মিয়ানমারের
দুটি ব্যাংকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের থাকা দুটি অ্যাকাউন্ট
বন্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ওই দুটি ব্যাংক বর্তমানে মার্কিন সরকারের
নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। ব্যাংক দুটি হলো—মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংক ও মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল
ব্যাংক। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয় সোনালী
ব্যাংকের মাধ্যমে।
মিয়ানমারের
ওই ব্যাংক দুটিতে সোনালী ব্যাংকের ‘নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট’ রয়েছে এবং সেখানে বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও জমা রয়েছে।
জানা গেছে,
মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংকে সোনালী ব্যাংকের ১৭ হাজার ডলার জমা আছে। আর মিয়ানমার
ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকে আছে ২ লাখ ডলার।
অপরদিকে মিয়ানমার
ফরেন ট্রেড ব্যাংকের ১ লাখ ডলার এবং মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকের
১ মিলিয়ন ডলার জমা রয়েছে সোনালী ব্যাংকে।
সোনালী ব্যাংকের
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টাকাগুলো জব্দ অবস্থায় আছে। তা তুলতে বা স্থানান্তর করতে পারছে
না সোনালী ব্যাংক। গত জুন মাসে মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত এই দুই ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা
আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে
ওই ব্যাংক দুটিতে সোনালী ব্যাংকের হিসাব বন্ধের আবেদন জানায়। ৩ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সোনালী ব্যাংকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ
দেয়।
এ প্রসঙ্গে
সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বুধবার (১৬ আগস্ট) বলেন, ‘হিসাবগুলোতে আপাতত কোনও লেনদেন হচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে ওই দুই ব্যাংকের
টাকা অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের কথা ভাবা হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও
কোনও সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানায়নি।
অবশ্য মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের
পরিসর তেমন বড় নয়। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ কাঠ, হিমায়িত মাছ, আদা, পেঁয়াজ, সুপারি,
উলের ঝাড়ু, নারকেল, আচার, শুঁটকি, বেত, তেঁতুলের বিচি, ডাল, ছোলা ইত্যাদি আমদানি করে
থাকে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রফতানি হচ্ছে আলু, গেঞ্জি, বিস্কুট ও প্লাস্টিক
পণ্য।
রফতানি উন্নয়ন
ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ৩.৯ মিলিয়ন
ডলার মূল্যের বিভিন্ন পণ্য রফতানি হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী,
২০২০-২১ অর্থবছরে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা প্রায় ১৩ কোটি ডলার মূল্যের
পণ্য আমদানি করেছেন।