আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

নিষেধাজ্ঞা থামাতে পারেনি উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কার্যক্রম

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ নভেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ০৬ নভেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

এশিয়ার পরমাণু শক্তিসমৃদ্ধ দেশ উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কার্যক্রম থামাতে দেশটির ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রই বলছে তাদের এ কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। উত্তর কোরিয়ার ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শক্তি-সামর্থ্য দুর্বল করে দিয়ে তাদের আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা। কিন্তু এটি কাজে দেয়নি। এর বদলে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক শক্তি কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হয়েছে। এ বছর তারা রেকর্ড পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে- যার মধ্যে রয়েছে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে আঘাত হানতে তৈরি করা হয়েছে। এখন ধারণা করা হচ্ছে পাঁচ বছর আবারও পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে তারা।

এখন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক নীতি-নির্ধারকরদের এ বিষয়ে করার মতো তেমন কিছু আর নেই। তবে তারা এখন বিশ্লেষণ করতে পারেন কি ভুল হলো আর এ ভুলের জন্য কে দায়ী। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিংটন ও বারাক ওবামার প্রশাসনে উত্তর কোরিয়া ও ইরান নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করা কূটনীতিক জোসেফ ডে থমাস রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা নীতিগতভাবে ব্যর্থ হয়েছি। এটি একটি পুরো প্রজন্মের ব্যর্থতা। পুরো একটি প্রজন্ম এ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করেছে, আর এটি ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের এখন পরবর্তী ধাপে যেতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে এখন কি করতে হবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনও ব্যর্থতার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাবে তারা দাবি করছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কার্যক্রম ধীরগতিতে চলেছে। নিষেধাজ্ঞা না দেওয়া হলে তাদের অস্ত্র শক্তি আরও বাড়ত।

এ ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ হয়েছে, এটির সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করব। আমি মনে করি যদি নিষেধাজ্ঞা না থাকত তাহলে উত্তর কোরিয়া আরও অনেক অনেক এগিয়ে থাকত এবং বিশ্ব ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য আরও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াত। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউএস ট্রেজারি এবং হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা কাউন্সিলের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি। সাবেক কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা বলছেন নিষেধাজ্ঞাগুলো কখনো দৃঢ়ভাবে আরোপ করা হয়নি। তারা উত্তর কোরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নড়েবড়ে অবস্থান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীন-তাইওয়ান উত্তেজনাকে দায়ী করছেন। তাদের ভাষ্য অন্যান্য ঝামেলার কারণে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর করে দিয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞাগুলো উত্তর কোরিয়া সহজেই পাশ কাটিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছে। এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অনেক আগে থেকেই উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।

উত্তর কোরিয়া পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম চালাতে যেন পর্যাপ্ত অর্থ না পায় সেজন্য ২০০৬ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নিরাপত্তা পরিষদ। বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার কয়লা, লোহা, সীসা, টেক্সটাইল এবং সামুদ্রিক খাবার রপ্তানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি। তাছাড়া উত্তর কোরিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি এবং শোধিত জ্বালানি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করে রাখা হয়েছে। তারপরও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই জানান উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করছে এবং নির্বিঘ্নে তাদের অস্ত্র কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়া যখন পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল তখন নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য রাশিয়া-চীন শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার পক্ষে মত দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা কি করবে এ নিয়ে সন্দেহ আছে।

সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়া যেসব ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে সেগুলো নিয়ে শুক্রবার বৈঠকে বসে নিরাপত্তা পরিষদ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া-চীনের প্রতি অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেছে উত্তর কোরিয়াকে ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না তারা।

নিউজ ট্যাগ: উত্তর কোরিয়া

আরও খবর



অঙ্গীকারনামা দিয়ে জামিনে মুক্তি পেলেন সঞ্জয়

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের স্টোরিতে লালন সংগীতের লাইন দেওয়াকে কেন্দ্র করে সঞ্জয় রক্ষিত (৪০) নামে এক যুবককে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছিল পুলিশ। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করবেন না মর্মে অঙ্গীকারনামা দিয়ে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাকিব হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।

শরীয়তপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ফেসবুকের স্টোরিতে স্ট্যাটাসকে ঘিরে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের হরি নারায়ণ রক্ষিতের ছেলে সঞ্জয় রক্ষিতকে ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশ রোববার আটক করে। সঞ্জয় পেশায় একজন স্বর্ণকার। ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ (১) ধারায় তাকে তাকে আটক করা হয়েছিল। পরে অঙ্গীকারনামায় এই মর্মে স্বাক্ষর করেন যে ভবিষ্যতে তিনি এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

প্রসঙ্গত, সঞ্জয় রক্ষিত তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে স্টোরিতে লিখেন সুন্নতে খাতনা দিলে যদি হয় মুসলমান, তাহলে নারী জাতির কি হয় বিধান। এ নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এতে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কায় সঞ্চিত রক্ষিতকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা মোতাবেক আটক করেছিল পুলিশ।


আরও খবর



ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডা, যাত্রীদের পিটুনিতে চালক-হেলপারের মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সাভার প্রতিনিধি

Image

সাভারের আশুলিয়ায় ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে যাত্রীদের পিটুনিতে ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসের চালক ও হেলপারের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে গাজীপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (ডিইপিজেড) এ মারধরের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন ইতিহাস পরিবহনের বাস চালক সোহেল রানা বাবু (২৬) ও হেলপার হৃদয় (৩০)। বাস চালক সোহেল মিরপুরের ফুরকান হোসেনের ছেলে। অপরদিকে হেলপার হৃদয় ময়মনসিংহ ফুলপুর এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুপুরে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চন্দ্রাগামী ইতিহাস পরিবহনের বাসের চালক ও হেলপারের সাথে যাত্রীদের ভাড়া নিয়ে বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত যাত্রীরা বাসের চালক ও হেলপারকে মারধর করে। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে আহত অবস্থায় গাজীপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মাসুদুর রহমান ঢাকা ঘটনার সত্যতা ও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডার জের ধরে যাত্রীদের সাথে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



ইসরায়েলে গাড়ি চাপায় পাঁচ বিক্ষোভকারী আহত

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলের তেল আবিবে বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থলের কাছে একটি গাড়ি চাপায় পাঁচ বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জরুরি মেডিকেল টিম আহতদের ইচিলভ হাসপাতালে সরিয়ে নিয়েছে এবং একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

সংবাদমাধ্যম ওয়ালার হয়ে কাজ করা সাংবাদিক উরি সেলার পোস্ট করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। হামাসের হাতে বন্দীদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ করে আসছে ইসরায়েলি নাগরিকরা।

খবর অনুসারে, জেরুজালেমে বিক্ষোভকারীরা জিম্মি চুক্তির দাবি জানাচ্ছে। তারা বলছে, বন্দীরা কেবল চুক্তির মাধ্যমেই ফিরে আসবে, যুদ্ধের মাধ্যমে নয়।


আরও খবর



অস্ত্রসহ কেএনএফের আরও ৮ সদস্য আটক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

বান্দরবান থেকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আরও ৮ সদস্যকে অস্ত্রসহ আটক করেছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার  দিকে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। বান্দরবান রিজিয়নের অন্তর্গত ১৬ ই বেঙ্গলের দোপানিছড়াপাড়া এলাকায় সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্পের মেজর রাজীবের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জানা যায়, টহল দল কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে এলাকাটি ঘেরাও করে। এ সময় আট জনকে আটকের পাশাপাশি নয়টি এলজি, ১৯টি এলজি কার্টিজ, দুইটি মোবাইল ফোন এবং দুইটি আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংকে হামলা, টাকা লুটের ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় আসে কেএনএ। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ যৌথ বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে।


আরও খবর



বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা যেভাবে পরিণত হলো ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়’

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

উৎসবপ্রিয় বাঙালি, আর বাঙালির পরিচয়ের উৎসব বাংলা বর্ষবরণ। এই বর্ষবরণে মূল আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। প্রতি বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্বব্যাপী বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার পঙতি থেকে এবারই প্রথম প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রার। আমরা তো তিমির বিনাশী প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলা ১৪৩১ সালকে বরণ।

২০১৬ সালে সংস্কৃতির প্রতীক মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষবরণ, যা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও সর্বজনীন এক উৎসবে পরিণত হয়েছে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ১৪৩০ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখের আনন্দে মাতবে গোটা দেশ। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাই এ দিনটির অপেক্ষায় থাকে। এদিনের অন্যতম আকর্ষণ বর্ণিল সাজ আর আয়োজনের মঙ্গল শোভাযাত্রা। তাই কদিন ধরেই শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ বিশালকায় চারুকর্ম, পাপেট, হাতি ও ঘোড়াসহ বিচিত্র সাজসজ্জা তৈরিতে জোর প্রস্তুতি চলে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করতে চাইলেও অস্বীকৃতি জানান আয়োজক প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এর পরিবর্তে বরাবরই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে মাসব্যাপী চারুকলা অনুষদে চলে ফান্ড রেইজিং ক্যাম্পেইন। এবার তা শুরু হয়েছে গত ১৯ মার্চ থেকে। কিন্তু রমজানের কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি খুবই কম বলে জানান আয়োজকরা।

ইতিহাস

বাংলা বর্ষবরণের ইতিহাস কয়েকশ বছরের পুরনো। তবে মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস খুব বেশি আগের নয়। আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, মানুষ যখন তার খর্বিত মৌলিক, মানবিক অধিকার আর বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য সোচ্চার। ঠিক এই সময় হতাশা-যন্ত্রণার মাঝে আনন্দের দীপশিখা জ্বালিয়ে আশার বাণী শোনাবার জন্য এই শোভাযাত্রা শুরু হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল যশোরে ১৩৯২ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখে। যশোরের সেই শোভাযাত্রার আদলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ১৯৮৯ সাল থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালিত হচ্ছে।

চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে এই শোভাযাত্রা বের হয়। শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এই শোভাযাত্রা পুনরায় চারুকলার গেটে এসে সমাপ্ত হয়। পরবর্তী সময়ে ধর্মনিরপেক্ষ একটি উৎসব হিসেবে এটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে পালিত হয়ে আসছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। তবে প্রথমে চারুকলায় হওয়া শোভাযাত্রাটির নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিল না। তখন এর নাম ছিল বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। পরে এর নাম দেয়া হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। ১৯৮৯ সালে হওয়া প্রথম আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল পাপেট, ঘোড়া, হাতি। ১৯৯০ সালের আনন্দ শোভাযাত্রায়ও নানা ধরনের শিল্পকর্মের প্রতিকৃতি স্থান পায়। ১৯৯১ সালে চারুকলার শোভাযাত্রা জনপ্রিয়তায় নতুন মাত্রা লাভ করে। চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিল্পীদের উদ্যোগে হওয়া সেই শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য, বিশিষ্ট লেখক, শিল্পীসহ সাধারণ নাগরিকরা অংশ নেয়। এ শোভাযাত্রা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা এবং ধর্মের মানুষেরা অংশ নেয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে উপাচার্য অধ্যাপক আবু ইউসুফের সময়। ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে একটি সংস্কৃতিক বলয় তৈরির জন্য প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে পাখি, মাছ, ফুল, মুখোশ বানানোর কাজ। এই শোভাযাত্রা আরও একটি জায়গায় অনন্য। সেটি হলো এই আয়োজনের স্বকীয়তা। অর্থাৎ এই আয়োজন হয় সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে।


আরও খবর
লিপি চক্রবর্তীর ‘আকণ্ঠ মরেছি’

বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4