
সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিলে নিষিদ্ধ জালে মাছ শিকার হচ্ছে অবাধে। এতে মারা পড়ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আর পোনা।
উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে যাওয়া নয়াখালের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে খুঁটি গেড়ে পাতা হয়েছে বেহুন্দি আর ভাসা জাল। আর নির্ভয়ে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে বসে থাকেন শিকারিরা অথচ বেহুন্দি আর ভাসা দুটোই নিষিদ্ধ জাল।
মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে যাওয়া এ খালে দিন-দুপুরে নিষিদ্ধ জাল পেতে এমন মাছ শিকার করলেও এতোদিন দেখার যেন কেউ ছিল না।
শুধু নয়াখাল নয়, ডলু, শঙ্খ, হাঙ্গরখাল, গরলখাল, ইছামতি, সোনাইছড়ি, গুমরছড়ি, গুইল্যাছড়ি, এওচিয়ার ছড়া, টঙ্কাবতী খালসহ উপজেলাজুড়ে বিভিন্ন খাল আর বিলে এভাবে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার করে মাছ শিকার হচ্ছে অবাধে।
শিকারিদের পাতা নিষিদ্ধ জালে আটকা পড়ে বিলুপ্তি পথে চিংড়ি, কালিবাউশ, বাইলা, গুইল্লা, পুঁটি গুইল্লা, ইছা, বোয়াল, ব্যাঙ মাছ। এছাড়া এসব খালের বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে গতিরোধ করা হচ্ছে পানি প্রবাহের।
স্থানীয়রা বলছেন, আগে একসময় এসব খালে বড় বড় বোয়াল থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশিয় মাছ ধরা পড়তো। এখন এসব ধরা পড়ে না। বাজারে খাচি ভরে এসব ছোট ছোট সাইজের দেশীয় মাছ বিক্রি হয়। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের লোকজন এসে খাল-বিল থেকে এসব অবৈধ জাল তুলে নিয়ে পুড়ে ফেলে। কিন্তু পরদিন আবারও পাতা হয় এসব অবৈধ জাল।
স্থানীয় বাজারেই নিষিদ্ধ এসব জাল বিক্রি। নিষিদ্ধ জাল পাতা বন্ধ করতে হলে দোকানে দোকানে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তদারকি জোরদার করতে হবে।
এদিকে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাতকানিয়া উপজেলার মাহালিয়া বিল ও নয়াখাল এলাকায় অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় বাজালিয়া ইউনিয়নের মাহালিয়া বিলে অবৈধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরার অপরাধে নাছির উদ্দীন ও আবছার উদ্দীন নামে দুইজনকে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ১ হাজার টাকা করে মোট ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ব্যবহৃত অবৈধ জাল জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয় এবং জব্দকৃত তিনটি ডিঙি নৌকা স্পট নিলামে উপস্থিত জনতার মাঝে মোট ৩ হাজার একশত টাকায় বিক্রি করা হয়।
অন্যদিকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের নয়াখালে অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ২০০ মিটার অবৈধ বেহুন্দি জাল আটক করে ধ্বংস করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী। বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে সহযোগিতা করেন সাতকানিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত শর্মা, সাতকানিয়া থানার পুলিশ সদস্যবৃন্দ এবং উপজেলা ভূমি ও মৎস্য অফিসের কর্মচারীবৃন্দ।