ভোলার মনপুরা উপজেলায় সরকারি বিধি মোতাবেক প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকার দরপত্রে ২০১৯ সালের দিকে ১৮ মাসের চুক্তিতে ৪ তলা ভবন নির্মাণের কাজ নিয়েছেন চরফ্যাশন পৌরসভার মেয়র এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস মোর্শেদ এন্টার প্রাইজ (চরফ্যাশন) ভোলা। কাজটি ভোলা মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের “মনপুরা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের"।কিন্তু ৪ বছর পেড়িয়ে গেলেও ভবনটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ রয়েছে, কাজ শুরু থেকে নিম্ন মানের রড, সিমেন্ট, ইট, পাথর, বালি দিয়ে ভবনটি তৈরী করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর বার বার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে সতর্ক করার পরেও কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নিজেদের ইচ্ছেমত কাজ করছেন তারা। ভবনটি নির্মাণ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর মনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা মনে করছেন এই ভবনটি নির্মাণে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। এর ফলে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থাকবে স্কুলের শতশত শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেলে কথা হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ফিরোজ এর সাথে। তিনি বলেন, আমি কিছুই করতে পারিনি। তিনবার চিঠি দিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে কোন অগ্রগতি পাইনি।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্র বলছে, ঠিাকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সম্পূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে নিজেদের আখের গুছানোর কাজ করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়রা বলছেন, সরকারের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কতিপয় অসাধু লোকজনই এই অনিয়মের সাথে জড়িত। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক চরফ্যাশন পৌরসভার বর্তমান মেয়র, তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কোন ধরনের টু-শব্দ করার সাহস পাইনা।
এই বিষয় অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোর্শেদ এন্টার প্রাইজের মালিক, চরফ্যাশন উপজেলা পৌরসভার মেয়র মোঃ মোর্শেদকে মুঠোফোন প্রশ্ন করলে। তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। মনপুরায় আমার লাইসেন্সে কাজ চলে আমি নিজেই জানিনা। শুনেছি মনপুরা উপজেলার যুবলীগ সেক্রেটারী মনির কাজ করছে। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর এই ঘটনা আমাকে জানালে আমি তাদের বিল পেমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছি। আমার লাইসেন্সে কাজের কোন অনিয়ম হলে তা আমি সহ্য করবোনা। বিষয়টি আমি দেখছি।
মনপুরা উপজেলার শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলছেন, তারা যে ধরনের কাজ করছে সেটা মেনে নেয়া যায়না। তারা নিন্ম মানের সামগ্রী নিয়ে কাজ করার কারণে আমাদের অফিস বারবার তাদের সতর্ক করেছে, ঢালাইয়ের লিংক্ষেপ না নিয়ে পঁচা নিন্ম মানের ইট দিয়ে টাক্সার তৈরী করছে। আমি তাদেরকে এটা নিয়ে সতর্ক করে সাইট ওয়ার্ডার বুকে লিখে দিয়ে আসেছি। গত ৭ দিন আগেও তাদের বলা হয়েছে আগামী ৬ মাসের মধ্যে কাজ সিডিউল মোতাবেক শেষ করতে হবে।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. নুরনবী বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি, ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি। কাজে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবেনা। যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তার দ্রুত ব্যাবস্থা নিচ্ছি।