নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা পল্লী
বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের লাইনম্যান ও কর্মকর্তারা কর্তৃক গ্রাহক হয়রানি এবং ঝিকিরা গ্রামের
প্রতিবন্ধী খাইরুজ্জামানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
হয়েছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারের আয়োজনে
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার ঝিকিরা বাজার এলাকায় এ মানববন্ধন
অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন-বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন
পরিষদের সাবেক মেম্বার সেকেন্দার আলী, ব্যবসায়ী তহিদুর রহমান, ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান,
প্রতিবন্ধী খায়রুজ্জামান, জাহানারা বেগম, আলেয়া বেগমসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২
এর অধীন লক্ষীপাশা জোনাল অফিসের লাইনম্যান ও কর্মকর্তারা কোনো কারণ ছাড়াই গ্রাহকদের
সীমাহীন হয়রানি করছেন। নতুন মিটার সংযোগ দিতে গেলে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি
করেন তারা। মিটার ও লাইনে কোনো সমস্যা হলে ৫০০ টাকা না দিলে সেই সমস্যার সমাধান করা
হয় না। অফিসে বসে ইচ্ছেমত মাসের বিল করেন। অতিরিক্ত বিল লেখেন। এছাড়া গ্রাহকরা লাইনম্যান
ও কর্মকর্তাদের কাছে কোনো সমস্যার কথা বলতে গেলে উল্টোপাল্টা কথা বলেন। হঠাৎ করে গ্রাহকদের
ওপর ক্ষেপে যান।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ আগস্ট দুপুরে ঝিকিরা
গ্রামের ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী খাইরুজ্জামানের বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন ঠিক করতে এসে ৫০০
টাকা দাবি করেন দু’জন লাইনম্যান। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে
খাইরুজ্জামানের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওই লাইনম্যানরা। বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়ে
লক্ষীপাশা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) এটিএম তারিকুল ইসলামসহ আরো
লোকজন জড়ো করেন তারা। এক পর্যায়ে বিদ্যুত অফিসের লোকজন খাইরুজ্জামানের বিদ্যুতের মিটার
খুলে নিয়ে যায়। এছাড়া তাকে মিথ্যা মামলার ফাঁসানোর হুমকি দেয়। এছাড়া তার বড় ভাই রবিউল
ইসলামের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার পর ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় আবার সংযোগ দেয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী খাইরুজ্জামান বলেন, ৫০০ টাকা
পরিশোধ না করায় আমার বাড়ির বিদ্যুৎ লাইনের সমস্যার সমাধান না করে উল্টো মিটার খুলে
নিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনের ‘লুস সংযোগ’ ঠিক করতে বলাই
আমার কাছে ৫০০ টাকা দাবি করা হয়। গত দু’দিন ধরে বাড়িতে বিদ্যুত না থাকায় আমার
১০৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ বাবাসহ পরিবারের লোকজন অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। ফ্রিজের মালামাল
নষ্ট হয়ে গেছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুত লক্ষীপাশা
জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) এটিএম তারিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাহক
খাইরুজ্জামান বিদ্যুত অফিসের লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। লাইনম্যানদের গায়ে
হাত তুলেছেন। আর লাইনম্যানরা টাকা চাইলে অফিসে অভিযোগ করতে পারতেন। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার
করতে হবে কেন?
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল
ম্যানেজার (জিএম) আব্দুল লতিফ বলেন, গ্রাহকের সমস্যা হলে টাকা দাবি করার কোনো সুযোগ
নেই। গ্রাহক খাইরুজ্জামানসহ ভুক্তভোগীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।