আজঃ সোমবার ০৬ মে ২০২৪
শিরোনাম

নারায়ণগঞ্জে ১২ কেজি গাঁজাসহ ২ নারী আটক

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুইটি অভিযানে ১২ কেজি গাঁজাসহ ২ নারী মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‍্যাব-১১। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ের চিটাগাংরোড এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন- গাজীপুরের জয়দেবপুরের শিববাড়ী এলাকার মোছা. মদিনা খান (১৯) এবং ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার তারইকান্দি এলাকার হাসি আক্তার খুশী (২৭)।

আজ বুধবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত র‍্যাব-১১র সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আটককৃত হাসি আক্তার খুশী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। 

আটক মাদক ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন যাবত অভিনব কায়দায় গাঁজা সংগ্রহ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করত। 


আরও খবর



সদরঘাটে ৫ জনের মৃত্যু

গ্রেপ্তারকৃতদের সাতদিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর সদরঘাটে পন্টুনে বাঁধা লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে আদালতে তোলা হয়েছে। তাদের সাত দিনের রিমান্ডে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদরঘাট নৌ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।

আজ শুক্রবার গ্রেপ্তারদেরকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে (সিএমএম) তোলা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের চার চালকসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।

এর আগে বিকেল তিনটার দিকে ১১ নং পন্টুনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মা-সন্তানসহ পাঁচজন নিহত হন। তাদের মধ্যে এক দম্পতি ও তাদের চার বছরের একমাত্র সন্তান রয়েছে। নিহতরা হলেন, মো. বেলাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৪) এবং তাদের চার বছর বয়সী মেয়ে মাইশা। নিহত অপর দুজন হলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের তরুণ রবিউল (১৯) এবং পটুয়াখালীর রিপন হাওলাদার (৩৮)।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘাটে বাঁধা টিপু-১৩ ও তাশরিফ-৪ লঞ্চের মাঝ দিয়ে ঢুকতে যায় ফারহান-৬ নামের একটি লঞ্চ। এ সময় ফারহান ধাক্কা দেয় টিপুকে। আর টিপুর ধাক্কায় তাশরিফের রশি ছিঁড়ে যায়। রশির বাড়িতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দুর্ঘটনার পরে গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি ফারহান-৬ লঞ্চ ঢাকার সদরঘাট থেকে ভোলার বেতুয়ায় যাতায়াত করে থাকে।


আরও খবর



আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার মজুরি বাড়িয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছে। এ সময় কারখানা বা প্রতিষ্ঠান মালিকদের বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার আহ্বান জানান। বুধবার (০১ মে) মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে, তিনি যদি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন হন, তাহলেও তাকে আমরা ছাড়ি না, ছাড়বোও না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষের দল। খেটে খাওয়া মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। সরকার চায়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠুক। তাই আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততোবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছে। কারখানা বা প্রতিষ্ঠান মালিকদের বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থ দেখারও আহ্বান জানান।’

তিনি বলেন, আমি এক প্রতিষ্ঠানের মালিককে জিজ্ঞাস করলাম, ৮০০’ টাকা বেতনে একজন শ্রমিক চলে কীভাবে- এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী, আবারও মালিকদের বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার কথা বলেন। মালিকদের মুনাফা বাড়াতে হলে, অবশ্যই শ্রমিকদের দিকে তাকাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায় আমাদের শ্রমজীবী মানুষের মজুরি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। বিলাসিতা একটু কমিয়ে মালিকরা শ্রমিকদের দিকে একটু নজর দেবেন সেটাই আমরা চাই। কিছু ভাড়াটে লোক কথায় কথায় শ্রমিকদের রাস্তায় নামায় আন্দোলন করানোর জন্য। কারখানা ভাঙচুর করায়। কারখানায় আগুন দিলে শ্রমিকদের নিজেদেরই ক্ষতি হচ্ছে, পরিবারের ক্ষতি হচ্ছে, দেশের মালিকদের ক্ষতি হচ্ছে। কোনো অসুবিধা হলে আলোচনা করে সমাধান করার জন্য আমার দুয়ার খোলা। আপনারা যোগাযোগ করবেন। কারও প্ররোচণা বা উসকানিতে নিজের রুটি-রুজি যেখান থেকে আসে, সেখানকার ক্ষতি করবেন না।’

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পণ্যের ক্রয় মূল্য বাড়ালে আমিও মালিকদের বলতে পারি, তারা যেন শ্রমিকদের সুবিধা বাড়ান।

এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের নামে বাসে ট্রাকে-আগুন দিয়ে শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে তারা। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক-মালিককে আমরা সহায়তা দিয়েছি। শ্রমিকদের কল্যাণ দেখা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব বলে মনে করি। মানুষের কল্যাণ করাই আমাদের প্রচেষ্টা।’

শ্রমিকদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে- এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষের দল। আমরা যতটা আইএলও কনভেশন বা প্রটোকল সই করেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ততটা করেনি। আমি যদি এখন জিজ্ঞাস করি, তারা কতটা সই করেছে? তারা জবাব দিতে পারবে না। খুব বেশি হলে দুটা করেছে। আর সেখানে কেউ আন্দোলন করলে, সাথে সাথে চাকরি চলে যায়। আর আমাদের এখানে কেউ আন্দোলন করলে আমরা তার সাথে কথা বলি, আলোচনা করি, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। অথচ আমাদের ওপর খবরদারি করা হয়।’

তিনি আরও বলেন,  সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে। কোনো সমস্যা হলে যা করণীয়, আমরা করবো। সে জন্য কারও দুয়ারে গিয়ে ধরনা দিতে হবে না। দেশ আমাদের। আমরা চাই, শ্রমিকরা নিরাপদে কাজ করবেন। সব ধরনের সুবিধা পাবেন। এখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলবো। আর গরমে সাবধানে থাকবেন, নিজেদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখবেন।


আরও খবর



আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের হোতা গ্রেফতার

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মশিউর রহমান রাহাত, পিরোজপুর

Image

পিরোজপুর থেকে চুরি যাওয়া মোটর সাইকেল উদ্ধারসহ আন্তজেলা পেশাদার মোটরসাইকেল চোর চক্রের অন্যতম হোতা নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংএ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ১৯মার্চ পিরোজপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডর সুন্দরবন কুরিয়ার সংলগ্ন সাংবাদিক জিয়াউল হক এর বাড়ির সামনে থেকে একটি কালো রংয়ের একটি মোটরসাইকেল অজ্ঞাতনামা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। চুরি যাওয়ার পর মোটরসাইকেলটির মালিক মোঃ মাইনুর ইসলাম বাদি হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এর পরেই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করার জন্য পিরোজপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযানে নামে। গোয়েন্দা পুলিশ পিরোজপুর শহরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরপর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকা জেলার সাভার থানা এলাকা থেকে চোরচক্রের সদস্য বাদশা ফরাজিকে গ্রেফতার করে। পরে বাদশা ফরাজির দেয়া তথ্যানুসারে গতকাল ১২ এপ্রিল শুক্রবার নারায়নগঞ্জ, রুপগঞ্জ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা পেশাদার মোটরসাইকেল চোরচক্রের অন্যতম হোতা ও বহু মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মোঃ সেলিম খান (৪৪) কে গ্রেপ্তার করে। সেলিম নারায়ণগঞ্জ এর রুপগঞ্জ এলাকার গাফফার খানের ছেলে। পরবর্তীতে সেলিমকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টাইঙ্গাইল জেলার সদর থানা এলাকার রাবনা বাইপাস এলাকা থেকে চোরাই যাওয়া কালো রংয়ের Apache 4V 160cc মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।

আসামী সেলিমকে গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, মাগুরা, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল সহ বিভিন্ন জেলা থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে থাকে। মোটরসাইকেল চুরি করে চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রয়লব্দ টাকা দিয়ে মাদক ক্রয় বিক্রয় ও পাচার করে থাকে। ইতোমধ্যে তাদের দুই সদস্য আশুলিয়া থানা ও টাইঙ্গাইল সদর থানায় বিপুল পরিমানে মাদক সহ গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছে।

এ ব্যাপারে পিরোজপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোস্তাফিজুর রহমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) বলেন,  আসামীর নিকট থেকে আমরা পুরো চক্রের সদস্যদের তথ্য পেয়েছি। তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের পিরোজপুর ডিবি টিম অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আসামী সেলিম খান এর নামে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানায় একটি চুরির মামলা, সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানায় একটি মাদক মামলা, ঢাকা জেলার ধামরায় থানায় একটি মাদক মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

নিউজ ট্যাগ: পিরোজপুর

আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর



সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ড : যা বলছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। রোববার (৫ মে) বিকেলে এ বিবৃতি দেয় মন্ত্রণালয়টি। এতে বলা হয়, বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ক্যাম্পের বনাঞ্চলের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন গাছের ওপরে বা ডালপালায় বিস্তৃত হয়নি, শুধু মাটির ওপরে বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তৃত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিপিজি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণ অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করছেন। এছাড়া বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও অগ্নিনির্বাপণে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে সহায়তা করেছে।

শনিবার (৪ মে) দুপুর আনুমানিক সাড়ে ৩ টায় আগুন লাগার ঘটনা প্রথম উদঘাটিত হয়। আগুন লাগার ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বন বিভাগের কর্মীরা স্থানীয় কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় আগুন লাগার চারপাশে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেন।

কিন্তু ওই সময় ভাটার কারণে খালে কোনো পানি না থাকায় আগুনে পানি দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে রাতেই বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট ও পানি দেয়ার মেশিন এনে, সেটি রেডি করে পাইপ লাগিয়ে সেট করে রাখা হয়। পরে রোববার ভোর থেকেই বন বিভাগের কর্মী, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনগণ, সিপিজি, সিএমসির লোকদের নিয়ে আগুন লাগার স্থানে চারদিকে ফায়ার লাইন কাটার পাশাপাশি পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ পুরোদমে শুরু করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আগুন লাগার স্থানের চারদিকে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। তবে যেহেতু আগুন মাটির নীচ দিয়ে গাছের শিকড়ের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে, কাজেই সতর্কতার সঙ্গে আগুন নেভাতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী কয়েক দিন এখানে অগ্নি নির্বাপণ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। কেননা ফরেস্ট ফায়ার আপাতত নিভে গেছে বা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মনে হলেও আবার যে কোনো সময় এটি নতুনভাবে সৃষ্টি ও বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয়ে তদন্তের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত আছেন এবং তিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এ কর্মকাণ্ড সরেজমিনে তদারকি করতে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি ও কর্মপন্থা বিষয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় খুলনায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।


আরও খবর