মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা সকল দল মতের উর্ধ্বে, মুক্তিযোদ্ধারাই এই স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির কারিগর, মুক্তিযোদ্ধারাই হচ্ছে আমাদের লাল সবুজের পতাকার কারিগর, তারাই হচ্ছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের কারিগর। তারাই হচ্ছে অসাম্প্রদায়ী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কারিগর। তারাই হচ্ছে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার কারিগর। তারাই হচ্ছে উন্নয়নের অগ্রযাত্রার অপ্রতিরোদ্ধ গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেয়ে বাংলাদেশকে দরিদ্র দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার কারিগর।
মন্ত্রী আজ শনিবার দুপুরে পিরোজপুরে বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও যুদ্ধাহত বীর মক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সরকারি চাকুরিজীবীদের উচ্চ পদস্থ কোন পদ দিতো না। প্রমোশন তো অনেক দূরের কথা। গ্রেডেশনে তাদের অবস্থানটা নিম্নে রাখা হতো। আর এখন সচিব পদে সম্মানিত না করতে পারলেও গ্রেড-১ দিয়ে সম্মনিত করা হয়। পকিস্তান আমলের দীর্ঘ ২৩ বছরে বাঙালিদের গ্রেড-১ দেয়া হয়নি। কি ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম। লেখাপড়ার মধ্যেও অসামঞ্জস্য থাকত।
মন্ত্রী বলেন, সেখান থেকে লাল সবুজের পতাকাকে উড্ডীন করা, বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সৃষ্টি করা এই কৃতিত্ব আপনাদের। যার নেতৃত্বে করেছিলেন তিনি ইতিহাসের কালজয়ী ক্ষণজন্মা মানুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আরও পড়ুন>> পিরোজপুরে শহীদদের প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
মন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কখনও মৃত্যু হয় না। তিনি সমরেও যদি শহীদ হন তাহলে তিনি শহীদ যোদ্ধা। আমি আজ আপনাদের একথা বলে যেতে চাই। আপনারা আপনাদের সন্তানদের শিখিয়ে যাবেন যে আমি মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছি। এই দেশের আজ তুমি নাগরিক। আমি যদি মারা যেতাম তাহলে তুমি আমার সন্তান হতে পারতে না। তোমার মা যদি ধর্ষিতা হতেন তাহলে তুমি ধর্ষিতার সন্তান হতে। তোমার ঘর বাড়ি যদি জ্বালিয়ে দেয়া হতো তোমার অনেক কষ্ট হতো। কাজেই ছেলে মেয়েদেরকে অন্তত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যে লাইন সমাজ ব্যাবস্থা ও রাজনীতিতে এখান থেকে তোমরা বিচ্যুত হইও না। আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। হয়তো আপনাদের অনেক কিছু দেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এসে আপনাদের বীর নিবাস করে দিয়েছেন। আপনাদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়া, আপনাদের ভাতা বৃদ্ধি করা সহ না না ভাবে সম্মানিত করেছেন। এই সম্মানটা আরও বর্ধিত করবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালমা রহমান হ্যাপি, এনএস আইর যুগ্ম- পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাধবী রায় প্রমূখ।
মন্ত্রী এর আগে নাজিরপুর ও পরে ইন্দুরকানীতে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখে।