মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের কমিটি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আরাকে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে এ কমিটি। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল শনিবার (৫ আগস্ট) পারিবারিক একটি পিকনিকে ট্রলারে নদীভ্রমণে ঘুরতে পদ্মা নদীতে যান মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও লৌহজং উপজেলার ৪৬ জন। সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে রাতে বাড়ি ফেরার পথে রাত ৮টার দিকে লৌহজং উপজেলার তালতলা ডহরি খালের রসকাটি এলাকায় একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারডুবির পর ৩৪ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ফিরে আসতে পারেননি অনেকে।
এতে ঘটনাস্থল থেকে নারী-শিশুসহ আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত উদ্ধার হয়েছেন ৩২ জন আর নিখোঁজ রয়েছেন ৫ জন। নিহতদের মধ্যে তিন নারী, দুই শিশু ও তিন কিশোর রয়েছে। উদ্ধার হওয়া মৃতরা হলেন- মোকসেদা (৪২), পপি (২৬), হ্যাপি (২৮), সাজিবুল (৪), ফারিহান (১০), শাকিব (৮), রাকিব (১২) ও সজীব। তারা সবাই সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনার পর দুই পাড়ের মানুষ ছুটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে পরে এতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের লোকজন। কিন্তু নদীতে প্রবল স্রোত আর রাতে অন্ধকার থাকায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের উদ্ধারকাজ চালাতে বেগ পেতে হয়।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শনিবার রাত দুইটার দিকে উদ্ধারকাজ সাময়িক বন্ধ রাখে ফায়ার সার্ভিস। রোববার সকাল থেকে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজদের উদ্ধারে আবারও অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। যোগ দিয়েছে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল।
লৌহজং থানার এসআই রুস্তম আলী জানান, ওই ট্রলারে প্রায় অর্ধশত যাত্রী ছিলেন। এখনও ছয়জন নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
মুন্সীগঞ্জের ডিসি আবুজাফর রিপন জানান, ট্রলার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো যাত্রীদের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আউয়ালসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা উদ্ধারকাজ তদারকি করছেন।