আজঃ সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

নওগাঁয় দুই পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ জুলাই ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফয়সাল আহম্মেদ, নওগাঁ প্রতিনিধি

Image

নওগাঁর পত্নীতলায় দুই পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে। বুধবার ভোরে পত্নীতলা-সাপাহার সড়কের করমজাই নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার যোথগবরদান গ্রামের রহিম উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও রাজারহাট উপজেলার রতিরাম গ্রামের জরিফ উদ্দিন মো. শাহিন।

পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব জানান, পত্নীতলা থেকে একটি মাছ পরিবহনকারী পিকআপ সাপাহারের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় সাপাহার থেকে আসা একটি আম পরিবহনকারী পিকআপের সাথে মাছ পরিবহনকারী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে আম পরিবহনকারী পিকআপের ড্রাইভার ও সহযোগী গুরুতর আহত হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহত দুজই মধ্যে একজন আম পরিবহনকারী পিকআপের ড্রাইভার ওপরজন সহযোগী।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।


আরও খবর



রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় ৪ মামলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে রুমা থানায় তিনটি এবং থানচি থানায় একটি মামলা হয়।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে মামলাগুলো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ঘটে যাওয়া সোনালী ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় রুমা থানায় ৫০-৬০ জন নাম না জানা ব্যক্তিকে আসামি করে তিনটি মামলা হয়েছে। এছাড়া, গত বুধবার দুপুরে থানচি কৃষি ব্যাংকে টাকা লুটের ঘটনায় থানচি থানায় ৩০-৪০ জনকে নাম না জানা আসামি করে একটি মামলা হয়েছে।

থানচি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, আজ শুক্রবার রুমা কৃষি ব্যাংক ম্যানেজার হ্লা শৈ থোয়াই মারমা বাদী হয়ে ৩০-৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে মামলা করতে থানায় আসতে বলা হয়েছে।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী জানান, ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় নাম না জানা আসামিদের বিরুদ্ধে রুমায় তিনটি ও থানচিতে একটি মামলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতি করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পর থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।


আরও খবর



টিসিবি পণ্য বিক্রির জন্য স্থায়ী দোকান করা হবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

টিসিবি পণ্য বিক্রির জটিলতা কাটাতে স্থায়ী দোকান করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির আয়োজনে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, টিসিবির পণ্যগুলো এতদিন বিভিন্ন জায়গায় টেম্পোরারিভাবে বিক্রি হতো। আমরা চেষ্টা করছি আগামী দুই এক মাসের মধ্যে টিসিবির দোকানগুলোকে একটি স্থায়ী জায়গায় নিয়ে আসার। যাতে মানুষের একটি দিন নষ্ট না হয়। তারা যাতে সেখানে যেয়ে ন্যায্যমূল্যে তাদের পণ্য নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে, সেটার একটা কার্যক্রম আমরা চলমান রেখেছি।

ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।

টিটু বলেন, টিসিবি সাধারণত একত্রে চার থেকে পাঁচটি পণ্য সরবরাহ করে। কিন্তু অনেক সময় এমন হয় যে একটি পণ্য পৌঁছাতে দেরি হলে ডিসি সাহেবরা বাকি পণ্যগুলোকেও আটকে রাখেন। সবগুলো পণ্য একত্রে দেবেন বলে। কিন্তু আমি যখন ফিক্সড দোকান করে দেব তখন যে মাল যখনই দোকানে চলে যাবে তখনই সেই মাল বিক্রি শুরু হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাফার স্টক না থাকায় আমাদের পণ্য কিনেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বিভাগীয় পর্যায়েও আমাদের বাফার স্টক নেই। এছাড়া আমাদের যেসব ডিলার রয়েছে তাদেরও পণ্য এক মাস সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমাদের পর্যাপ্ত স্টোরেজ না থাকাটাই প্রধান সমস্যা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে পণ্য সরবরাহ ও সেবা নিশ্চিত করতে টিসিবি শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে এটাকে একটা কাঠামোতে নিয়ে আসতে আমরা কাজ করতেছি। আমাদের নিজস্ব কোনো গুদাম ছিল না। যেকোনো পণ্যের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ রাখতে সেটার বাফার স্টক থাকা দরকার। বাফার স্টকের জন্য আমাদের গুদাম দরকার। চট্টগ্রামে আমরা ৪০ হাজার স্কয়ারফিটের একটি নতুন গুদাম করেছি। বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গুদাম করছি। আমরা চেষ্টা করব অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাফার স্টক তৈরি করতে পারি।

সারা বছর টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এক কোটি পরিবারকে টিসিবিব মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য দিয়েছি। সেটা ১২ মাসই দেওয়ার করব। এতদিন জরুরি ভিত্তিতে ট্রাক সেলের মাধ্যমে করেছি। টিসিবির পণ্য স্থায়ী দোকানে নিয়ে এসেছি।


আরও খবর
টানা ছয় দফা কমলো সোনার দাম

সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪




ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে চীনা নাগরিকের মৃত্যু

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় পাওয়ার প্ল্যান্টের ভবন থেকে নিচে পড়ে ঝাং জি বিন (৫৫) নামের এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি একটি কোম্পানির ইলেক্টিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক বেলা ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটির দোভাষী মো. সেলিম জানান, তারা পঞ্চবটি বিসিক এলাকায় একটি পাঁচ তলা ভবনে বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরির কাজ করেন। সেখানকার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ওই চীনা নাগরিক। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ওখানে কাজ করছেন। আজ সকালে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ফ্লোরে বিদ্যুতের তার সঞ্চালনার ফাঁকা জায়গায় একটি কাঠ পেতে তার ওপর দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন ওই চীনা নাগরিক। হঠাৎ সেই কাঠটি ভেঙে ফাঁকা জায়গা দিয়ে বেসমেন্ট পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি।

পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে এক চীনা নাগরিককে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।


আরও খবর



বিজ্ঞান জাদুঘর ট্রাস্টি বোর্ডসভা: ৫০ প্রতিষ্ঠানকে ৬৫ লাখ টাকা অনুদান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের আওতাধীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়ন ট্রাস্টি বোর্ডের এক সভা বুধবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী সভা সঞ্চালনা করেন। সভায় দেশের ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিজ্ঞান ক্লাবের জন্য ৬৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।

বোর্ডের সভাপতি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, গত ১৫ বছর যাবৎ বর্তমান সরকার মানুষের কল্যাণে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছে। ট্রাস্টি বোর্ডের অনুদানের মাধ্যমে সরকার প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিজ্ঞান চর্চায় উদ্বুদ্ধ করছে। বিজ্ঞান মনস্ক জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবায়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তথ্য প্রযুক্তির সুবাদে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এখন সারা পৃথিবী অবলোকন করছে।

এছাড়া বিজ্ঞান জাদুঘরের মিউজিয়াম বাস ও মুভি বাসের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিজ্ঞান সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ তৈরি করা কঠিন কাজ। মানষিকতার পরিবর্তন ও সততা ছাড়া কোন জাতি এগোতে পারেনা। বিজ্ঞানের ব্যবহারিক শিক্ষার অংশ হিসেবে প্রতিবারের ন্যায় এবারও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য এ অনুদান প্রদান করা হয়।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর