অপরাজিতা ফুলের ''চা'' নামটা শুনেই ভ্রু কুচকে গেল তাইনা? এটা আবার পান করে? আসলে এই চা সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই বললেই চলে। এর রয়েছে অনেকগুলো ঔষধি গুন। তাইতো এই চা সম্বন্ধে সম্যক ধারণা দিতেই আমার এই লেখা।
অপরাজিতা ফুলের চা সর্বাধিক পরিচিত ''নীল চা'' বা ''ব্লু টি'' নামে । এটি ক্যাফেইন মুক্ত হারবাল চা। এটি উদ্ভিদ থেকে তৈরী করা হয় বিধায় এটিকে হারবাল চা বলা হয়। এই পানীয়টি তৈরী করা হয় ইনফিউশন বা ডিকোটেশন পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে অপরাজিতা ফুলের পাপড়ি বা সম্পুর্ণ গাছ কে পানিতে ভিজিয়ে নির্জাস বের করে নেয়া হয়।
এই চায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো অম্লত্ব বা ক্ষারত্বের (পিএইচ) উপর ভিত্তি করে রং বদলায় যেমন আপনি যদি এতে লেবুর রস যোগ করেন তাহলে এটি বেগুনী রং ধারন করবে। এই চা সাধারনত ঠান্ডা অথবা গরম অবস্থায় পরিবেশন করা হয়।
এই চা তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিক্যালস তন্মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো- পলিফেনল, ফ্লাভোনোয়িডস, স্যাপোনিন, ট্যানিন, অ্যান্থোসায়ানিন, অ্যালকালোয়িডস, টারনাটিনস, ইনোসিটল, পেন্টান্যাল ইত্যাদি।
যেহেতু এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস রয়েছে সুতরাং এর ঔষধি গুনাগুনও অনেক বেশি। আসুন এবার জেনে নেয়া যাক এর ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে-
ক্যান্সার প্রতিরোধে: এতে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন যা আমাদের দেহে ফ্রি রেডিক্যাল (মুক্ত মূলক) তৈরীতে বাধা প্রদান করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: গবেষণায় দেখা গেছে এটি রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম অর্থাৎ এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লিভার সুরক্ষায়: গবেষণা বলছে, নীল চা এর পলিফেনল ও ফ্লাভোনোয়েড যৌগ লিভার এনজাইমের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং লিভার এর সুরক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে।
অ্যাজমা প্রতিরোধে: মালয়েশিয়ার একদল গবেষকের মতে, এতে উপস্থিত স্যাপোনিন ও ফ্লাভোনোয়িড যৌগ অ্যাজমা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
স্মৃতিশক্তির্ধক হিসেবে: এটি স্মৃতিশক্তিবর্ধক হিসেবে অ্যালঝেইমার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
হৃদরোগের ঝুকি কমাতে: এটি রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডস, কোলেস্টেরল ও এলডিএল এর মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে অপরাজিতা ফুলের চা কতটা উপকারী আমাদের শরীরের জন্য। আমাদের উচিত কোমল পানীয় এর পরিবর্তে নীল চা পান করা।