
মশিউর রহমান রাহাত,
পিরোজপুর:
পিরোজপুরে কচা
নদীর উপর নির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু
উদ্বোধন হবে আগামী চার সেপ্টেম্বর। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত উদ্বোধনের সুপারিশে সম্মতি
দিয়েছেন প্রধানমত্রী শেখ হাসিনা। নবনির্মিত এই সেতুর নাম করন হয়েছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন
নেসা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু। বৃহস্পতিবার দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করীম সেতু পরির্শন শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি
নিশ্চিত করেন।
মন্ত্রী বলেন,
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামি ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালী সংযুক্ত
হয়ে ঢাকার প্রান্ত থেকে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। তিনি পিরোজপুরের সর্বস্তরের জনগনের সাথে
পিরোজপুর প্রান্তে অবস্থান করবেন। মন্ত্রী বলেন কাঙ্খিত এ সেতু আনন্দ মুখর পরিবেশের
মধ্যদিয়ে উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পিরোজপুরের সর্বস্তরের জনগনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দের
বন্যা।
এ সেতুটি গত ৭
আগষ্ট সেতু মন্ত্রনালয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে চায়না ঠিকাদারি নির্মান প্রতিষ্ঠান “চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি
লিমিটেড”। উদ্বোধন উপলক্ষে বরিশাল সড়ক বিভাগ ও পিরোজপুর সড়ক বিভাগ প্রস্তুতি গ্রহন
করছে।
কচা নদীর উপর
নির্মিত সেতুটি চীন ও বাংলাদেশ সরকারের ৮শ ৮৯ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রায় এক কিলোমিটার
(৯৯৮ মিটার) দৈর্ঘ্য ও ৪৫ ফুট (১৩.০৪ মিটার) প্রস্থ । এটি বক্স গার্ডার টাইপের সেতু।
৯টি স্প্যানের ৭টি ১২২ মিটার এবং ২টি ৭২ মিটার স্প্যান রয়েছে। দির্ঘ সাড়ে তিন বছর কর্মযজ্ঞ
শেষে সেতুটি ১০টি পিলার এবং ৯টি স্প্যানের উপর দাঁড়িয়ে এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। কাজ
শুরু হওয়ার সাড়ে তিন বছরের মাথায় এ সেতুর কাজ সম্পন্ন হলো।
পিরোজপুর-১ আসনের
সংসদ সদস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ.ম. রেজাউল করিম
আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মানের পাশা-পাশি বেকুটিয়া
সেতুটিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। তার প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী এ সেতু নির্মান করা হয়েছে। সেতুটি
নির্মান হওয়ার ফলে বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও এক
ধাপ এগিয়ে গেলো। মন্ত্রী আরও বলেন, পিরোজপুরের সাথে সরাসরি বরিশাল, পায়রা বন্দর, কুয়াকাটা
সমুদ্রবন্দর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী এবং বরিশালের সাথে খুলনা মংলা সমুদ্র বন্দর, বাগেরহাট,
যশোর, বেনাপোলসহ মোট ১৮টি রুটের যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের কষ্ট লাঘব হবে। এ সেতু শুধু
নিরবিচ্ছিন্ন যোগযোগই নয় এ অঞ্চলের ব্যবসা বানিজ্য, শিক্ষা ও কৃষি ক্ষেত্রে ব্যপক প্রভাব
ফেলবে। দূর করবে বেকারত্ব।
প্রসঙ্গত, বিগত
২০০০ সালে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা পিরোজপুরে সরকারি সফরে এসে
ঘোষনা করেছিলেন কচা নদীর উপর পিরোজপুর প্রান্তের কুমিরমার ও কাউখালী প্রান্তে বেকুটিয়া
পয়েন্টে নির্মিত হবে উন্নত আধুনিক সেতু। যেই কথা সেই কাজ। প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের
৩০ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি গণভবন থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের
সিংহভাগ অর্থয়ানে অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু নির্মানের ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন করেন।