ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপুর আসনে উপনির্বাচনে
ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামীকাল রবিবার ভোট গণনার পর ফল প্রকাশ করা হবে। এ আসনে লড়ছেন
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এ নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে—তার মুখ্যমন্ত্রিত্ব
ধরে রাখার লড়াই হিসেবে। যে কারণে ফল প্রকাশের আগে কে জিতবেন তা নিয়ে নানা মহল থেকে
নানা মত আসতে শুরু করেছে। কিন্তু বিজেপির এক নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এ নির্বাচনে
তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি কমপক্ষে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন। তার এই বক্তব্যে
অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। জয়ের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন রাজ্যের সাবেক বিজেপি
সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা অনলাইনের এক খবরে বলা
হয়েছে, বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে ভোট গ্রহণের পর বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের
দলের সমালোচনা করে বলেন, ভবানীপুরে মমতা ব্যানার্জির জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। তিনি কমপক্ষে
৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতবেন। তার মতে, বিধান সভার পর ভবানীপুর উপনির্বাচনের ভোটেও
একই ভুল করেছে বিজেপি। মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে অবাঙালি প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে প্রার্থী
করা বিজেপির বড় ভুল হয়েছে।
তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বিজেপির
সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, যারা নির্বাচনে কাজ না করে ঘরে বসে এসব কথা
বলেন, তাদের কথার কোনো গুরুত্ব নেই। জয়-বিজয়ের কথায় বিজেপি চলে না। প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে
প্রার্থী করা হয়েছিল বলে ভবানীপুরে বড় লড়াই হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করেছেন দিলীপ
ঘোষ। তিনি বলেন, ভবানীপুরে মমতা ব্যানার্জিকে জেতানোর জন্য উপনির্বাচন করা হয়েছে। শুধু
ভবানীপুরে উপনির্বাচন ঘোষণা, তারপর বিজেপি নেতাদের প্রচারণা চালাতে না দেওয়া, নির্বাচন
কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা সেটাই প্রমাণ করে। তার অভিযোগ, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে হামলা
হয়েছে কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আবার ভুয়া ভোটার ধরা পড়েছে, তাকে ছেড়ে
দেওয়া হয়েছে। এই হলো অবস্থা!
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি
অধীর চৌধুরী বলেছেন, মমতা ব্যানার্জি আগেও জিতেছেন ভবানীপুর থেকে, এবারও জিতবেন। কিন্তু
আরো বেশিসংখ্যক মানুষ যদি ভোট দিতেন, তাহলে বার্তা যেত যে, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে
ভোট দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জয়ী করেছেন। কিন্তু তা হয়নি। ৫০ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট
পড়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার কোনো রায় দেননি।
যদিও আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা
হয়েছে, গত এক দশকে ভবানীপুরের ‘উপনির্বাচনের চিত্র’ বদলেছে অনেকটাই।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি কর্মকর্তার দপ্তর জানিয়েছে, এবার ভবানীপুরে ভোটদানের হার ৫৭
দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১১ সালে ভবানীপুরে উপনির্বাচনের ভোট পড়েছিল ৪৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ।