ম্যাচ জিতেছিল
তারা।