সাতক্ষীরা থেকে দিলীপ কুমার দেব :
মুহুর্মুহু ভয়ঙ্কর বজ্রপাতের বিকট শব্দে চরম আতঙ্কে কাঁপলো সাতক্ষীরা। ঘন কালো জমাটবাঁধা মেঘে মুহুর্মুহু একের পর এক বজ্রপাত সাতক্ষীরার আকাশ প্রকম্পিত করে তোলে। জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, বিদ্যুৎ চমকানো ও আলোক রশ্মি আর বিকট শব্দে শিশুরা চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে। ভীতিকর অবস্থায় বাড়ি ঘরের মানুষেরা সাবধানতা ও জীবন রক্ষার জন্য এ ঘর থেকে অন্য ঘরে ছুটা ছুটি করতে থাকে। সামনে পিছনে ডানে বামে সর্বত্র মুহুর্তে অসহনীয় শব্দ। মুহুর্মুহু বজ্রপাতের এমন দৃশ্য যেমন অতীতে দেখেনি সাতক্ষীরাবাসী। রবিবার বিকাল থেকে টানা তিনঘন্টা ধরে চলে বজ্রপাতের ভয়ঙ্কর লীলা। বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সাতক্ষীরা শহর। জ্যৈষ্ঠের আকাশ থেকে দীর্ঘদিন পর অঝরে ঝরেছে বৃষ্টি।
জানাগেছে, রবিবার বিকাল পৌনে ছয়টা হতে ছয়টার মধ্যে হঠাৎ সাতক্ষীরার আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। চারিদিকে সূর্য ডুবু অন্ধকার কিন্তু তখনও সন্ধ্যা হতে প্রায় এক ঘন্টা বাকী রয়েছে। আকাশে মেঘ ডাকাডাকি, তারপর বিদ্যুৎ চমকানো শুরু হয়। অন্তত দশ পনের মিনিট আলো ঝলকানি, ধীরে ধীরে গাঢ় ঘন কালো অন্ধকারের উপস্থিতি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর হতে অসহনীয়, অবর্ণনীয়, বিকট শব্দে প্রতি মুহুর্তে একের পর এক বজ্রপাত হতে থাকে।
সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের বাসিন্দা মোঃ মুজিবুর সরদার (৫৭) বলেন, আমার এই বয়সে আমি কখনো এরকম বাজ পড়া দেখিনি। চোখের পলকের আগেই এত বাজ পড়ায় আমি চরম আতঙ্কে ছিলাম।
শহরের মুক্তিযোদ্ধা সড়কে রাধানগর এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক লিপি রাণী মণ্ডল বলেন, মুহুর্মুহু ভয়ঙ্কর বজ্রপাতের বিকট শব্দে আমার দুই শিশু কন্যা চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে। তিনি বলেন, আমরা খুব ভীতিকর অবস্থায় ঘরের মধ্যে ছিলাম।
এদিকে বজ্রপাতে সাতক্ষীরায় দু’জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের মো: বজলুর রহমানের কন্যা মোছা: রাবেয়া খাতুন (২০) এবং তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামের আশুতোষ মন্ডলের ছেলে মৎস্য চাষী কিশোর মণ্ডল (৩৭)।
জানা গেছেন, রবিবার আছরের আজানের পূর্ব থেকে ব্যাপক বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়। এসময় মোছা: রাবেয়া খাতুন নামাজ পড়ার জন্য ওজু করতে বারান্দার নিচে নামার সাথে সাথে তাঁর উপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনা স্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। অপরদিকে তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের আশুতোষ মন্ডলের ছেলে কিশোর কুমার মন্ডল (৩৭) মৎস্য ঘের থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে হঠাৎ বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।