পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার আটঘরিয়া থানা এলাকার আত্মসমর্পণকৃত সর্বহারা নেতা চাঞ্চল্যকর মুসা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ৪টি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধারসহ পূর্ব বাংলা সর্বহারার ৫ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃত ব্যাক্তিরা হলেন, চাটমোহর উপজেলার কদমতলী এলাকার মো.আব্দুল হাই ওরফে সামাদ এর ছেলে মো.সাইফুল ইসলাম ওরফে শুটার সিরাজ (২৫), আটঘরিয়া উপজেলার নগরচাচকিয়া উত্তরপাড়া এলাকার মো.নায়েব আলীর ছেলে মো.একরাম হোসেন (২৫), রাজবাড়ী জেলার চরভরাট এলাকার মো.আজিজুল ওরফে আয়নাল প্রামানিক এর ছেলে মো.জালাল প্রামানিক (২৮), পাবনার আমিনপুর থানার চর দূর্গাপুর মো.কোরবান ব্যাপারীর ছেলে মো.শরিফুল ইসলাম (২৫), পাবনা আতাইকুলা থানার ফারাতপুর নতুনপাড়া এলাকার মো.গফুর প্রামানিক এর ছেলে মো. নাহিদুল ইসলাম ওরফে শাকিল (১৯)।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় পাবনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মাধ্যমে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী জানান, ২৬ অক্টোবর পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানার একদন্ত ইউনিয়নের অলির মোড়ে নজিবুলের চায়ের দোকানের পিছনে ক্যারাম খেলছিল ২০১৯ সালে আত্মসমর্পণকৃত ১৬ নং সিরিয়ালের সর্বহারা নেতা মুসা খাঁ (২৮)। ঘটনার দিন বিকেলে সশস্ত্র সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ও রামদা দিয়ে জবাই করে নৃশংস ভাবে মুসা খাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আটঘরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। হত্যাকান্ডের পর হতে পাবনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীর নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রোকনুজ্জামান সরকার,আটঘরিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. হাসান বাসির, ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. জিন্নাত সরকার (ডিবি), এসআই (নিরস্ত্র) অসিত কুমার বসাক (ডিবি), এসআই (নিরস্ত্র) সাগর কুমার সাহা, হত্যাকান্ডে সরাসরি জরিত আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে পাবনা ডিবি ও আটঘরিয়া থানা পুলিশের একটি দল (১৪ নভেম্বর) রাত ৩টায় আতাইকুলা থানার ফারাদপুর নতুন পাড়ার মো. নাহিদের বাড়িতে (সর্বহারাদের আস্তানা) অভিযান পরিচালনা করে সর্বহারাদের নিকট হতে ৪ টি ফুল লোডেড অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বিপুল পরিমান গোলাবারুদসহ ৫ জন পূর্ব বাংলা সর্বহারা-মাওবাদী বলশেভিক পূর্ণগঠন আন্দোলন (এম বি আর এম) গ্রুপের সক্রিয় সদস্যদের আটক করে।
আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ১টি ৭.৬৫ এমএম বিদেশি পিস্তল, ১টি ৭.৬৫ এমএম বিদেশি পিস্তলের ম্যাগাজিন, বিদেশি পিস্তলের (৭.৬৫ এমএম) এর তাজা কার্তুজ ১ রাউন্ড, ওয়ান শুটার গান ১ টি, বিদেশি এসএমসি (সাব-মেশিন কার্বাইন) ১টি, বিদেশি এসএমসি (সাব-মেশিন কার্বাইন) এর ম্যাগাজিন ২টি। বিদেশি এসএমসি (সাব-মেশিন কার্বাইন) এর তাজা কার্তুজ ৯ এমএম ১৫ রাউন্ড, একটি শর্টগান, বারো বোরের তাজা কার্তুজ ৩২ রাউন্ড, গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যবহৃত ৬ টি মোবাইল ফোন, অস্ত্র ও গুলি বহনের কাজে ব্যবহৃত একটি কালো ব্যাগ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পূর্ব বাংলা সর্বহারা-মাওয়াবাদী বলশেভিক পূর্ণগঠন আন্দোলন (পিবিএসপি-এমবিআরএম) এর সশস্ত্র ও প্রশিক্ষিত সদস্য। তারা রাজবাড়ী ও পাবনার ঢালারচর, সাগরকান্দি, সাদুল্লাপুর, ভাড়ারা, একদন্তের প্রত্যন্ত এলাকায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। ইতোপূর্বে এই গ্রুপের (এম বি আর এম) সদস্যগণের হাতে সাবেক সর্বহারার সদস্য ভাড়ারার আমিরুল, সাদুল্লাপুরের বিল্লাল মিশৌরী, ঢালার চরের আক্কাস নিহত হয় বলে জানা যায়।