কক্সবাজার-৩ আসনের (সদর-রামু-ঈদগাঁও) রামু উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এসময় ঈগল মার্কার প্রচারণায় অংশ নেয়া জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল সামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্সসহ অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালার মাদ্রাসা গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জোয়ারিয়ানালার চেয়ারম্যান কামাল শামসুউদ্দিন আহমদ প্রিন্স বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাদ্রাসা গেটে আমিসহ অন্যান্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। এমন সময় কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে যান নৌকার প্রার্থী এমপি কমলের নেতৃত্বে বিপুল কর্মী। এমপি গাড়ি থেকে নেমে লাঠি হাতে এগিয়ে এসে মারধর শুরু করেন। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে এমপি অস্ত্র হাতে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করে। এ সময় জনতা তার সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেন এমপি নিজেই।
তিনি আরও বলেন, এমপির সাথে থাকা লোকজন হৈ-চৈ করে স্থানীয় লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ-বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এমপি কমল ছাড়াও ইমরান হোসেন ওরফে টোকাই ইমরান, খোকন, মোবারক হোসেন নামের তিনজন সন্ত্রাসীও গুলি বর্ষণ করেছে বলে দাবি এ জনপ্রতিনিধির। এ ঘটনায় এমপি কমলসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান সামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স।
আরও পড়ুন>> নির্বাচনী প্রচারণায় রামদা নিয়ে আসতে বললেন আ. লীগ নেতা
অপরদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন। তিনি (সাদ্দাম) চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ততক্ষণাত বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় এমপির লোকজন আবারও ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, জোয়ারিয়ানালা আমার এলাকা। শান্তি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নেতা-কর্মীদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন। চেয়ারম্যান প্রিন্স তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর অধিকার রাখেন। এখানে হামলা করাটা অন্যায় হয়েছে। ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে আমি নৌকার পক্ষে শুরু থেকে কাজ করছি। প্রিন্স আওয়ামী লীগের নেতা। এ হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু তাহের দেওয়ান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। জড়ো হওয়া লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।
তবে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলকে মুঠোফোনে না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
কিন্তু কমলের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সচিব রুস্তম আলী চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো এমপির প্রচারণা বহরে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেন। এমপি কমল ব্যস্ত থাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে পরে কথা বলবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে ২৭ ডিসেম্বর রামু বাইপাস এলাকায় ঈগলের একটি প্রচারগাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে রামু থানায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে।