আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

মঠবাড়িয়ায় জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ জুলাই ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ২৫ জুলাই ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
মনিরুল ইসলাম, মঠবাড়িয়া

Image

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ডের মো: জিয়া খানের বসত বাড়ির জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার দুপুরে মঠবাড়িয়া রিপোর্টার্স ইউনিটির অফিস কার্যালয়ে দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রতিনিধি জিয়া খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ডের ২২ নং জে,এল এর বকসির ঘটিচোরা মৌজার এস.এ ৯১৩ নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক ফয়জর আলীর ওয়ারিশের নিকট হইতে ১৯৮৪ সন হইতে সাব কবলা দলিল মুলে মালিকের নিকট হইতে ক্রয় করে দীর্ঘদিন যাবত শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগ দখল করে আসছি। উক্ত জমিতে আমার জানামতে অন্যান্য অংশীদারি মালিকগন হলেন, আলহাজ্ব আবু হানিফ, সোহরাফ হোসেন, ইয়াহিয়া ও বাদশা মিয়া সবাই শান্তিপূর্ণ ভাবে যার যার জমিতে বসবাস করে আসছে। এখানে মঠবাড়িয়ায় সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার কোন অংশ নাই এবং আছে বলে আমরা জানি না। এ ছাড়া কাগজ পত্রে তার নাম পর্যন্ত নেই। কিন্তু লোকমুখে জানতে পারি আফছের আলীর অংশ থেকে ৫.৫৮ শতাংশ জমির খরিদ মুলে মালিক আছে। উক্ত তথ্য জানার পর সমাধানের জন্য তাহাকে বার বার তাগিদ দেয়া স্বত্তেও প্রমাণ স্বরূপ সে কোন কাগজ পত্র উপস্থাপন করতে পারেনি। সঠিক মিমাংসার জন্য পৌরসভার সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা নির্ধারণের আবেদন করি যার প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার সাহেব উভয় পক্ষকে জমির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যথা সময় উপস্থিত থাকতে বলেন, আমি কাগজ পত্র নিয়ে হাজির হলেও গোলাম মোস্তফা সাহেব কোন কাগজ পত্রের যথার্থ প্রমাণ দেখাতে পারেননি। গত রোজার ঈদের পর আমি নিজের শারীরিক চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাই। চিকিৎসা জনিত কারণে দীর্ঘ সময় ঢাকায় অবস্থান করি। এ সুযোগে আমার দখলীয় জমির সিমানা ভেঙ্গে টিনের বেড়া ও দেয়াল নির্মাণ করেন। আমি স্থানীয় লোকের মাধ্যমে জানতে পেরে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসি এবং আমার জমি জোর পূর্বক দখলের সত্যতা পেয়ে শিক্ষা বিভাগের উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষের নিকট সু বিচারের জন্য আবেদন করি। অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা সাহেব থানা থেকে শুরু করে সকল জায়গায় তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলছেন এবং মাঝে মধ্যে তার কলেজের ছাত্রদের দিয়ে প্রতিপক্ষকে ভয় ভীতি প্রদর্শণ করেন। দুঃখের বিষয় উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষ অদ্যবদি আমার অভিযোগের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমি অত্র সংবাদ সম্মেলনে ইলেট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের জন্য সহকর্মীদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানাই।

এ বিষয় অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি জিয়া খানের জমি অবৈধভাবে দখল করিনি বরং পৌরসভার সার্ভেয়ার ও গণ্যমান্য ব্যাক্তির চুলচেরা বিশ্লেষনের মাধ্যমে সুষ্ঠরুপে বন্ঠন করা হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: মঠবাড়িয়া

আরও খবর



সাফ জয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলকে সংবর্ধনা দিলো ওয়ালটন

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Image

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে যৌথভাবে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৪ এর শিরোপা জিতে বাংলাদেশ।

সাফ জয়ী সেই নারী ফুটবল দলকে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিশেষ সংবর্ধনা দিয়েছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাসহ মোট ৩৩ সদস্যের দলের প্রত্যেককে একটি করে ওয়ালটনের ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি উপহার দেওয়া হয়।

দুপুরে বাফুফে ভবনে খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এফ.এম. ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিলটন ও বাফুফের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। এ সময় বাফুফের অন্যান্য কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।

ঈদের আগে ওয়ালটনের প্রতিশ্রুত ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি উপহার পেয়ে সাফ জয়ী বাংলাদেশ ফুটবল দলের সবাই বেশ খুশি হন। বিশেষ করে কিশোরী ফুটবলাররা। তাদের চোখে-মুখে সেই খুশির ঝিলিক দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গেল ৮ ফেব্রুয়ারি ঘরের মাঠে ভারতের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচের শুরুতেই (৮ মি.) গোল হজম করে পিছিয়ে পড়েছিল সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। এরপর যোগ করা সময়ে (৯০+৩) মোসাম্মত সাগরিকা আক্তারের গোলে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। তাতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

সেখানেও চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রথম পাঁচ শটে দুই দলই বল জালে জড়ায়। এরপর সাডেন ডেথেও চলে সমানে সমান। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ১১ জন খেলোয়াড়ই গোল করেন। অন্যদিকে ভারতেরও ১১ জন টাইব্রেকার ও সাডেন ডেথে গোল করেন। এরপর টস ভাগ্যে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। পরে সেটা বাতিল করে বাইলজ অনুযায়ী ভারত-বাংলাদেশকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

অবশ্য ফাইনালের আগেই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় সাগরিকার বাবা-মাকে টেলিভিশন উপহার দেয় ওয়ালটন। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে ওয়ালটনের কর্মকর্তাগণ জানতে পারেন- সাগরিকার বাবা চায়ের দোকানদার মোহাম্মদ লিটন আলীর ঘরে মেয়ের খেলা দেখার মতো টেলিভিশন নেই। প্রতিবেশীর কাছ থেকে টেলিভিশন ধার করে এনে দেখেন মেয়ের খেলা। যে ম্যাচে সাগরিকা জোড়া গোল করে গর্বিত করেন তার বাবা-মাকে। এরপর সাগরিকার বাবা-মাকে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল থেকে মিরপুরের মাজার রোডস্থ ওয়ালটন কমপ্লেক্সে এনে টেলিভিশন তুলে দেয় ওয়ালটন।


আরও খবর



২২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪১ কোটি ডলার

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে ১৪১ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, মার্চের ২২ দিনে ১৪১ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ১৫ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২০ কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৭ লাখ ১০ হাজার ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মার্চের ১৬ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছে ৩৯ কোটি ৫৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। ৯ থেকে ১৫ মার্চ দেশে এসেছে ৫০ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ১ থেকে ৮ মার্চ এসেছে ৫১ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ডলার।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে এসেছে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ।


আরও খবর



সর্বোচ্চ গতিতে বল করে রেকর্ড গড়লেন প্রোটিয়া পেসার

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়া এবং ভাঙা প্রতিদিনের ঘটনা। কখনও নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ড, কখনও সেটি অন্যদের ছাড়িয়ে যাওয়ার। তেমনই এক রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার শবনিম ইসমাইল।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ভারতের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নারী আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতির বল করেন শবনিম। তার বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩২.১ কিলোমিটার (৮২.০৮ মাইল প্রতি ঘণ্টায়), যা নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলিং ডেলিভারি। এর আগে নারীদের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ গতির বল ছিল ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। এবার সেটি টপকে নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রোটিয়া পেসার।

তার রেকর্ডগড়া বলে ব্যাট করেন দিল্লির অধিনায়ক মেগ ল্যানিং। যদিও বল ব্যাট লাগাতে পারেননি অজি তারকা। সরাসরি ল্যানিংয়ের প্যাডে আঘাত করে। এর আগে নারীদের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ গতির বল ছিল ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। এবার সেটি টপকে নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রোটিয়া এই নারী পেসার।

এ দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সর্বোচ্চ গতির বলের রেকর্ড রয়েছে শবনিম ইসমাইলের দখলেই। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২৮ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে বাংলাদেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ ১২২ কিমি গতিতে বল করার রেকর্ড পেসার জাহানারা আলম।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




বেইলি রোডে আগুন: ভিকারুননিসার শিক্ষিকা ও তার মেয়ে নিহত

প্রকাশিত:শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকা লুৎফুর নাহার করিম (৪৭) ও তার মেয়ে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতি তাজরিন (২৩) নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী ও মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন এম. এ. এইচ গোলাম মহিউদ্দিন।

বিলাপ করতে করতে তিনি জানান, তার স্ত্রী দাঁতের ব্যথায় ভুগছিলেন। দাঁত দেখাতে হাসপাতালে যান মেয়েকে নিয়ে। ফেরার পথে কাচ্চি খেয়ে আসার পরামর্শ দেন মহিউদ্দিনই। এখন স্ত্রী-মেয়ের মৃত্যুর জন্য তিনি নিজেকে অপরাধী মনে করছেন।

কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এএসআই) গোলাম হোসেন বলেন, নিহতদের স্বজনেরা যাদের শনাক্ত করেছেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


আরও খবর



এস আলমের পোড়া চিনি-কেমিক্যালে কর্ণফুলীতে মরছে মাছ

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষেই এস আলম গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানা। দুদিন আগে সেখানে গুদামে আগুন লাগার পর অপরিশোধিত চিনির পোড়া-গলিত বর্জ্য কারখানার ড্রেন দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে নদীর পানিতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশে ভেসে উঠছে নদীর মাছ।

মঙ্গলবার থেকে নদীতে মারা যাচ্ছে মাছ, কাঁকড়াসহ নানা জলজ প্রাণী। স্থানীয় লোকজন নদীতে নেমে মাছ ধরছে। বুধবার সকাল থেকে নদীতে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সেই মরা মাছ ধরার জন্য অনেকে জাল নিয়ে গেছেন কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সেতুর নিচে ব্রিজঘাট এলাকায়।

এস আলম সুগার রিফাইনারির অবস্থান নদীর দক্ষিণপাড় থেকে ৭০০ মিটার দূরত্বে। সেতু পার হয়ে মইজ্জারটেক এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে কারখানাটি। এস আলমের নিজস্ব জেটি আছে। সাগরে বড় জাহাজে পণ্য আনার পর ছোট জাহাজে করে প্রথমে সেই ঘাটে ভেড়ানো হয়। সেই ঘাট থেকে মাটির নিচে স্থাপিত পাইপলাইনে ভোজ্যতেল এবং ট্রাকে করে অপরিশোধিত চিনি কারখানার ভেতরে নেওয়া হয়।

সোমবার বিকালে আগুন লাগে কারখানার চিনির গুদামে ১ লাখ টন চিনি পুড়ে গেছে বলে এস আলম কর্তৃপক্ষ জানায়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি ছিটাচ্ছিল। পরে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমানবাহিনীও। বুধবার সকালেও আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি।

কর্ণফুলী হচ্ছে জোয়ার-ভাটার নদী। ফলে পোড়া চিনি নালা দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়লে একটি স্থানে সীমাবদ্ধ থাকছে না। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে পুরো নদীর অন্তত দুই কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়েছে চিনি।

মঙ্গলবারও এস আলম গ্রুপ দাবি করেছিল যে, নদীতে মিশলেও আমরা এখন বিশেষজ্ঞ সাথে বসে একটা প্ল্যান করবো। কর্ণফুলীতে আগেও মাছ কি মরতো না। তবে এখন অপরিশোধিত চিনি গিয়ে পোড়া চিনি নদীতে ছড়ালেও মাছ মরার সম্ভাবনা কম।

কর্ণফুলী নদীতে ছোট জাহাজের শ্রমিক মো: বেলাল বুধবার জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন কর্ণফুলী নদীতে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই দেখেছি নদীর পানি কিছুটা কালো রঙ ধারণ করেছে। জোয়ার থাকা পানি একস্থানে স্থির ছিল না। সকাল থেকেই দেখি জাহাজের পাশেই চিংড়ি, মইল্লা মাছ ভেসে উঠেছে। পরে জাহাজের পাশে থাকা ছোট ডিঙ্গিতে নেমে জাল নিয়েই মাছ ধরেছি। বেশ কিছু মাছ ধরা পড়েছে জালে।

নদী পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, সবচেয়ে বেশি মাছ ধরা পড়েছে শিকলবাহা খালের পাশে। কারণ পোড়া চিনি সরাসরি সেখানেই নদীতে পড়েছে।

সকাল মাছ ধরা পড়ার খবর পেয়ে এলাকার সবাই নদীতে যায়। কেউ আবার জাল নিয়ে গেছে। কিন্তু বেশিরভাগ মাছ ধরা পড়েছে ।

নদীতে মাছের মরার খবর দেখেছেন বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ। তিনি বলেন, নদীর পাশেই কারখানা গড়ার আগে দূষণ ঠেকানোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল।

কর্ণফুলী নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া কেমিক্যাল মিশ্রিত অপরিশোধিত চিনির বিষাক্ত পানি সোজা কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। এরপর নদীতে কেমিক্যাল মিশে পানি দূষিত হচ্ছে। এতে নদীর মাছ মারা যাচ্ছে। নদী থেকে স্থানীয়রা হাত দিয়ে টেংরা, পোয়া ও চিংড়িসহ ভেসে ওঠা নানা ধরনের মাছ ধরছেন। এছাড়া স্থানীয়রা হাত জাল ফেলেও মাছ ধরছেন। প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এভাবে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকার সুগার মিলে পুড়ে যাওয়া চিনি ও কেমিক্যাল নদীতে গিয়ে পড়ায় মাছ মারা যাচ্ছে। অপরিশোধিত চিনি আগুনে পুড়ে গিয়ে বর্জ্য হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে পড়েছে। নালার মাধ্যমে সরাসরি নদীতে পড়ায় পরিবেশগত প্রভাব পড়বে। পানির মাত্রা মান কমে গিয়ে ইকোলজিক্যাল অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়েছে। আর পানিতে অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় মাছগুলো মারা পড়ছে। চিনির দাহ্য পদার্থ যখন ৩৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে তখন বিষাক্ত কেমিক্যালে রূপ নেয়। আর সেখানে পানি ছাড়া হলে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কার্বন তৈরি হয়। যার কারণে কারখানায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। সেই আগুনে অপরিশোধিত চিনি গলে সেই লাভা নদীতে এসে পড়েছে। এতেই পানি দূষিত হয়ে মাছ মরছে। চিনির কেমিক্যালে নদী দূষণ তো হয়েছে। এছাড়া নদী দূষণের অন্যতম কারণ হলো ১৭টি খালের বর্জ্য।

স্থানীয় ইছানগর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগুনে পোড়া চিনিতে কারখানার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানি চিনির সঙ্গে মিশে নদীতে পড়েছে।

এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো: হোসেন বলেন, আগুনে পোড়া চিনি কর্ণফুলীতে কিছুটা গেছে। এসব নিজস্ব জমিতে ডাম্পিং করা হচ্ছে। নদীতে গেলেও জীব-বৈচিত্র্যের কোনও ক্ষতি হবে না। এখানে কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক নেই।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, সুগার মিলের পোড়া চিনি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে এমন তথ্য পেয়ে মঙ্গলবার আমাদের ল্যাব থেকে লোকজন গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ল্যাবের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে মাছসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য মারা যাচ্ছে বা দুর্বল হয়ে পড়ছে। অবশ্যই এটি নদীর জন্য ক্ষতির কারণ।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম ডি আবদুল মালেক বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে সুগার মিলের আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে অগ্নিনির্বাপক রোবট লুফ-৬০। এ রোবট দিয়ে মিনিটে এক হাজার লিটার স্পিডে পানি ছিটানো হচ্ছে। চিনির কাঁচামালে দাহ্য পদার্থ থাকায় গুদামের ভেতরের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো ৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে কর্ণফুলীর ইছাপুর এলাকার একটি মিলে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমদিকে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১৫টি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে আগুন নেভাতে যোগ দেয় বিমান, নৌ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহনীর সদস্যরা।

নিউজ ট্যাগ: কর্ণফুলী নদী

আরও খবর