ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক নদীর
পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এবং ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে আকস্মিক বন্যা
সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রাবি) শহরের বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা রাবির
মেইনগেইটে, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি চালান।
এসময় সেখানে 'তুমি কে আমি কে, আবরার আবরার'
'ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও', 'ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান', 'আমার
দেশ ডুবলো কেন, সরকারের কাছে জবাব চাই', 'পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়তে হবে ভারত ভক্তি',
'দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা' স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয়
সমন্বয়ক মেশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে
ভারতের যে আন্তর্জাতিক নদীগুলো আছে তার পানিগুলোর ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। ইতোপূর্বে
ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে ভারতের যে অন্যান্য ও গোপন চুক্তিগুলো হয়েছিল তা দ্রুত বাতিল
করতে হবে এবং বাংলাদেশের সাথে আলোচনা না করে কোনো বাঁধ খুলে দেওয়া যাবে না।’
আরবি বিভাগের শিক্ষক ড. ইফতিখারুল আলম
মাসুদ বলেন, ‘ভারতের সাথে প্রতিবেশি কোনো রাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক
নেই। উগ্র, ফ্যাসিস্ট, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সেখানে শাসন করছে। তারা যেভাবে আমাদেরকে
শোষণ করেছে তার অন্যতম একটি হলো নদীর পানি শোষণ।’
তিনি আরো বলেন, 'আজকে এখানে তরুণ প্রজন্ম
দেশ প্রেমের চেতনায় জেগে উঠেছে। কতটা দূরদর্শী ছিল আবরার ফাহাদ। এই ভারত নিয়ে ফেসবুকে
পোস্ট করায় তাকে ফ্যাসিস্টদের দোসররা মেরে ফেলে। সন্ত্রাসীরা দেশের প্রতিটা জায়গাসহ
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে ক্যান্টনমেন্ট বানিয়ে ফেলেছিল। তারা শিক্ষার্থীদেরকে দেশ
প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে দেয়নি। রাজনৈতিকভাবে ভারত বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে
তারা এখন পানি নিয়ে খেলা শুরু করেছে।'
প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার
একটা অত্যন্ত দূর্বল পররাষ্ট্রনীতি এবং একই সাথে এই রাষ্ট্রকে ভারতের অলিখিত কলোনিতে
পরিণত করেছিল। এই কাজটি তারা করেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত
চেতনার সাথে কোন আধিপত্যবাদ চলে না। কোন জাতি কখনো আধিপত্যকে মেনে নেয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ
করেনি।’
এসময় বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় হাজারাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
অংশ নেন।