ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও রমনা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কেরানীগঞ্জ কারাগারে বন্দি রয়েছে শরিফুজ্জামান মনির ওরফে মনি সিকদার। অথচ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ‘অ্যাকটিভ’ দেখাচ্ছে। শুধু তাই নয়, গতকাল সোমবার বিকাল পৌনে তিনটার দিকে তার ফেসবুক আইডি Shrif Moni থেকে তার নিজের তিনটি ছবি পোস্ট করা হয়।
ছবি তিনটি মধ্যে দুইটিতে কারাবন্দি শরিফুজ্জামান মনির ওরফে মনি সিকদারকে পিরোজপুর সদর উপজেলার পাঁচপাড়া বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসা এবং অন্যটিতে ব্যক্তিগত গাড়ীতে কোথায় যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। মুহুর্তে ওই পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ পোস্ট নিয়ে পিরোজপুর জুড়ে তোলপাড় চলছে।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত আজ সোমবার বিকেল ৫ টার দিকেও ওই ফেসবুক আইডি ‘অ্যাকটিভ’ দেখা যায়। এ সময়ের মধ্যে ওই পোস্টে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ নানা কমেন্ট করেছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই আলহামদুল্লিলাহ, মাশাআল্লাহ লিখেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মনি সিকদার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা এক নারীর সাথে বোনের সম্পর্ক স্থাপন করে প্রতারণার মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই নারীর পারিবারিক ও ব্যক্তিগত ছবিসহ ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়াসহ অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই নারীর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে গত ২১ অক্টোবর মোহাম্মদপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১২৬। গোয়েন্দা পুলিশ ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। এছাড়া গ্রেফতার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে থাকা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের রমনা থানার মামলা নং- ৩৩, তারিখ-২৭/৪/২০২১ এবং পিরোজপুরের নন জিআর মামলা নং-১৯২/২২ পি মামলাটি দুটিতেও তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত ৮ মার্চ পিরোজপুরের নন জিআর মামলায় হাজিরা দেয়ার জন্য তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে পিরোজপুরে নেয়া হয় এবং আজ সোমবার (১৩ মার্চ) পিরোজপুর থেকে ঢাকায় আনা হয়।
কারাবন্দি আসামী মনি সিকদারের নিজ এলাকা পিরোজপুরের পাঁচপাড়া বাজারের একাধিক ব্যবসাযীরা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, গতকাল একটি প্রাইভেট গাড়ি যোগে কয়েকজন পুলিশসহ মনি সিকদার পাঁচপাড়া বাজারে এসে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেড় থেকে দুই ঘন্টা অবস্থান করেছে।
এ বিষয়ে জানতে কেরানীগঞ্জ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।