বন্ধুত্বপূর্ণ সফরে বাংলাদেশে এসেছে রাশিয়ার
প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের তিনটি জাহাজ। সেগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে বলে রোববার
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ৫০ বছর পর রাশিয়ার কোনো যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশের
বন্দরে ভিড়ল।
বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ভেড়া রুশ
নৌবহরের ওই জাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে দুটি সাবমেরিন বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ। সেগুলোর নাম
‘অ্যাডমিরাল ত্রিবুতস’ ও ‘অ্যাডমিরাল প্যানতেলেইয়েভ’। অপর জাহাজটি
জ্বালানিবাহী ট্যাংকার। সেটির নাম ‘পেচেনগা’।
স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম বন্দর মাইনমুক্ত
করতে সেখানে বিশেষ অভিযান চালায় রাশিয়ার কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ। এ বিষয়ে বাংলাদেশে রাশিয়ার
রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দার মান্টিটঙ্কি তাসকে বলেন, ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি
দেশকে রক্ষা করতে এসেছিল রুশ যুদ্ধজাহাজগুলো। স্বাধীনতাযুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দরের
জলসীমায় অনেক মাইন ছিল। এতে অনেক নৌযান ডুবে গিয়েছিল।
রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, মাইন সমস্যা সমাধানে
অনেক দেশের কাছে সে সময় সহায়তা চেয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। কয়েকটি দেশ বিপুল অর্থের বিনিময়ে
সহায়তা করতে রাজি হয়েছিল। তবে বাংলাদেশের তখন অর্থের ঘাটতি ছিল। তখন মানবিকতা দেখিয়ে
শুধু সোভিয়েত ইউনিয়ন সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল।
তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম
বন্দর মাইনমুক্ত করার ওই অভিযান চলেছিল ১৯৭২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত।
সোভিয়েত নৌবাহিনীর ৮০০ জনের বেশি সদস্য ২৬ মাস ধরে মাইন সরানোর কাজ করেছিলেন। এ কাজ
করতে গিয়ে তাঁদের একজনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে সোভিয়েত নৌসদস্যরা শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছিলেন।
তবে এবার রুশ জাহাজগুলো পুরোপুরি বন্ধুত্বপূর্ণ
এক সফরে বাংলাদেশে এসেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামে রাশিয়ার কনসাল আশিক ইমরান। তিনি
বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক যে খুবই উচ্চপর্যায়ে রয়েছে, তার প্রমাণস্বরূপ
রুশ যুদ্ধজাহাজগুলোর বাংলাদেশ সফর।