আজঃ শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

অর্থপাচারের অভিযোগে দারাজের শীর্ষ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ নভেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ নভেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি। ইতোমধ্যে অর্থপাচারের অভিযোগে দারাজের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুসন্ধানের স্বার্থে দারাজ কর্তৃপক্ষকে আগামী সপ্তাহে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ আবারও ডাকা হয়েছে। সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নামে দারাজ অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার করেছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। দারাজের কাছে ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নথিপত্র দেখতে চাইলে এখনও পর্যন্ত তারা কোনও কিছু দেখাতে পারেনি।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, দারাজের অর্থপাচারের বিষয়টির অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। আমরা দারাজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই দফা কথা বলেছি। তাদের কাছে কিছু নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানের পর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিআইডি সূত্র জানায়, ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নামে দারাজ বিদেশি বিভিন্ন ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড হিসেবে ফিক্সড কার্ড ও রিচার্জেবল কার্ড বিক্রি করে আসছিল। একইসঙ্গে তারা বিদেশি বিভিন্ন ইন্টারনেট-ভিত্তিক চ্যানেলের সাবস্ক্রিপশন ফি পরিশোধের কার্ড, অ্যামাজনের গিফট কার্ড, গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপস স্টোরের গিফট কার্ড বিক্রি করে আসছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন অনুযায়ী, বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড আমদানি নিষিদ্ধ। অথচ দারাজ তাদের ওয়েব সাইটে রীতিমতো প্রমোশনাল বিজ্ঞাপন দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এসব ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড হলো এমন একটি ডিজিটাল পণ্য, যাতে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার নাম্বার এবং একটি পাসওয়ার্ড থাকে। এটি ফিক্সড হওয়ার পাশাপাশি রিচার্জও করা যায়। এগুলো কেনাবেচার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এসব কার্ডের গ্রাহকরা সাধারণত বিভিন্ন সফটওয়্যারের অ্যাক্টিভেশন ফি, বিভিন্ন গেমসের ডেভেলপমেন্ট টুলস  ইত্যাদি ক্রয় করে থাকে। একইসঙ্গে দুনিয়াজুড়ে ভার্চুয়াল কার্ডের মাধ্যমে অর্থ পাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, মাদক ও অস্ত্র বেচাকেনা, অবৈধ অর্থের লেনদেন, বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের অর্থ পরিশোধ করা হয়।

সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে দারাজ দাবি করেছে, তারা পণ্য বিক্রির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। অনুমোদনহীন যেসব ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করেছে তা অন্য প্রতিষ্ঠানের। তারা নিজেরা সরাসরি বিদেশ থেকে এসব আমদানি করেনি। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দারাজ ডিজিটাল পণ্য বিক্রির বিপরীতে সকল অর্থ নিজেদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে নিয়েছে। তাদের দৈনন্দিন বিক্রিত পণ্যের বড় একটি অংশ হলো ডিজিটাল পণ্য। সিআইডি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর কর্মকর্তারা দারাজের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশে বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ। এটা আইনবর্হিভূত একটি কাজ। দারাজ এরকম ভার্চুয়াল কার্ড বিক্রি করছেএমন অভিযোগে আমাদের বিএফআইইউ ইউনিট কাজ করছে।

তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন যদি কেউ করতে চায়, তবে ব্যাংকের রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন অনুযায়ী তা করা যাবে। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ট্রানজেকশন করলে তা ব্যাংকের হিসাবে থাকবে। কিন্তু বিদেশি অবৈধ ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার করলে তাতে মানিলন্ডারিং হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিআইডি ও বিএফআইইউ-এর অনুসন্ধান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দারাজ তাদের ই-কমার্স সাইট থেকে ডিজিটাল পণ্যের সকল বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিয়েছে। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের বিক্রির পরিমাণও অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। ডিজিটাল পণ্য বিক্রি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানাতে দারাজের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে হাজার কোটি টাকা পাচারের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়। দারাজ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য দারাজের মোট বিক্রির এক শতাংশ ডিজিটাল পণ্য এবং এখনও পর্যন্ত কোনও অর্থ বিদেশে পাঠানো হয়নি। আইনমান্যকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা সিআইডির অনুসন্ধানে সহযোগিতা করছে বলে দাবি দারাজের।

দারাজের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশোর নামে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে তারা কোনও বিক্রেতা, প্রস্তুতকারক, সরবরাহকারী বা পেমেন্ট গেটওয়ে সেবা প্রদানকারী বা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান নয়। দারাজ শুধুমাত্র বিক্রেতা এবং ক্রেতার কেনাকাটা সম্পাদনের ক্ষেত্রে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। যেখানে বিক্রেতারা একটি ডিজিটাল শপ খুলে তাদের পণ্যের বিবরণ, ছবি ও দাম উল্লেখ করে তালিকাভুক্ত করে। আর গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো উল্লিখিত একটি পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে যেকোনও সময় যেকোনও স্থান থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারে। বিক্রেতাদের সঙ্গে দারাজ একটি ব্যবসা পরিচালনার  চুক্তি সম্পাদন করে। যেখানে  বিক্রেতারা এই অঙ্গীকার করে যে, তারা দেশের সকল আইন মেনে তাদের পণ্য দারাজের প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করবে। এছাড়াও যেসব পণ্যেও ক্ষেত্রে অনুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন, সেসব পণ্যের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

তবে সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, দারাজ কোনোভাবেই নিজেদের দায় এড়াতে পারে না। নিষিদ্ধ কোনও পণ্য নিজেদের প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করাটাই আইনগতভাবে অপরাধ। এছাড়া দারাজ ডিজিটাল পণ্য বিক্রির বিপরীতে পুরো অর্থই তারা তাদের নিজেদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে গ্রহণ করেছে। তাদের সেই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোজতাহিদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে খোলা। প্রথম দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদে দারাজের কাছে ডিজিটাল পণ্য সরবরাহকারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা কোনও তালিকা দিতে পারেনি।

সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, দারাজের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ তারা পেয়েছেন। এখন তারা কী পদ্ধতিতে মানি লন্ডারিং হয়েছে, তার অনুসন্ধান করছেন।

ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নামে অর্থপাচার হচ্ছে যেভাবে

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল পণ্য, সার্ভিস এবং আমদানির বাজার রয়েছে। কিন্তু এই বাজারের প্রায় পুরো অর্থই পাচার হয়ে যাচ্ছে। যথাযথ নিয়মের মাধ্যমে ডিজিটাল পণ্য ও সার্ভিস আমদানি করা হলে সরকার প্রতি বছর অন্তত তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পেতো।

সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, ডিজিটাল পণ্য হিসেবে বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড ও গিফট কার্ড হলো একটি সিরিয়াল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড। বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন মূল্যমানের গিফট কার্ড বাজারে ছাড়ে। সেসব গিফট কার্ড ক্রয় করে অনেকেই দেশে এনে বিক্রি করে থাকে। এক্ষেত্রে ক্রয়কৃত গিফটকার্ডের বিপরীতে আন্তর্জাতিক মুদ্রায় পরিশোধ করা হয়। অবৈধভাবে বাংলাদেশে আনার পর তা দেশি মুদ্রায় বিক্রি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে হুন্ডির মাধ্যমে এসব অর্থ পরিশোধও করা হয়। আর ডিজিটাল পণ্য হওয়ায় ই-মেইলের মাধ্যমে এই সিরিয়াল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড যেকোনও স্থানে স্থানান্তর করা যায়। এছাড়া বিমানবন্দর দিয়ে কাগজের কার্ড আনলেও তা আগাম তথ্য ছাড়া ধরা সম্ভব নয়।

যেভাবে ব্যবহার করা হয় এসব ভার্চুয়াল কার্ড

বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশে কোনও অনুমোদিত ব্যবস্থা না থাকলেও হরদম ব্যবহার হচ্ছে ওয়েবসাইট-কেন্দ্রিক লেনদেনে। এসব কার্ডের মাধ্যমে ইন্টারনেট-কেন্দ্রিক বিভিন্ন সার্ভিস গ্রহণের বিপরীতে বিল দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে পণ্য কেনার বিপরীতেও এসব কার্ড ব্যবহার করা হয়। দারাজকাণ্ড অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, কেউ যদি তৃতীয় কোনও দেশে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে এই ভার্চুয়াল কার্ডের মাধ্যমে সম্ভব।

উদাহরণ হিসেবে ওই কর্মকর্তা জানান, কোনও এক ব্যক্তি যদি ১০ লাখ ডলার সমমূল্যের ভার্চুয়াল কার্ড ক্রয় করে এবং এর সিরিয়াল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড তৃতীয় দেশে অবস্থানরত কোনও ব্যক্তিকে তা জানিয়ে দেয়, তবে সহজেই তৃতীয় দেশে থাকা ব্যক্তি সমপরিমাণ অর্থ উত্তোলন করে নিতে পারবেন। দিনকে দিন অর্থপাচারের জন্য এই পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েই চলছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।


আরও খবর



২০ বছর আগেই শনাক্ত করা যাবে ক্যান্সারের লক্ষণ: গবেষণা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

উপসর্গ নিয়ে জেঁকে বসার ১০ থেকে ২০ বছর আগেই ক্যানসারের লক্ষণ শনাক্ত করা যাবে।  যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এমন সুখবর দিয়েছেন।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট গবেষকদের দাবি, তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে কোষের প্রাথমিক পর্যায়ের অতি ক্ষুদ্র পরিবর্তন শনাক্ত করা যাবে। কোনো কোষ টিউমার হয়ে আত্মপ্রকাশ করার ১০ থেকে ২০ বছর আগেই চিহ্নিত করা যাবে। ফলে কোষটি যাতে টিউমারে রূপান্তরিত না হয় বা ক্যানসার না ছড়ায়, সেজন্য চিকিৎসার অনেক সময় পাবেন ডাক্তাররা।

ক্যামব্রিজের আর্লি ক্যানসার ইনস্টিটিউট এ গবেষণা করেছে। নতুন এ ইনস্টিটিউটটি এখন পর্যন্ত মাত্র ১১ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা পেয়েছে। তাও পেয়েছে সম্প্রতি। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি এ অর্থ দান করেছেন।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক রেবেকা ফিটজেরাল্ড বলেন, বছরের পর বছর ধরে ক্যানসারের জীবাণু দেহে বাসা বেঁধে একপর্যায়ে পৌঁছে আত্মপ্রকাশ করে। যখন টিউমার আকারে প্রকাশ পায় ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। চিকিৎসা অনেক জটিল হয়ে পড়ে। তাই ক্যানসার শনাক্ত করতে আমাদের পরীক্ষা-পদ্ধতিটাই আমূল বদলে ফেলতে হবে। এমন পরীক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে হবে যা ক্যানসার জীবাণু সুপ্ত পর্যায়ে থাকতেই শনাক্ত করতে পারবে।

ফিটজেরাল্ড ও তার দল নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা চালানোর জন্য সাইটোস্পঞ্জ’ উদ্ভাবন করেছেন। পরীক্ষার অংশ হিসেবে স্পঞ্জটি বড়ির মতো গিলে ফেলতে হয়। পেটে একটি স্পঞ্জের মতো প্রসারিত হয়। তার এটি এটি খাদ্যনালি থেকে পথিমধ্যে থাকা কোষগুলো সংগ্রহ করে। এমন সব কোষকে সংগ্রহ করে যেগুলোতে টিএফএফ৩ নামক প্রোটিন থাকে। টিএফএফ৩ এমন একটি প্রোটিন যা কেবল ক্যানসারের আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব অবস্থায় রয়েছে এমন কোষে পাওয়া যায়।

আর্লি ক্যানসার ইনস্টিটিউট ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য যেসব পরীক্ষা পদ্ধতি শুরু করেছে সেগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো রক্ত পরীক্ষা।

ইনস্টিটিউটের গবেষকদের নেতা জেমি ব্লান্ডেল এ বিষয়ে বলেন, এ পদ্ধতি পরীক্ষা করে দেখতে তারা গর্ভাশয় ক্যানসার পরীক্ষার জন্য জমা দেওয়া প্রায় দুই লাখ রক্ত নমুনা ব্যবহার করতে পেরেছেন। এখানে ১০ থেকে ২০ বছর আগে জমা দেওয়া হয়েছে এমন নমুনাও রয়েছে। এসব নমুনা পরীক্ষা করে যাদের পরবর্তীতে ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে এবং যাদের হয়নি তাদের আলাদা করা হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, যাদের পরবর্তীতে লিউকেমিয়া হয়েছে তাদের রক্তের জেনেটিক পরিবর্তন সুস্পষ্ট।

হারবীর দেব নামের গবেষক দলের আরেক নেতা পুরুষদের প্রোস্টেট বা মূত্রথলির ক্যানসার পরীক্ষার জন্য জমা দেওয়া নমুনা পরীক্ষা করে বিশেষ সাফল্য পেয়েছেন। এ পরীক্ষার নাম বায়োমার্কার।


আরও খবর



মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের জেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে কক্সবাজারে বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট থেকে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শরীফুল ইসলাম বলেন, আজ ভোরে বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর উপলক্ষে কক্সবাজারে বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট কাছে বিজিবির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। পরে কোস্টগার্ডদের একটি জাহাজ মিয়ানমারের জাহাজ চিন ডুইনের উদ্দেশে কক্সবাজারে বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট ত্যাগ করে। ফেরত পাঠানোদের মধ্যে রয়েছে বিজিপি সদস্য, চারজন সেনা সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্য রয়েছেন।

এর আগে মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বিজিপি ও অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমার দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাহাজে করে আগত বিজিপি সদস্যদের কাছে আশ্রয় প্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হয়।


আরও খবর



ডিজির অনুপস্থিতিতে এডিজি সাত দিনে হাতিয়ে নিলেন সাড়ে ৭ কোটি টাকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অসুস্থতার কারণে গত বছরের ২২ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)। সেই ৯ দিন অধিদপ্তরের শীর্ষপদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পালন করেন সাত দিন। আর এটুকু সময়েই আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে গেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বকালে এক দিনেই ছাড় করেন মাল্টিপল পাসপোর্টের ৫০০ ফাইল। নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা প্রতিটি ফাইল অনুমোদনের জন্য নিয়েছেন দেড় লাখ টাকা করে। সব মিলিয়ে এই কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) সরাসরি কর্মকর্তা সেলিনা বানু পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা এডিজির দায়িত্বে রয়েছেন। প্রশাসন বিভাগের এডিজির পদটি শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই বিভাগের এডিজির দায়িত্বও পালন করছেন। পুরো অধিদপ্তরে তার ওপরে শুধু প্রেষণে আসা মহাপরিচালক রয়েছেন। অধিদপ্তরে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হওয়ায় তার কথাতেই চলে সবকিছু। অনিয়ম-দুর্নীতিতে এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের নির্দেশনাও অমান্য করে নিজের মতো ডিআইপির কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পেয়েই দীর্ঘদিন আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের ফাইলগুলো ছাড় করাতে তোড়জোড় শুরু করেন। অধিদপ্তরে তার সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফাইলগুলো অনুমোদন দিয়ে পাসপোর্ট প্রিন্ট করতে পাঠানো হয়। প্রতি পাসপোর্ট থেকে দেড় লাখ টাকা করে নিয়ে তা সিন্ডিকেটে ভাগবাটোয়ারা হয়। কথিত আছে, ওই সময়ে পাসপোর্ট ভবনের তলায় তলায় কোরবানি ঈদ’ চলেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত হলেও বিষয়টি রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন।

এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্টকে মাল্টিপল পাসপোর্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়। অনেকেই বিদ্যমান পাসপোর্টের তথ্য গোপন রেখে নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করেন। তবে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয় মেশিনে মেলানোর সময় তা আটকে যায়। আবার অনেকে প্রকাশ্যেই তথ্য পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন। তখন কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের অন্তত ১২ হাজার আবেদন তদন্তের জন্য জমা পড়ে আছে। এসব আবেদন যাচাই করে পুলিশের বিশেষ শাখার তদন্ত প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে আবেদনকারীর বিপরীতে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে সে ধরনের নির্দেশনাও রয়েছে; কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এডিজি সেলিনা বানু অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিপত্র জারি করে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের আবেদনের বিষয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এরপর নিজের ক্ষমতাবলে টাকার বিনিময়ে পছন্দমতো ফাইল ছাড় করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের হাজার হাজার ফাইলের মধ্যে ৫০০ ফাইল অনুমোদন দেওয়া নিয়ে খোদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেলিনা বানু প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। অধিদপ্তরের সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই তার রোষানলে পড়তে হয়। পরে টার্গেট করে কর্মকর্তাদের বদলি বা ন্যূনতম কারণেও বিভাগীয় মামলা ও বদলির মতো হয়রানিতে পড়তে হয়।

অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। বদলিজনিত চাকরি হলেও তিনি ঢাকার বাইরে খুব বেশি দায়িত্ব পালন করেননি। এ সুযোগে তিনি একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি পাসপোর্ট অফিসে তার নিজস্ব বলয়ের কর্মকর্তা বা কর্মচারী রয়েছেন। বিদেশি মিশনগুলোর কয়েকটিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরেও কর্মী রয়েছে। সেলিনা বানু অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় সবাই তাকে অতি সমীহ’ করে চলেন। বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিস থেকে তার অনুগতরা মাল্টিপল আবেদনগুলো বাছাই করে দিয়েছেন। সেগুলোই মূলত তিনি প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে ছাড় করিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ওই সূত্রটি জানায়, প্রতিটি মাল্টিপল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সেলিনা বানু ও অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট নিয়েছে দেড় লাখ টাকা করে। তবে দালাল চক্র ও অন্যান্য জেলা অফিসে তার অনুগত কর্মীরা আবেদনকারীদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা করে নেন। বছরজুড়েই সেলিনা বানু টাকার বিনিময়ে এ ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকেন। তবে ডিজির অনুপস্থিতিতে একসঙ্গে ৫০০ আবেদন অনুমোদন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাল্টিপল আবেদনের সবকিছু ঠিক থাকলেও একজন আবেদনকারী টাকা না দেওয়ায় পাসপোর্ট পাননি। এরপর ওই আবেদনকারী দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

সূত্র জানায়, শুধু মাল্টিপল পাসপোর্টই নয়, সেলিনা বানু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নো ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর) সিল দেওয়ার জন্যও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ কাজের জন্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাদিরা আক্তারকে ভিসা শাখার দায়িত্বে রেখেছেন। এই কর্মকর্তা সেলিনা বানুর অনুগত হওয়ায় তাকে পার্সোনালাইজেশন সেন্টার থেকে ভিসা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংযুক্ত করে রেখেছেন। প্রতিটি পাসপোর্টের এনভিআর দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা করে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো বিদেশি পাসপোর্টধারী দেশে এসে নো ভিসা রিকোয়ার্ডের আবেদন করলে তার আর বাংলাদেশে আসতে কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না।

ওই সূত্রটি জানায়, এই সিন্ডিকেট অবৈধভাবে দেশে বসবাসকারী বিদেশিদেরও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে ভিসা এক্সটেনশন বা মেয়াদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে আফ্রিকার নাগরিকরা টাকার বিনিময়ে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেশে মাদক কারবারসহ না অনিয়ম করছে।

মাল্টিপল পাসপোর্ট ইস্যু করে সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে এডিজি সেলিনা বানুর দপ্তরে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়; কিন্তু তিনি সময় দেননি। পরে তাকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে অভিযোগের বিষয়ে টেলিফোনে তার বক্তব্য চাওয়া হয়। তবে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে অভিযোগ থাকলেও আমি তো বক্তব্য দিতে পারব না, আমি তো পত্রিকায় বক্তব্য দিতে পারি না।’

বেনামি চিঠিতে গুরুতর তথ্য সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে:

এদিকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ তুলেছেন, সেলিনা বানুর অপকর্ম নিয়ে কথা বললেই তাদের ওপর খড়্গ নেমে আসে। এ জন্য মুখ না খুলে আতঙ্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দেশের প্রায় সব পাসপোর্ট অফিসে বেনামি চিঠি দিয়ে এই কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য থেকে নিস্তার চেয়েছেন। এসব চিঠিতে সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ৩০ বছর ধরে চাকরি করলেও তিনি ৬৪ জেলার কোথাও বদলি হননি। একবার অনিয়মের কারণে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও বেশি দিন থাকতে হয়নি। তার স্বামী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এ কে এম মাসুদুল হক রিজভী জামায়াতের পদধারী। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কামারুজ্জামান তাদের স্বজন। শুধু তাই নয়, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন এই দম্পতি।

চিঠিতে বলা হয়, এডিজি সেলিনা বানুর বাড়ি জামালপুরে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরে রেলে নাশকতার ঘটনায় তার স্বজনরাও জড়িত।

ওই চিঠির সূত্র ধরে সেলিনা বানুর গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পরিবারের কেউ সরকার সমর্থক নয়। তার স্বামী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরিচিত কয়েক শিক্ষক এবং সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক মাসুদুর রহমান কখনো স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলয়ে ছিলেন না। তবে প্রকাশ্যে তাকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা যায় না।

সেলিনা বানু আতঙ্কে পুরো পাসপোর্ট অধিদপ্তর:

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই বছরে এডিজি সেলিনা বানু আইফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে কর্মকর্তাদের কয়েকটি প্রাইজ পোস্টিং দেন। তার আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে না পারলে দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোতে বদলি হতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দেওয়া হয় কম গুরুত্বপূর্ণ পদ। কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তার ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়েছে ময়মনসিংহসহ ওই এলাকার বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন সময়েই কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিতে হয়। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার অনুগত করতে সামান্য ভুলেও বিভাগীয় মামলা, নানা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করার ভয় দেখানোসহ নানাভাবে হুমকি দেন। উড়ো চিঠিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অনিয়ম থেকে রক্ষা পেতে আবেদন জানিয়েছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সেলিনা বানুর নানা অনিয়ম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে। তবে কেউ গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। সবাই নাম প্রকাশ না করে তার অপকর্ম তুলে ধরেন।

সরকার সমর্থক না হয়েও সেলিনা বানু এত প্রভাবশালী কীভাবে? সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা সব সময়েই কৌশলে চলেন। যখন যে মহাপরিচালক দায়িত্বে আসেন, তিনি কৌশলে তার লোক হয়ে যান। নিজেকে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে প্রচার চালায় তার অধিনস্তরা। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগেও কিছু কর্মকর্তাকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তিনি পুরো অধিদপ্তরই নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা অনিয়ম করে চলেছেন।


আরও খবর



ইসরায়েলজুড়ে ইরানের নজিরবিহীন হামলা

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করেছে ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে সরাসরি ইসরায়েলের ওপর এই হামলা শুরু করে তেহরান।

ইরানের নজিরবিহীন এই হামলায় ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। জেরুজালেম ও তেল আবিবসহ পুরো ইসরায়েলজুড়ে বাজছে বিমান হামলার সাইরেন। এমন অবস্থায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের বোমা হামলার শেল্টারের কাছাকাছি থাকার নির্দেশ দিয়েছে। রোববার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান নজিরবিহীন হামলা চালানো শুরু করেছে এবং তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলজুড়ে শহরগুলোতে বিমান হামলার সাইরেন এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

এদিকে ইরান থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনগুলোকে গুলি করে ধ্বংস করার কাজে ইসরায়েলি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে জর্ডানের বাহিনীও কাজ করছে।

তেহরান বলেছে, তারা সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালিয়েছে। দেশটি আরও বলেছে, বিষয়টি এখন সমাপ্ত বলে মনে করা যেতে পারে

এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের বোমা শেল্টারের কাছাকাছি থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সতর্কতা জারি করে বলেছে, অধিকৃত গোলান মালভূমি, নেভাটিম, ডিমোনা এবং ইলাতের বাসিন্দাদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিরক্ষামূলক স্থানের কাছাকাছি অবস্থান করতে হবে।

নেভাটিম এমন একটি স্থান যেখানে ইসরায়েলি বিমানঘাঁটির অবস্থান রয়েছে। দিমোনার উপকণ্ঠে ইসরায়েলের একটি পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে। ইলাত হলো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় লোহিত সাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী। গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ইয়েমেনের হুথিদের বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছে এই শহরটি।

অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকের অনুরোধ করেছেন। আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ড্রোন হামলার বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠকের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখেছেন।

চিঠিতে এরদান বলেছেন, ইরানের হামলা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি এবং আমি আশা করি কাউন্সিল ইরানের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সব উপায় ব্যবহার করবে।

এমন অবস্থায় রোববার বিকেলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতি মাল্টা বলেছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) রোববার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় একটি জরুরি বৈঠকে বসবে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ড্রোন হামলার বিষয়ে জরুরি বৈঠকের জন্য জাতিসংঘে ইসরায়েলি দূতের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের পরপরই বৈঠকটি ডাকা হয়।

উল্লেখ্য, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ককে ইরানি কনস্যুলেটে চালানো হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান। রোববার রাতে দখলদার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একের পর এক ড্রোন ছুড়তে থাকে ইরানের চৌকস বাহিনী ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) সেনারা। এসব ড্রোন একে একে ইসরায়েলের দিকে ছুটে যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী শতাধিক ড্রোন শনাক্ত করেছে। যেগুলোর ওপর নজর রাখা হচ্ছে। ড্রোনের পর ইরান ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে বলেও জানা গেছে।


আরও খবর



ভোক্তাপর্যায়ে কমলো এলপি গ্যাসের দাম

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ভোক্তাপর্যায়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ দফায় ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ১ হাজার ৪৮২ টাকা থেকে ৪০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

বুধবার (৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এ দর ঘোষণা করে সংস্থাটি, যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে মার্চ মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৭৪ টাকা থেকে ৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।


আরও খবর