আজঃ বুধবার ০১ মে ২০২৪
শিরোনাম

অপরাধ বাড়ছে ঢাকায়!

প্রকাশিত:শনিবার ২৮ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৮ অক্টোবর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফিরোজ মাহমুদ

Image

রাজধানীতে অপরাধ বেড়েই চলছে। বেশি বেড়েছে খুন, চুরি, ডাকাতি, দস্যুতা ও মাদকসংক্রান্ত অপরাধ। তাছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার সংখ্যাও উদ্বেগজনক। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠে যেমন উত্তাপ ছড়াচ্ছে তেমনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আশঙ্কা বাড়ছে। 

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা আরো ঘনীভূত হচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কয়েকজন জামিনে বের হওয়ার পর। তাদের কয়েকজন সহযোগীও জামিন পেয়েছেন। জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুনের ওপর হামলার ঘটনায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে অপরাধজগৎ নিয়ে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারাবন্দি আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগীরাই এ হামলা চালায়।

আরও পড়ুন>> শাহজালালে দেড় কোটি টাকারস্বর্ণসহ আটক ১

গত মাসের ১৮ সেপ্টেম্বর মামুনের ওপর হামলার একদিন আগে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী নাঈম আহমেদ টিটন জামিনে মুক্তি পান। দুই দশক ধরে তিনি কারাবন্দি। টিটন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের শ্যালক। টিটনের মুক্তির চারদিন পর ২২ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী খোরশেদ আলম রাসু। কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পর তারা নতুন করে আরো কোনো সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

১৪ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুর মাজার রোডে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাবিল খান গ্রুপ ও ইসলাম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ছুরিকাঘাতে ৩০ বছর বয়সী শাহ আলম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুন হন।

দুদিন পর ১৬ অক্টোবর রাত পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ৪৩ বছর বয়সী রমজান ওরফে পেটকাটা রমজান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পূর্বশত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা পুলিশের। কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা আনোয়ার বলেন, রমজানের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।

১৯ সেপ্টেম্বর দিনদুপুরে রাজধানীর বংশালে আলুবাজার এলাকায় চাঁদা না দেয়ায় নারীসহ তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। আহতরা হলেন-রানু বেগম (৭০), তার ছেলে মো. মাসুদ রানা (৪৫) ও আব্দুল মাসুম (৪৮)।

আহতদের আত্মীয় রিতা বেগম বলেন, আলুবাজার বড় মসজিদ এলাকায় আমাদের ছোট একটি সেলুনের দোকান। এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মাদক কারবারিরা কয়েকবার আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। কিন্তু আমার ভাই চাঁদা না দেয়ায় শুভ, প্রিন্স, সাফরানসহ ১২ থেকে ১৫ জনের দল দেশি অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা মা রানু বেগম, ভাই মাসুদ রানা ও চাচা আব্দুল মাসুমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

আরও পড়ুন>> নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনেরযোগ্যতা নেই তবুও পবিপ্রবি'র অধ্যাপক!

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় রাত ১০টার দিকে প্রাইভেটকার আরোহী এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। সেই গুলি লাগে মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের (৫২) মাথায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ওই রাতেই তাকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। টানা সাতদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৫ সেপ্টেম্বর ভুবন চন্দ্র শীল মারা যান।

ধারাবাহিকভাবে প্রায় দিনই রাজধানীতে চুরি, ছিনতাই ও খুনের মতো ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় একদিকে বেড়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাব এবং অন্যদিকে শঙ্কা রয়েছে সাধারণ মানুষের।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মামলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ৮ মাসে শুধু ঢাকায় খুনের ঘটনা ঘটে ১১৩টি। চুরির ঘটনা ঘটে এক হাজার। ধর্ষণের ঘটনা ৩২০টি। বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকার ৫০ থানায় মামলা হয় ১৭ হাজার ৪৩২টি। এসব মামলায় গ্রেফতার ৩৯ হাজার ৬৬৮ জন।

ডিএমপি বলছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ রাজধানীর সবচেয়ে বেশি অপরাধপ্রবণ এলাকা। এরপরই আছে ওয়ারী, মিরপুর, উত্তরা, লালবাগ, গুলশান, মতিঝিল ও রমনা বিভাগ। ডিএমপির করা গত সাড়ে তিন বছরের (২০২০-২০২৩ আগস্ট) তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিটি বিভাগেই আগের বছরের তুলনায় অপরাধ বেড়েছে।

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর ৫০ থানা আটটি অপরাধ বিভাগে ভাগ করে কাজ করছে ডিএমপি। পুলিশের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, তেজগাঁও বিভাগে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ ও মাদকের কারবার সবচেয়ে বেশি। ওয়ারী বিভাগে খুন ও ধর্ষণের ঘটনা বেশি। মিরপুরে বেশি চাঁদাবাজি। উত্তরা বিভাগে চোরাচালান, লালবাগে বিস্ফোরকদ্রব্য, গুলশান বিভাগে দাঙ্গা ও রাজনৈতিক খুনের মতো ঘটনা বেশি।

র‌্যাবের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয় ৬৯৮টি, ২০২১ সালে উদ্ধার হয় ৮৪৬টি, ২০২২ সালে উদ্ধার হয় এক হাজার ৩৯৪টি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয় ৪৯৭টি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত র‌্যাব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে ১৯ হাজার ৬৩৪টি। আর অবৈধ অস্ত্র সংক্রান্ত ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় ১৪ হাজার ৩২৩ জন আসামিকে।

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ছয়টি থানা হলো- ওয়ারী, ডেমরা, শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, গেন্ডারিয়া ও কদমতলী। গত ৮ মাসের ওয়ারী বিভাগে সর্বাধিক ২২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের ঘটনা এই বিভাগে সবচেয়ে বেশি। এ সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৮ জন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে পেশাদার অপরাধীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে তারা। প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা গেলে নির্বাচনের আগে বিশেষ করে ঢাকায় অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।

ঢাকা মহানগরী ছিনতাইমুক্ত করতে নগরবাসীর নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিতকরণ এবং অপরাধভীতি দূর করতে ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ডিএমপি সদরদপ্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম বিভাগ) শচীন চাকমাকে সভাপতি করে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা হলেন ডিএমপি সদরদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম-১) একজন, ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগের আটজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, গোয়েন্দা পুলিশের আটজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার/সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) একজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয় শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা ও নিজ দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল তৈরি করে পদ-পদবি নিশ্চিত করার কারণে কখনো কখনো সাধারণ মানুষকে বলি হতে হয়। এ ধরনের রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দল থেকে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয় সেটিও স্পষ্ট নয়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের চলাচলের যে নিরাপত্তা সেই জায়গাটি শতভাগ তৈরি করা যায়নি। যতটুকু তৈরি করা গেছে সেটিও বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক বিভেদের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ বা সন্তোষের জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। রাস্তায় চলাচলের সময় একজন আইনজীবী, কলেজছাত্রী কিংবা নিজ দলের মধ্যে কোন্দলকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় যারা মারা যাচ্ছেন তারা সবাই এ দেশের নাগরিক। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হয়তো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এ ধরনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে সে জায়গায় প্রশ্ন রয়েছে। আমরা দেখেছি বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাদী হয়ে মামলা করে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের উদ্যোগ কতটা অতীতে হয়েছে তা খতিয়ে আমরা খুব একটা পাই না।

অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক আরো বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার সেন্টিমেন্ট থেকে দেখা যায়, গোলাগুলিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা মারা গেলে সে যে দলেরই হোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মন্তব্য দেখলে মনে হয় তারা একপ্রকার খুশিই হয়। সাধারণ মানুষের মনে বিদ্বেষ-অসন্তোষ রয়েছে। তারা মনে করে তাদের কারণে সাধারণ মানুষের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। কিন্তু যখন সাধারণ কেউ মারা যায় তখন সেন্টিমেন্টে দেখা যায় সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপনের ক্ষেত্রে, রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রে তাকে অনেক কিছু ভাবতে হচ্ছে। সেই ভাবনাগুলো তাকে তটস্থ করে। সামগ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে আসলে বলার কেউ নেই। যারা বলছে সেটা সাময়িক বা পরিস্থিতির কারণে কিংবা এক ধরনের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, যেসব শীর্ষ অপরাধী কারাগারে আছে সেটা আমরা মনিটরিং করছি। যারা জামিন পেয়ে বের হয়ে এসেছে সেটাও আমরা মনিটরিং করছি। নির্বাচন সামনে রেখে কোনো অরাজকতা করছে কি না, চাঁদাবাজি করছে কি না, মানুষকে হুমকি দিচ্ছে কি না- সেটা ডিএমপি ও ডিবির টিম তদন্ত করছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পর এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। জামিনে বের হয়ে কিংবা কারাগারে বসে কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবে না। ঢাকার অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বিরোধকে কেন্দ্র করে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের মুখচ্ছবি। পেশাদারত্ব, নিষ্ঠা, দক্ষতা, আন্তরিকতা, সততা ও ত্যাগের মাধ্যমে ডিএমপি আজকের এ অবস্থানে পৌঁছেছে। আগামী দিনেও যে কোনো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিএমপি প্রস্তুত। নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময় ঢাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নির্বাচন টার্গেট করে কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী ফায়দা লুটতে পারে। এ জন্য আগে থেকেই র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্রের চালান ঠেকাতে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন একযোগে কাজ করছে। এক কথায় নির্বাচনের আগে ও নির্বাচন চলাকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাবও কাজ করবে।

এ বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নির্বাচনের আগে যে বা যারাই অবৈধভাবে মাঠ গরম করার চেষ্টা করুক তাদের প্রতিহত করা হবে। ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট। সম্প্রতি আমরা বেশকিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছি।

নিউজ ট্যাগ: রাজধানী ডিএমপি

আরও খবর



ইসরায়েলে হামলায় যেসব ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবহার করল ইরান

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করেছে ইরান। মূলত চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলার জবাবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে এই পাল্টা হামলা শুরু করেছে তেহরান। হামলার পরপর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইরান।

ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম করপোরেশন জানিয়েছে, শনিবারের হামলায় ইরান ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করেছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইরানের এই সমন্বিত আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনার সামান্য ক্ষতি হয়েছে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইরান।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকেও দাবি করা হয়, ইসরায়েলে হামলায় ব্যবহারের জন্য শতাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করেছে ইরান। যে কোনো সময় এ অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানায় ইসরায়েল।


আরও খবর



পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড পৌনে ৮ কোটি টাকা

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে এবার রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

২২০ জনের একটি দল দীর্ঘ সাড়ে ১৮ ঘণ্টায় এ টাকা গণনা কাজে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় মসজিদের ৯টি লোহার দানবাক্স খুলে পাওয়া রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা মসজিদের দোতলায় এনে গণনার কাজ চলে।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। টাকাগুলো পুলিশি নিরাপত্তায় রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সূত্রে জানা গেছে, ৪ মাস ১০ দিন পর শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়। এবার দিন বেশি হওয়ায় একটি ট্রাঙ্ক দেওয়া হয়েছিল। পরে মসজিদের দোতালায় এনে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়ে। তিন মাস পরপর দানবাক্সগুলো খোলা হলেও এবার রমজানের কারণে ৪ মাস ১০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।


আরও খবর



কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক শরীফের মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

Image

কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় শরিফুল ইসলাম শরীফ (৪২) নামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত শরিফ মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের গেটপাড়া গ্রামের মৃত নাদের আলী মণ্ডলের ছেলে। শরিফ ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার মিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। এছাড়াও তিনি কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য ও মিরপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও একটি পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে কুষ্টিয়া থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন শরীফ। পথে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক সড়কের তাঁতিবন্ধ এলাকায় জেটি আইয়ের সামনে পাখি ভ্যানের সঙ্গে তার মোটরসাইকেলটির সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি ও কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. কামারুল আরেফিনসহ জেলার সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।


আরও খবর



এবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো জাপান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

তাইওয়ানের পর এবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে জাপান। তবে ওই ভূমিকম্প থেকে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। জাপানের ফুকুশিমা অঞ্চলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। তবে এ থেকে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।

এখনো পর্যন্ত ওই ভূমিকম্প থেকে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল)। রাজধানী টোকিওতেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে টেকটোনিক সক্রিয় দেশগুলোর মধ্যে একটি জাপান। সে কারণে দেশটিতে শক্তিশালী ভূমিকম্প সহ্য করতে পারে এমনটা নিশ্চিত করতে তারা ভবনের কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম মেনে চলে। ১২৫ মিলিয়ন মানুষের আবাসস্থল এই দ্বীপপুঞ্জ। প্রতি বছর সেখানে প্রায় ১৫০০ ছোট-বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। এদিকে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১ এবং এর গভীরতা ছিল ৪০ দশমিক ১ কিলোমিটার।

মাত্র একদিন আগেই প্রতিবেশী তাইওয়ানে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪। এতে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আরও এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

বুধবার তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল এবং রাজধানী তাইপেই ছাড়াও জাপানের দক্ষিণাঞ্চল, চীনের পূর্বাঞ্চল এবং ফিলিপাইনে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে। এর গভীরতা ছিল ৩৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্পের পর পরই তাইওয়ান ও এর প্রতিবেশী দেশ জাপান, ফিলিপাইনে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। তবে পরবর্তীতে ওই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।

জাপানে এর আগে ২০১১ সালে ৯ মাত্রার অতি শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা ওই ভূমিকম্পের প্রভাবে সুনামির আঘাতে ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়।


আরও খবর



ঢাকার বাতাস আজও সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকার বাতাসের মান আজও সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে ১৯৯ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শহরটির অবস্থান ১৫তম।

ভারতের দিল্লি, মিসরের কায়রো ও নেপালের কাঠমান্ডু যথাক্রমে ৩৮৫, ১৮৭ ও ১৭১ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে।

১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে বাতাসের মান সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে অস্বাস্থ্যকর বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।


আরও খবর