ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের পশ্চিম চক বাহ্রা এলাকায় খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। স্থানীয়দের অভিযোগ খালের সঠিক জায়গায় খনন না করে বাড়িঘর কেটে খাল খনন করেছে সংশ্লিষ্টরা। জনপ্রতিনিধিদের জানালেও তারা কোনো সহযোগিতা না করে নিরব ভূমিকা পালন করছেন। আর এতে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের চক বাহ্রা এলাকায় ৫০ ফিটের অধিক প্রশস্থ করে প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গায় মাটি কেটে খাল পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে। আর এতে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের বাড়ি ঘর ও ফসলি জমি কাটা পরেছে। ঘর বাড়ি ভেঙ্গে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে হয়েছেন নিঃস্ব। অনেকের পুরো বাড়ি কেটেই তৈরি করা হয়েছে খাল।
স্থানীয়দের কোনো পুনঃ স্থানান্তরের ব্যবস্থা না করেই পেশি শক্তির জোরে কাটা হয়েছে খাল। আবার সেইসব ভুক্তভোগীদের মাটি দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে টাকা। টাকা নেয়ার পর মাটি কিংবা টাকা কিছুই দেয়া হয়নি তাদের। মাটি অন্যত্র বিক্রি করে পকেট ভারী করেছে সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জালাল বলেন, খাল কাটার নামে এরা আমাদেরকেই কেটে ফেলেছে। আমাদের বেঁচে থাকাই কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালের সীমানা রেখে তারা আমাদের বাড়ি ঘরের উপর দিয়ে খাল কেটেছে। বাঁধা দিলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে।
বাবুল নামের একজন জানান, খাল কেটে উপকারের কিছুই হয়নি। আমাদের আরো ক্ষতি হয়েছে। আমাদের নিঃস্ব করে দিয়ে গেছে। ভুক্তভোগী আরো বলেন, দোহার-নবাবগঞ্জের সাংসদ সালমান এফ রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন আমাদের যা ক্ষতি করেছে তার যেনো ক্ষতি পূরণ দেয়া হয়।
ষাটোর্ধ বয়স্ক বৃদ্ধা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি তাদের অনেক অনুরোধ করেছি তবুও তারা আমার বাড়ির অর্ধেকের বেশি কেটে ফেলেছে। সার্ভেয়ার পরিচয় দেয়া মিলন নামে একজন আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছে আমার বাড়িঘর কাটবে না বলে। আমি ঋণ করে এনে টাকা দিয়েছি। তারপরও আমার বাড়ির জায়গা কেটেছে। আমার টাকাও ফেরত দেয়নি। মাটি কাটতে বাঁধা দিলে উল্টো আরো বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে তারা। আমার একটু পানি খাওয়ার মতোও ব্যবস্থা এখন নেই।
স্থানীয় আরো একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, মাটি বিক্রি করে অসাধুরা তাদের পকেট ভারী করার জন্য এই কাজ করেছেন। তা না হলে এভাবে গরিব মানুষদের মেরে কেনো এই কাজ করবে। চেয়ারম্যান, মেম্বাররাও কোনো সহযোগিতা করেনি আমাদের। উল্টো তারা মাটি বিক্রিতে সহযোগিতা করছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
বাহ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাফিল উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড যে খালটি খনন করেছে সেখানে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাছাড়া এটা কৃষি প্রধান অঞ্চল। খাল খননে কৃষকদের পানি সরবরাহ ভালো হবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মতিউর রহমান বলেন, খাল খননের শেষে আমি অভিযোগ পেয়েছি। সেখানে দেখতে সরজমিনে এসিল্যান্ডসহ লোকজন পাঠিয়েছি। তাছাড়া কাজটি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাদের ডিজাইন কিভাবে ছিলো তা আমার জানা নেই।