ক্ষমতার মঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
আবারও জট পাকানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর সমর্থক রাজ্য আইনপ্রণেতারা সুইং স্টেটগুলো থেকে
‘বিকল্প ইলেকটোরাল ভোট’ গ্রহণ করে কংগ্রেসে পাঠিয়েছেন। আগামী
৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন থেকে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার অলীক ভাবনা
থেকে এখনো সরে আসতে পারছেন না ট্রাম্প। যদিও সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতা জো বাইডেনকে
‘প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট’ হিসেবে মেনে নেওয়ার পর এমন কোনো সম্ভাবনাই
কেউ কোথাও দেখছে না।
সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রিপাবলিকান। দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল
গতকাল মঙ্গলবার জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো স্বীকার করে
নিয়েছেন। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় নিশ্চিত হলেও সিনেটে রিপাবলিকানদের
এ শীর্ষ নেতা এত দিন চুপটি মেরেই ছিলেন। এ নিয়ে উৎকণ্ঠা ছিল রাজনৈতিক মহলে। যুক্তরাষ্ট্রের
গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের বাইরে নিশ্চিত বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন না জানিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই
উৎসাহিত করছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ ইলেকটোরাল কলেজের ভোটের পর সিনেটর মিচ ম্যাককনেলের
আর অপেক্ষার কোনো সুযোগও ছিল না। সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতার সরে দাঁড়ানোর পর
কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ইলেকটোরাল ভোটের যৌক্তিক আপত্তি উপস্থাপন এখন প্রায় অসম্ভব
বলে মনে করা হচ্ছে। উইলিয়াম অ্যান্ড মেরি স্কুল অব লর পরিচালক রেবেকা গ্রিন বলেছেন,
নির্বাচন ফলাফল পাল্টে দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের আইনি লড়াই ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, চেষ্টা
না করার জন্য নয়, ব্যর্থ হয়েছে প্রমাণের অভাবে।
গত ছয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প শিবিরের মামলা দুই দফা
খারিজ করেছেন। ফেডারেল ও রাজ্য আদালত নির্বাচনপরবর্তী ট্রাম্প শিবিরের ৬০টি মামলা খারিজ
করেছেন। ভোট গণনা দফায় দফায় করার পরও জর্জিয়া ও উইসকনসিনে নির্বাচনী ফলাফলের কোনো পার্থক্য
ঘটেনি।
এরপরও ট্রাম্প শিবির থেমে যায়নি। গতকাল হোয়াইট হাউসের প্রেস
সেক্রেটারি কাইলি ম্যাকনেনিকে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্ন রাখা হয়। ইলেকটোরাল ভোটের
পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোভাব জানতে চাওয়া হলে প্রেস সেক্রেটারি বলেছেন, ট্রাম্প
এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ইলেকটোরাল ভোটকে সাংবিধানিক একটি পদক্ষেপ বলে তিনি উল্লেখ
করেন। ট্রাম্প যে থামছেন না, এ বিষয়টিই স্পষ্ট করেছেন প্রেস সেক্রেটারি কাইলি ম্যাকনেনি।
ট্রাম্প শিবির থেকে নতুন এক কৌশল নেওয়া হয়েছে। যেসব রাজ্যে
নির্বাচনের ফলাফল কাছাকাছি ছিল, সেখানে রাজ্যের রিপাবলিকান ট্রাম্প–সমর্থক আইনপ্রণেতারা নিজেরা সভা করেছেন।
তাঁরা রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলের পাল্টা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ‘বিকল্প ইলেকটোরাল ভোট’ দিয়ে ওয়াশিংটনে পাঠাচ্ছেন। এমন বিকল্প
ইলেকটোরাল ভোট অ্যারিজোনা, জর্জিয়া , মিশিগান , পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন থেকে পাঠানো
হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার বলেছেন , তাঁরা
এসব বিকল্প ইলেকটোরাল ভোট কংগ্রেসে পাঠিয়ে আইনের সব পথ খোলা রাখছেন। অ্যালাবামার রিপাবলিকান
কংগ্রেসম্যান মও ব্রুক এ ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে কংগ্রেসে আপত্তি জানাবেন বলে আগেই ঘোষণা
দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ট্রাম্প–সমর্থক শতাধিক আইনপ্রণেতা যোগ দেবেন। এমন আপত্তি কংগ্রেসে
ডেমোক্র্যাট সংখ্যা গরিষ্ঠতায় নাকচ হয়ে যাবে।