ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর ২২ দিন ইলিশ শিকার বন্ধ রাখা হয়। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীতে চলছে ইলিশ শিকার। জেলেদের দাবি, তারা সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে বাধ্য হয়েছেন। বেশিরভার জেলের নিবন্ধন বা কার্ড হয়নি। যারা নিবন্ধিত তারাও সহযোগিতা পাননি।
রাজবাড়ী জেলাটি পদ্মা নদী বেষ্টিত। দৌলতদিয়া থেকে পাংশার হাবাসপুর পর্যন্ত চারটি উপজেলার ৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে বিস্তৃত পদ্মা নদীর অংশ। এসব এলাকার মানুষ নদীর ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার করে থাকে। প্রতিবছর অক্টোবর মাসে মা ইলিশ সাগরের লবণাক্ত পানি থেকে ডিম ছাড়তে পদ্মায় আসে। এই সময়ের আগে জেলেদের মাছ না ধরতে নিবন্ধিত কার্ডধারীদের সরকারি সহযোগীতার চাল দেওয়া হয়।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ী কার্ডধারী জেলে ১৪ হাজার ৯৩ জন। তাদের মধ্যে চার হাজার ৩৯৩ জন এ বছর সরকারি সহযোগিতার চাল পেয়েছন।
সরেজমিন দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পদ্মার দৌলতদিয়া কলাবাগান, দেবগ্রাম, অন্তারমোড়, সদরের বরাট, মিজানপুরের মহাদেবপুর, জৌকুড়া ও ধাওয়াপাড়া এলাকায় দেদারছে ধরা হচ্ছে ইলিশ মাছ। তবে নদীতে এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মৎস্য অফিসের কাউকে অভিযান চালাতে দেখা যায়নি।
মিজানপুর ইউনিয়নের জেলে সুরুজ খাঁ বলেন, ‘আমরা সব সময় পদ্মায় মাছ ধরি। কিন্তু বন্ধের সময় কোনো সহযোগিতা পাই না। নিবন্ধন বা কার্ড নেই। চাল পায় ভ্যানচালক, রিকশাচালকরা।’
একই এলাকার আরেক জেলে শাহেদ আলী বলেন, ‘বিগত সময়ে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হলেও এখন দিচ্ছে ২৫ কেজি। এই সামান্য চালে ২২ দিন কীভাবে চলে? পরিবার- পরিজন নিয়ে ধার-দেনা করে খুব কষ্টে চলতে হচ্ছে। সহযোগিতা না পেয়ে মাছ ধরছি।’
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ইলিশ ধরায় ক্ষুব্ধ অনেক স্থানীয় বাসিন্দা। জৌকুড়া এলাকার বাসিন্দা আকমল শেখ বলেন, ‘প্রশাসনের লোকজন কী করে? তারা থাকতে জেলেরা কীভাবে মাছ ধরে? এখনতো নদীতে ইলশ মাছ ডিম ছাড়তে আসে। এখন যদি মাছ ধরে তাহলে মাছ বাড়বে কীভাবে।’
জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘যারা ইলিশ মাছ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত বন্ধের সময়ে শুধু তাদেরকে মানবিক সহায়তার আওতায় চাল দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধিত অনেক জেলে সহযোগিতা পেয়েছেন। যারা পাননি, তাদেরও সহযোগিতা করা হবে।’