কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আবাসিক হল কাজী নজরুল ইসলামে আড়াইশো শিক্ষার্থী বসবাস করলেও তাদের নিরাপত্তায় নেই কোন সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা। যার ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে নলের পানি পান করছে। এতে করে নানা স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুপেয় পানির জন্য আলাদা করে একটি পানির ট্যাংক থাকলেও কোন ফিল্টারের ব্যবস্থা নেই। তবে সময় মতো ট্যাংক পরিষ্কার না করা এবং পানিতে ময়লা থাকারও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
সুপেয় পানির সংকট সম্পর্কে কাজী নজরুল হলের ২০৮ নং রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের নজরুল হলের খাবার পানিতে আয়রণের মাত্রা অনেক বেশি। কয়েকদিন পানির পাত্রে রাখলে সহজে অনুধাবন করতে পারা যায়। কোন ফিল্টারের ব্যবস্থা না থাকায় স্টুডেন্টদের মাত্রাতিরিক্ত আয়রনযুক্ত পানি খায়তে হচ্ছে যা ত্বকে কালো দাগ হওয়া, চুলকানি সৃষ্টি, চুল পড়ে যাওয়ার মত সমস্যাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে আছি আমরা।’’
আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী এস এম সাদির আহমেদ বলেন ‘‘পানির অপর নাম জীবন, আর এই পানি যদি হয় অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ, তাহলে কেমন হয়? যেখানে ২০০-২৫০ জন শিক্ষার্থী অবস্থান করছে আর সেখানে ফিল্টার না থাকায় আমাদের অনিরাপদ পানি পান করতে হচ্ছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ পানির ট্যাংকগুলো পরিস্কার না করার ফলে এই ট্যাংকগুলোতে ময়লা জমে পানির সাথে মিশে আসে। আর এই পানি দিয়েই আমাদের নিত্যদিনের সকল প্রকার কাজে ব্যবহার করতে হচ্ছে। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, হলে কোনো ফিল্টার না থাকায় শিক্ষার্থীদের এই পানি খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে। যা আমাদের জন্য অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে হলে ফিল্টারের ব্যবস্থা করে দিলে আমাদের আর এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না।’’
নলের পানি পান করায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা সরাসরি নলের পানি পান করার ফলে পানিবাহিত রোগ যেমন- জন্ডিস, ডাইরিয়া, টাইফয়েড রোগসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।’’
এবিষয়ে জানতে কাজী নজরুল ইসলাম হল প্রভোস্ট ড. মিহির লাল ভৌমিকের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।