আজঃ সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

নওগাঁয় দাঁড়িয়ে থাকা খালি ট্রাকে আগুন

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফয়সাল আহম্মেদ, নওগাঁ প্রতিনিধি

Image

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি খালি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার হাট চকগৌরি এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে ট্রাকটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ইঞ্জিনসহ ট্রাকটির সামনের অংশ পুড়ে গেছে।

মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলপ্রধান আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাকটি হাট চকগৌরি এলাকার একটি সেতুর পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রাকে কোনো মালামাল ছিল না। দুর্বৃত্তরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাকটির সামনের অংশে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। 

আরও পড়ুন>> ২৭ মিনিটের ব্যবধানে রাজধানীতে তিনটি বাসে আগুন

তিনি আরও বলেন, আগুনে ট্রাকের ইঞ্জিনসহ সামনের দিকে বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলে জানান আশরাফুল ইসলাম।

বিষয়টি নিয়ে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, আগুনে ট্রাকের সামনের অংশ পুড়ে গেছে। আমাদের ধারণা, অবরোধ সমর্থকরা  এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের আটক করা হবে। কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। 


আরও খবর



বঙ্গবাজারে দুই সাংবাদিককে পেটাল কাউন্সিলর-বিএনপি নেতার অনুসারীরা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

রাজধানীর বঙ্গবাজারে কাপড় দেখতে গিয়ে সিন্ডিকেটের প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতিসহ দুই সাংবাদিক। তাদের দোকানে ডেকে নিয়ে কাউন্সিলর চামেলির অনুসারীরা হাতুড়ি, রড, জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। এক শিক্ষার্থীর আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে এবং এক ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর বঙ্গমার্কেটের বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের দোতলায় এমন ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। ঘটনাস্থলে তাদের নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন শাহবাগ থানার ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোকসানা ইসলাম চামেলির স্বামী আবুল হোসেন টাবু ও বিএনপির পদ প্রত্যাশী নেতা রফিকুল ইসলাম স্বপন এবং শাহবাগ থানার ২০ নং ওয়ার্ডের বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ ইউসুফ।

সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়াকে কক্ষের মেঝেতে ফেলে মাথায়, পিঠে, কোমরে, পায়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্যদিকে জাগো নিউজের স্টাফ রিপোর্টার নাহিদকে দোতলায় মারার পর ভবনের ছাদে তুলে পেটানো হয়। তিনি বাম পায়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। এছাড়া এক শিক্ষার্থীর ডান হাতের একটি আঙুলের অগ্রভাগ কেটে ফেলা হয়।

মারধরের একপর্যায়ে আল সাদীর মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায় আক্রমণকারীরা। অন্যদিকে নাহিদের মোবাইল, মানিব্যাগ, বাইকের চাবি, প্রেস আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয় তারা।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভুঁইয়া বলেন,  আমরা সিন্ডিকেটের প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর তারা হামলা করে। এমনকি আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর আরও বেশি হামলা করে। বের হয়ে আমরা পুলিশ নিয়ে আসি। পুলিশের সামনেও তারা আমাদের মারার চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশ আমাদের কোনো সাহায্য করেনি।

জাগো নিউজের স্টাফ রিপোর্টার নাহিদ বলেন, আমাদের মার্কেটের গেট ভেঙে হামলা করেছে। এসময় সেনাবাহিনীকে ফোন দিয়েও কোনো রেসপন্স পাইনি। সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছিলাম, তবুও ছাত্রলীগ বলে পিটিয়েছে আমাদের। আমার ফোন মানিব্যাগ এবং আইডি কার্ড সব নিয়ে গেছে তারা।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে রুম থেকে বের করে এনে ছাদে নিয়ে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও জিআই পাইপ দিয়ে আবার মেরেছে। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। তাদের কাছে পানি চেয়েছি কিন্তু পানি পর্যন্ত দেয়নি তারা। তারা বলছিল, আমাকে পানি খাওয়ালে আমি নাকি আবার সুস্থ হয়ে যাব। আমার সমস্ত শরীরে আঘাত করেছে তারা। 

দুর্বৃত্তদের মধ্যে একজন বলছিল, এই ছেলে জ্ঞান হারানোর অভিনয় করছে, একে আবার মারা হোক- এই বলে তৃতীয় ধাপে আবার মারপিট করেছে। তারা আমার ম্যানিব্যাগ, প্রেসের কার্ড, আইডিকার্ড নিয়ে যাওয়ার সময় বলছিল, এগুলো স্বপন ভাইয়ের কাছে জমা দেবো। স্বপন হলো বিএনপির নেতা।

মার্কেটের ব্যবসায়ী বাঁধন বলেন, এই মার্কেটে আমার দোকান আছে। আমি মালিকের (সজলের) সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখন মালিকের আরেক পক্ষ যারা আওয়ামী লীগ করত, তারা দরজা ভেঙে আমাদের ওপর হামলা করে। প্রাণ বাঁচাতে আমরা কয়েকজন বাথরুমে অবস্থান নিলে তারা দরজা ভেঙে হাতুড়ি, রড, জিআই পাইপ দিয়ে হামলা করে।

ঘটনার একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। তারা সেখানে সাংবাদিকদের রক্ষা করতে পুলিশকে আহ্বান জানান।

সারজিস আলম বলেন, আমরা সাংবাদিকসহ অন্যদের উপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এই সিন্ডিকেট যারা আজ সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী ব্যবসায়ীদের উপর হামলা করেছে তাদের আমরা ছাড় দেবো না। আজকের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ ছাত্র-জনতা তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।

নিউজ ট্যাগ: বঙ্গবাজার

আরও খবর
রাজধানীতে গরম-যানজটে দুর্বিষহ জনজীবন

রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এবার গোলাপশাহ মাজার ভাঙার হুঁশিয়ারি

রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪




বুধবার রাত থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ মঙ্গলবার। আগামীকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধী গ্রেফতারে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হবে।

আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, মাদক একটা বড় সমস্যা। এটা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা হবে।

মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেখানকার সীমান্ত সমস্যা নিরসনে কাজ চলছে।

আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আশা করি পূজা উদযাপন ভালোভাবেই সম্পন্ন হবে।

সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে যাওয়ার সময় উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অস্ত্র উদ্ধারসহ সব বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ অনগ্রাউন্ডে দেখতে পাবেন।


আরও খবর
ইনু ফের ৪ দিনের রিমান্ডে

রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪




এনবিআর চেয়ারম্যানসহ ১০ সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল

প্রকাশিত:বুধবার ১৪ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মোট ১৯ জন পূর্ণ সচিবের মধ্যে ১০ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে৷ বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে৷ এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি৷

নিয়োগ বাতিলের এ তালিকায় রয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, সড়ক, পরিবহন বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম ওয়াহিদা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য (সচিব) মো. খাইরুল ইসলাম।


আরও খবর
ইনু ফের ৪ দিনের রিমান্ডে

রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪




ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা জারি

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৫ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক হামলা শুরুর পরেই এই ঘোষণা দিলো ইসরায়েল। খবর টাইমস অব ইসরায়েল।

এদিকে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা গতমাসে তাদের কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের হত্যার বদলা নিতে ইসরায়েলের ওপর হামলা শুরু করেছে।

এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া আল এরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলকে লক্ষ্য করে লেবানন থেকে শতাধিক ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে।

আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে। তেল আবিব থেকে সকল ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু করবেন।


আরও খবর
উত্তরপ্রদেশে ভবন ধসে নিহত ৮, আহত ২৮

রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪




যুদ্ধের আড়ালে যেভাবে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করছে ইসরায়েল

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে ফিলিস্তিনের বাত্তির একটি। সেখানকার জলপাই বাগান ও আঙুরক্ষেতের জন্য পরিচিত এই গ্রাম। এখানে প্রাকৃতিক ঝর্ণার পানি ব্যবহার করা হয় সেচের কাজে। কয়েক শতাব্দী ধরে এইভাবেই জীবন বয়ে চলেছে সেখানে। প্রকৃতির কোলঘেঁষা এই গ্রামই অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক বা পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের সর্বশেষ ফ্ল্যাশপয়েন্টে পরিণত হয়েছে।

ইসরায়েল এখানে একটা নতুন ইহুদি বসতি স্থাপন বা সেটলমেন্ট-এর অনুমোদন দিয়েছে। এই নতুন বসতির জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি। শুধু তাই নয়, অনুমোদন ছাড়াই নতুন ইসরায়েলি ফাঁড়িও স্থাপন করা হয়েছে।

যাদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি এই নতুন বসতি স্থাপনের জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাদের তালিকায় রয়েছে ঘাসান ওলিয়ান। তিনি বলেন, নিজেদের স্বপ্ন গড়তে আমাদের জমি চুরি করছে ওরা।

ইউনেস্কো জানিয়েছে বাত্তিরকে ঘিরে বসতি স্থাপনকারীদের পরিকল্পনা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তবে এই গ্রাম কিন্তু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ জাতীয় সেটলমেন্টকে অবৈধ হিসেবে দেখা হয়। যদিও এই বিষয়ে ইসরায়েল সহমত পোষণ করে না।

ওরা আন্তর্জাতিক আইন, স্থানীয় আইন, এমন কী ঈশ্বরের আইনকেও তোয়াক্কা করে না, আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন ওলিয়ান।

গত সপ্তাহে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা প্রধান রোনেন বার মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে এক চিঠি লিখে তাদের সতর্ক করেছিলেন। সেই চিঠিতে রোনেন বার উল্লেখ করেছিলেন পশ্চিম তীরের ইহুদি চরমপন্থীরা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজ চালাচ্ছে এবং দেশের অবর্ণনীয় ক্ষতি করছে।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই কিন্তু অধিকৃত পশ্চিম তীরে দ্রুত বসতি স্থাপন হচ্ছে। ইসরায়েল সরকারের থাকা চরমপন্থীরা অবশ্য গর্ব করে বলেন এই পরিবর্তন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে বাধা দেবে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিজেদের লক্ষ্য পূরণের জন্য গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছে এই চরমপন্থীরা। বসতি স্থাপনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণকারী ইসরায়েলি সংস্থা পিস নাও-এর ইয়োনাতান মিজরাহি বলেছেন, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের চরমপন্থী ইহুদিরা ইতিমধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসান ঘটানোর বিষয়টাকেও কঠিন করেছে।

তার মতে ৭ অক্টোবরের হামলা পর ইসরায়েলি সমাজে ক্রোধ ও ভয়ের মিশ্রণ রয়েছে। ওই হামলার পর থেকে জমি দখল করে বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে গতি এসেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তার কারণ যারা জমি দখল করছেন, তাদের প্রশ্ন করার কেউ নেই।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের জুন মাসের একটা সমীক্ষা বলছে ৪০% ইসরায়েলের মানুষ বিশ্বাস করেন যে এই বসতি স্থাপন তাদের দেশকে নিরাপদ করেছে। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৭%।

অন্যদিকে জুন মাসের ওই জরিপে অংশ নেওয়া ৩৫ শতাংশ মানুষ আবার মনে করেন, বসতি স্থাপনের কারণে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের জরিপে ওই পরিসংখ্যান ছিল ৪২%।

মিজরাহি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরের ইহুদি চরমপন্থীরা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসান ঘটানোর বিষয়টাকেও আগের চেয়ে কঠিন করে তুলছে।

আমি মনে করি এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ঘৃণা বাড়ছে, বলেছেন তিনি।

এই জাতীয় ঘটনায় বৃদ্ধি আগেই দেখা গিয়েছিল। কিন্তু গত ১০ মাসে এমন ১২৭০টা হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে জাতিসংঘ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮৫৬।

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা বেটসেলেমের তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের কারণে অন্তত পশ্চিম তীরের ১৮টা গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল ও জর্ডনের মধ্যবর্তী এই ফিলিস্তিনি অঞ্চল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সময় দখল করেছিল ইসরায়েল। তখন থেকে এই অংশ তাদের দখলেই রয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাসের মধ্যে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫৮৯ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েলির বাহিনীর হাতে এবং অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে।

জাতিসংঘের মতে, এদের মধ্যে কেউ কেউ হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে জানা গিয়েছে, আবার এই তালিকায় নিরস্ত্র বেসামরিক লোকজনও রয়েছে।

আবার অন্যদিকে, ওই একই সময়ে ফিলিস্তিনিরা পাঁচজন সেটলার বা বসতি স্থাপনকারী ও ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর নয়জন সদস্যকে হত্যা করেছে।

চলতি সপ্তাহে বেথেলহেমের কাছে ওয়াদি আল-রাহেলে বসতি স্থাপনকারী ও ইসরায়েলি সেনারা প্রবেশ করে। সেখানে ৪০ বছরের এক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এর আগেও কাছাকাছি থাকা একটা ইসরায়েলি গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়েছিল।

গত মাসে জিট গ্রামে জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে ঢুকে পড়া কয়েক ডজন লোক তাণ্ডব চালালে ২২ বছরের এক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্তরে নিন্দা করা হয়।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছ। তাদের পক্ষ থেকে একে মারাত্মক সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

কিন্তু এই পদক্ষেপ দায়মুক্ত করার জন্য বলেই মনে করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ইসরায়েলি নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী 'ইয়েশ দিন' এর তথ্য বলছে ২০০৫ থেকে ২০২৩ সালে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্তের পর মাত্র ৩% দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রোনেন বারের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল লঘু আইনি পদক্ষেপই চরমপন্থী দখলদারদের উৎসাহ দিয়েছিল।

পশ্চিম তীরের কিছু অংশে একচেটিয়াভাবে প্রতিষ্ঠিত ইহুদি সম্প্রদায়ের মাঝেই বাস করছে এই নতুন বসতি স্থাপনকারীরা। এর মধ্যে অনেক বসতিতেই ইসরায়েলি সরকারের আইনি সমর্থন রয়েছে। অন্য বসতি যা আউট পোস্ট বা ফাঁড়ি হিসেবে পরিচিত সেগুলো বেশিরভাগই কাফেলা এবং লোহার তৈরী ছাউনির মতো সাধারণ।

এগুলো কিন্তু ইসরায়েলের আইনের চোখেও অবৈধ। কিন্তু চরমপন্থীরা আরও বেশি জমি দখলের করার উদ্দেশ নিয়ে এগুলো তৈরি করে।

জুলাই মাসে, যখন জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত প্রথমবার জানতে পারে পূর্ব জেরুজালেম-সহ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখল অবৈধ, তখন ওই দেশকে বসতি স্থাপন সংক্রান্ত সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ এবং যত দ্রুত সম্ভব সেনা প্রত্যাহার করতে কথা বলা হয়।

ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা কিন্তু বারবার এই বসতি স্থাপনকে শান্তি আনার পথে অন্তরায় বলে আখ্যা দিয়ে এসেছে। ইসরায়েল অবশ্য এই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেয় ইহুদিরা তাদের নিজেদের জমিতে কোনও ভাবেই দখলদার নয়।

এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের এই পদক্ষেপকে যাতে কোনও ভাবেই বন্ধ না করা যায়, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে চরমপন্থীরা।

ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে উগ্র ডানপন্থী সরকারের সমর্থন পেয়ে ওই অঞ্চলে দ্রুত তাদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করেছে। পশ্চিম তীরে সংযুক্তির পরিকল্পনাকে আরও মজবুত করছে এই চরমপন্থীরা। শুধু তাই নয়, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে গাজায় বসতি স্থাপনের জন্য প্রকাশ্যে আহ্বানও জানাচ্ছে।

নতুন বসতি স্থাপনকারীদের অনেকেই এখন ইসরায়েল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত।

এক দিকে পশ্চিম তীরে এই বসতি স্থাপনের বিরোধিতাকারী বিশ্বনেতারা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য নতুন করে উৎসাহ দিচ্ছেন, শান্তি আনার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা বলছেন।

আর অন্য দিকে ইসরায়েলের জাতীয়তাবাদীরা যারা বিশ্বাস করে এই পুরো জমি তাদের (ইসরায়েলের) মালিকানাধীন, তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্নকে অসম্ভব করে তুলতে সচেষ্ট।

বিশ্লেষকরা মনে করেন এই কারণেই কিছু রাজনীতিবিদ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মানতে নারাজ।

টাইমস অফ ইসরায়েলের রাজনৈতিক সংবাদদাতা টাল স্নাইডার বলেন, তারা সংঘাতের অবসান ঘটাতে চায় না বা জিম্মি চুক্তিতে যেতে চায় না কারণ তারা বিশ্বাস করে যে ইসরায়েলের লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত যতক্ষণ না তারা গাজার ভিতরে থাকতে পারে।

তারা দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা পোষণ করেন এবং মনে করে তাদের মতাদর্শ বেশি ন্যায়সঙ্গত। এটা অবশ্য তাদের নিজস্ব যুক্তি।

ইতিমধ্যে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পাঁচটা নতুন বসতির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে বাত্তিরের বসতি এবং রাষ্ট্রের জন্য কমপক্ষে ২৩ বর্গ কিলোমিটার ক্ষেত্র।

এর অর্থ হলো ইসরায়েল এই জমিকে তাদের নিজেদের বলে মনে করে, তা সে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলেই হোক বা ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হোক কিংবা দুটোই।

স্থলভাগে তথ্য পরিবর্তন করে এই দখলদাররা বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলিদের ওই জমিতে স্থানান্তরিত করতে চায় যাতে তাদের উপস্থিতির জানান দেওয়া যেতে পারে। এবং দীর্ঘমেয়াদে এই ভূখণ্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা দখল করবে।

এদিকে, রাষ্ট্র অনুমোদিত ভূমি দখলের বাইরে চরমপন্থীরাও কিন্তু ওই অঞ্চলে দ্রুত বসতি স্থাপন করেছে।

হেবরনের উত্তরে আল-কানুবের একটা স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে নতুন কাফেলা এবং রাস্তা নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে ওই অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে জর্ডনের কাছ থেকে পশ্চিম তীর দখল করার পরপরই সেখানে বসতি স্থাপন শুরু করে ইসরায়েল। তারপর থেকে ক্ষমতায় আসা প্রতিটা সরকারই সেখানে ক্রমবর্ধমান বসতি সম্প্রসারণের অনুমতি দিয়েছে।

বর্তমানে সেখানে (ইসরায়েল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম বাদে) আনুমানিক ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি ৫ লাখ ইহুদি ইসরায়েলির সঙ্গে ১৩০টারও বেশি বসতিতে থাকে। তবে ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়া একজন সুপরিচিত উগ্র ডানপন্থী সরকারি নেতা এই সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

উগ্র ডানপন্থী নেতা বেজালেল স্মোট্রিচ বিশ্বাস করেন যে এই জমিগুলোতে ইহুদিদের ঈশ্বর প্রদত্ত অধিকার রয়েছে। তিনি দুটো উগ্র ডানপন্থী বসতি স্থাপনকারী দলের মধ্যে একটার প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২২ সালের নির্বাচনের পরে তাকে ক্ষমতায় আনেন।

স্মোট্রিচ অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও তিনি একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদাধিকারী, যা তাকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনার সুযোগ করে দিয়েছে।

নতুন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো-সহ এই বসতিগুলোতে রাষ্ট্রের অর্থ থেকে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছেন তিনি। দ্রুত বসতি নির্মাণের জন্য নতুন আমলাতন্ত্রও তৈরী করেছেন। গোপনে রেকর্ড করা কথোপকথনে তাকে সমর্থকদের কাছে গর্ব করে বলতে শোনা গিয়েছে যে তিনি সিস্টেমের ডিএনএ পরিবর্তন করেছেন এবং পশ্চিম তীরে সংযুক্তির জন্য তার যে পদক্ষেপ তা আন্তর্জাতিক এবং আইনি প্রেক্ষাপটে নিরিখে কার্যকর।


আরও খবর
উত্তরপ্রদেশে ভবন ধসে নিহত ৮, আহত ২৮

রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪