আজঃ মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

নিজের অনুসারীদের নিয়ে বৈঠকে রওশন এরশাদ

প্রকাশিত:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image
নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি রওশন এরশাদ ও ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদও।

জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বর্তমান সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ তার অনুসারীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন।

এই মুহূর্তে গুলশানের একটি ভবনে এ বৈঠক চলছে (বুধবার রাত পৌনে ১০টা)। পার্টির রওশনপন্থি নেতা মসিউর রহমান রাঙা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনিও বৈঠকে উপস্থিত আছেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টির মূল ধারা (চেয়ারম্যান জিএম কাদেরপন্থি) ইতোমধ্যে ৩টি ছাড়া প্রায় সব আসনে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে। রওশন এরশাদ ও তার কিছু অনুসারী এখনো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন।

রওশন এরশাদের জন্য ৩টি আসন ফাঁকা রাখা হলেও তিনি ও তার ছেলে সাদ এরশাদ এখনো জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরম নেননি।

এদিকে আজ বুধবারও চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে রওশন এরশাদের অপেক্ষায় বসেছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বৈঠক চলছে। নির্বাচনে আমরা যাব, সেটা কীভাবে যাব সে বিষয়টি নির্ধারণ করতেই এখন বৈঠকে বসেছি।

নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি রওশন এরশাদ ও ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদও। সাদ যে আসনের সংসদ সদস্য সেখানে আবার এরশাদের ভাই দলের বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টিতে কর্তৃত্ব নিয়ে এ দ্বন্দ্ব চলছে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই। এটির অবসানের কোনো আভাস এখনও দেখা যায়নি।

রওশন এরশাদের জন্য ফরম নিয়ে বসে আছেন উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বৈঠক এখনও শুরু হয়নি, আমাদের প্রধান পৃষ্টপোষক আসছেন, তিনি আসলে আমরা সবাই একটা সিদ্ধান্ত নেব, এর আগে কিছু বলা যায় না।

জাতীয় পার্টি ২০ থেকে ২৩ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে। সময় শেষ হওয়ার পর তা বাড়ানো হয় আরও এক দিন। এই এক দিন সময় বাড়ানোর কারণ ছিল রওশন এরশাদ। সময় বাড়ানোর পরেও অবশ্য চিত্র পাল্টায়নি। এর মধ্যে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শুরু করে দলটি।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এক দিন আগে প্রধান পৃষ্ঠপোষককে নিয়ে কী ভাবছেন জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, আমরা আশাবাদী উনারা আমাদের সঙ্গে আসবেন। ওনাদের জন্য মনোনয়ন ফরম নিয়ে অফিসে বসে আছি।

নিউজ ট্যাগ: রওশন এরশাদ

আরও খবর



অপরাজনীতি যেন চিরতরে দূর হয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশ থেকে অপরাজনীতি যেন চিরতরে দূর হয় সেই প্রার্থনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার নিজ গ্রামের বাড়ির জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় শেষে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রার্থনার কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা আমাদের দেশে যে সম্প্রীতি আছে, সেই সম্প্রীতির বন্ধনকে যেন আরও দৃঢ় করতে পারি। একই সঙ্গে আমাদের দেশ থেকে অপরাজনীতি যেন চিরতরে দূর হয়।

নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে গণমাধ্যমকর্মীদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকে পবিত্র ঈদের দিন আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাই। মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমাদের দেশে যে শান্তি স্থিতি বিরাজমান এবং আজকে বাংলাদেশ যে পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে, এই উন্নয়ন অগ্রগতি যেন আরও বেগবান হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার সম্মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে আমাদের এই দেশ রচিত হয়েছে। এই দেশ থেকে যেন সমস্ত সম্প্রদায়িক অপশক্তির বিনাশ ঘটে। এই দেশে যেন আমরা সব সম্প্রদায় এবং সব মত-পথের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করতে পারি।

ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ফিলিস্তিনের মুসলমানদেরকে সেখানে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। সেখানে যেন অবিলম্বে শান্তি আসে। সেখানে ইসরায়েল যে বর্বরতা চালাচ্ছে সে বর্বরতার যেন চির অবসান হয়। এটিই মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা।

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে তার নেতৃত্বে দেশ যেন আরও এগিয়ে যায় মহান আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।


আরও খবর



ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকার ঘোষণা এরদোয়ানের

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। আজ বুধবার নিজ দল একে পার্টির (জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) সংসদীয় দলের সভায় তিনি বলেন, আমাকে একঘরে করে রাখলেও আমি ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকব। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

গত বছরের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপরেই বছরের পর বছর ধরে গাজায় চলা সামরিক পদক্ষেপ জোরালো করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ৭২ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এমন অবস্থায় এরদোয়ান বলেছেন, যতক্ষণ আমার শরীরে প্রাণ আছে আমি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকবো। তাদের সংগ্রামের সঙ্গে থাকবো।

হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মানতেও নারাজ এরদোয়ান। হামাস যোদ্ধাদের দেশপ্রেমিক বলে আখ্যা দেন তিনি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা একমাত্র সাহসী জাতি যারা হামাসকে স্বাধীনতাকামী সংগঠন মনে করি।

এরদোয়ান বলেন, যখন কেউ কথা বলেনি, আমরা বলেছি। জাতিসংঘে আমরা দাঁড়িয়ে বলেছি হামাস সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নয়।


আরও খবর
পুলিৎজার পেল ৩ গণমাধ্যম

মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪




মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর



সমালোচনার মুখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন পলকের শ্যালক

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নাটোর প্রতিনিধি

Image

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীব রুবেল। আজ রোববার এক ভিডিও বার্তায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় লুৎফুল হাবিব রুবেল বলেন, আমি ২০০২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে রয়েছি। ২০০৫ সালে সিংড়া গোল-ই আফরোজ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছি। গত ৩ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করি। ইউনিয়ন পরিষদের পর পর তিন বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই।

গত ৮ই এপ্রিল উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র সাবমিট করি। তারপর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সাথে আমি জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিভিন্ন মহল সক্রিয় আছে। লুৎফুল বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের আত্মীয়-স্বজন নির্বাচন করতে পারবে না। তার-ই আলোকে এই ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়ন পত্রটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। অফিসিয়াল যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করব।

গত সোমবার সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আরেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন, তার ভাই ও এক আত্মীয়কে অপহরণ করেন লুৎফুল হাবিবের সমর্থকরা। গাড়িতে মারধরের পর ওইদিন দেলোয়ারকে তার বাড়ির সামনে আহত অবস্থায় ফেলে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উদ্ধারের পর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনার দুটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়, যেখানে দেখা যায় দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে যে গাড়িতে তোলা হয় সেটি তার প্রতিদ্বন্দ্বী লুৎফুল হাবীবের। এ ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের ভাই থানায় মামলা করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে মূল ঘটনা সামনে এলে গত শুক্রবার লুৎফুল হাবীবকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী পলক।


আরও খবর



হ্রাস পাচ্ছে ফসল উৎপাদন

রামগঞ্জে ফসলি জমির মাটি গিলে খাচ্ছে ইটভাটা

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
উপজেলা প্রতিনিধি

Image

রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নে ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে কৃষি ও ফসলি জমির মাটি। মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির ফলে উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের একটি বিলেই রয়েছে প্রায় দুই শতাধীক পুকুর। সরকারি খাল-ডোবা নালা, আবাদি জমির মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কাটার ফলে যত্রতত্রে পুকুরে সয়লাভ। এসব জমির বেশিরভাগই ধানের জমি। এতে দিনদিন কমছে চাষাবাদের জমি। ফলে হ্রাস পাচ্ছে ফসল উৎপাদন।

অন্যদিকে একের পর এক গড়ে ওঠা ইটভাটা গ্রাস করে নিচ্ছে ফসলি জমি। বৈধ-অবৈধ ইটভাটাগুলো এখন কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি মৌসুমে ইট ভাটার আশপাশে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। মাটি খেঁকোদের খপ্পরে পড়ে জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ইটভাটায়, পুড়ছে আগুনে।

শুক্রবার বিকালে ভোলাকোট ইউনিয়নের একটি মাঠে গিয়ে দেখা যায় মাটি কাটার এ কর্মযজ্ঞ।

রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের আমির হোসেন ডিপজলের ইটভাটার পিছনে দেহলা ও সমেষপুর কৃষি জমির চিত্র এটি।

পুরো ফসলি জমির মাঠ জুড়ে বিশাল বিশাল পুকুরে সয়লাভ। এসব পুকুরের কারণে কোন ধরনের ফসল ফলানো স্থানীয় কৃষকদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে উক্ত বিলে ৩০টির বেশী পুকুর খনন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী কয়েকবার  মানববন্ধন, প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ, গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্বারকলিপি প্রদান, সাংবাদিক সম্মেলন করে আসলেও বন্ধ হয়নি মাটি কাটা।

শুক্রবার ২৬ (এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ২০ থেকে ২৫টি অবৈধ ট্রলি ও ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি নিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী আল মদিনা ও জেবিএম ইটভাটায়।

আবদুস সালাম, কালা মিয়া, রাজা মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক জানান, ভোলাকোট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল পাটোয়ারী, ইটভাটা মালিক আমির হোসেন ডিপজল, জাহাঙ্গীর কোম্পানী, সিরাজ মিয়াসহ মাটি ব্যবসায়ী এই চক্রটি জমি কিনে নিয়ে ৪০ থেকে ৫০ ফুট গভীর করে মাটি নিয়ে যায়।

এত পার্শ্ববর্তী জমি ভেঙ্গে পড়ে পুকুরে পতিত হয়। পার্শ্ববর্তী জমির মালিক বাধ্য হয়ে মাটি খেকোদের কাছে অল্প দামে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার অনেক কৃষককে জমির মাটি বিক্রিতেও বাধ্য করা হয় কখনো কখনো। নামমাত্র মূল্যে ২বা ৩ ফুট কাটার কথা বলা হলেও অল্প কদিনেই ভেকু মেশিন দিয়ে কোথাও কোথাও তা ৪০/৫০ ফুট গভীর করে মাটি নিয়ে যায়।

সিরাজ নামের একজন কৃষক জানান, সমস্ত মাঠটাকে যেভাবে ধ্বংস করে ফেলছে, আমরা কৃষক কিভাবে চাষাবাদ করবো, কি খাবো।

শাহ আলম নামের আরেক কৃষক জানান, পুরো মাঠজুড়ে পুকুর। পুকুরের কারণে নিজের জমিতেই যাওয়া যায়না। কিছু কিছু জমির ধান পেকে আছে অথচ ধান কেটে কিভাবে আনবো-নৌকায় করেও আনা সম্ভব নয়।

ভোলাকোট গ্রামের দেহলা, শাহারপাড়া, শাকতলা ও ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর ও সিরুন্দিসহ ৫ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক যুগ যুগ ধরে এ মাঠে চাষাবাদ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কয়েক বছর আগে থেকেই এ মাঠটি মাটি খেকোদের কুনজর পড়েছে। এখন চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বেশীভাগ কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশা জড়িত হতে বাধ্য হচ্ছেন।

মাটিকাটায় অভিযুক্ত দুলাল পাটোয়ারী জানান, সবাই কাটে-আমরা কাটলে দোষ হয়? আপনারা আসছেন, আপনারা নিউজ করেন-আমরা আমাদের কাজ করি।

লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিলু জানান, আমি অসহায়। আমার কিছু করার নেই মাটিকাটা বন্ধে। আপনারা নিউজ করে দেখেন কিছু করতে পারেন কি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম জানান, সর্বশেষ মাসিকসভায় এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। মাটি কাটা রোধে সরকারি সবধরনের আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

কনক মজুমদার, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)


আরও খবর