আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

মিরপুরে ‘আলপিন-আলামিন’ গ্রুপের নেতাসহ গ্রেফতার ১৪

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ নভেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ০৭ নভেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

যানবাহনে ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগে রাজধানী থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এরা আলপিনআলামিন নামে দুটি ছিনতাইকারী গ্রুপের সদস্য।গ্রেফতারদের মধ্যে আরফিন ওরফে আলপিন (৩১) হলেন আলপিন গ্রুপের নেতা। তার নেতৃত্বে রয়েছেন ১০-১৫ জন। আর আলামিন গ্রুপের নেতার নামও আল আমিন। তার দলে ৬-৭ জন রয়েছেন।

গ্রেফতার বাকি সদস্যরা হলেন মোহাম্মদ রাশেদ (৩০), মো. তানভির হোসেন (২২), মো. রাকিব (২০), মো. শামীম হোসেন (২০), শরীফ হোসেন ওরফে সজীব (২০), সজীব হোসেন সামি (১৮), রমজান আলী (২০), মো. খাইরুল ইসলাম (১৮), মো. আমিরে ফয়সাল (১৮), মো. আল আমিন মৃধা (২২), মো. শরিফুল মৃধা (২০), মো. সজিব হোসেন (২১) এবং মো. জিসান মিয়া (২০)।

মিরপুরের দারুস সালাম ও শাহ আলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে তিনটি চাকু, দুটি ছুরি, দুটি এসএস পাইপ, ১৫টি মোবাইল, ১৫টি সিমকার্ড এবং নগদ ৩৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। সোমবার (৭ নভেম্বর) র‍্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মাজহারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকাসহ ও এর আশপাশ এলাকার বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে ছিনতাই এবং ডাকাতির ঘটনার অভিযোগে র‍্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দল ছায়াতদন্ত করে। এতে কিছু তথ্য বের হয়ে আসে। যাতে দেখা যায়, এসব এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র অবস্থান নেয়। এরপর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল, ল্যাপটপ ও সঙ্গে থাকা দামি মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

মূলত এই চক্র দুটির সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করেন। তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন বিভিন্ন বাস-ট্রাক ও কাউন্টার-সড়কে। রাতের অন্ধকারে সাধারণ পথচারী এবং যানবাহনে ছুরি, চাকু ও এসএস পাইপ দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই-ডাকাতি করে আসছিলেন।

মূলত রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী, দারুস সালাম এবং এর আশপাশে তাদের কর্মকাণ্ড ছিল বলে জানান এএসপি মাজহারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা রাতের অন্ধকারে পথচারী ও যানবাহনে মানুষকে ছুরি-চাকু দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিতেন। কখনো কখনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে মানুষকে আঘাতও করতেন তারা। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‍্যাব।


আরও খবর



সম্মান নিয়ে রহস্যের বার্তা দিলেন পরীমণি

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

জীবনের সকল বাধা পেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলেন পরীমণি। শুরু করেন সিনেমার কাজ। ঢালিউডের এই চিত্রনায়িকা ফেসবুকে বেশ সরব। তিনি ব্যক্তিগত কিংবা পেশাগত কাজ সব কিছুরই কিছুটা আভাস দেন সামাজিক মাধ্যমে।

এর আগে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে অজস্র লাল-হলুদ ফুলের মাঝে হাসিখুশি লুকে ছেলেকে নিয়ে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করেন পরী। তারই একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন এই নায়িকা।

ভিডিও প্রকাশ করে তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, আই লাভ ইউ মাই ভ্যালেন্টাইন। আমার একটা তুমি আছ, আমার নাড়ি ছেড়া ধন।

এমনকি শবে বরাতের আগের দিন কারও একজনের নিন্দনীয় কর্মকাণ্ডে ক্ষেপে যান নায়িকা। তার পর হঠাৎই ফেসবুকে রহস্যময় একটি স্ট্যাটাস দেন পরী।

তবে ২ মার্চ (শনিবার) পরী আবার হাজির হলেন রহস্যের আর একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে। তিনি লিখেছেন, যেখানে সম্মান নাই সেখানে যেতে নাই। এটাই আসল কথা। তাদের বোধোদয় হোক।

দীর্ঘ বিরতির পর গত বছর ডোডোর গল্প সিনেমার মাধ্যমে পরী ক্যামেরা সামনে দাঁড়ান। সেসময় পরীমণি বলেন, অনেকদিন কাজের বাইরে ছিলাম। নিজের প্রিয় জায়গায় ফেরার জন্য অনেক দিন মুখিয়ে ছিলাম। ভীষণ ভালো লাগছে আবারও লাইট ক্যামেরার দুনিয়ায় আসতে পেরে।

সিনেমা প্রসঙ্গে পরী জানান, দেশের শীর্ষ অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি-সিরিজ প্রযোজিত ডোডোর গল্প হতে যাচ্ছে অন্যরকম একটি গল্পের সিনেমা।

এ সিনেমায় পরীর সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত ডোডোর গল্পর কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও পরিচালনায় আছেন কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা রেজা ঘটক।

নিউজ ট্যাগ: পরীমণি

আরও খবর



ডলার কারসাজি: ২১ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিদেশি মুদ্রা অবৈধ ক্রয়-বিক্রয় ও অর্থ পাচারের অভিযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত চারটি ব্যাংক ও দুটি মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের ২১ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৭ মার্চ) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ কমিশনের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রন্সিপাল অফিসার ও বুথ ইনচার্জ আনোয়ার পারভেজ, প্রিন্সিপাল অফিসার শামীম আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান, সিনিয়র অফিসার মো. সুরুজ জামাল, অমিত চন্দ্র দে, মো. মানিক মিয়া, সাদিক ইকবাল, মো. সুজন আলী ও মো. হুমায়ুন কবির।

অন্যদিকে সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. শরীফুল ইসলাম ভূইয়া (ক্যাশ), মো. কামরুল ইসলাম (ক্যাশ), একই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. সোহরাব উদ্দিন খান, খান আশিকুর রহমান, এবিএম সাজ্জাদ হায়দার (ক্যাশ), সামিউল ইসলাম খান, অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাককে আসামি করা হয়। এ ছাড়া বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অফিসার মো. আবু তারেক প্রধান, ব্যাংকটির সাপোর্টিং স্টাফ মো. মোশাররফ হোসেন, এভিয়া মানি এক্সচেঞ্জারের কাস্টমাস সার্ভিস ম্যানেজার মো. আসাদুল হোসেন ও ইম্পিরিয়াল মানিএক্সচেঞ্জের পরিচালক কে এম কবির আহমেদকে আসামি করা হয়।

দুদক সচিব বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় ও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা অবৈধভাবে বিদেশ হতে আসা প্রবাসীদের থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের মুদ্রা সরবরাহ করেন।’


আরও খবর



এবার গাজা ইস্যুতে সামরিক ইউনিফর্মে আগুন দিলেন মার্কিন সাবেক সেনারা

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

গাজা ইস্যুতে গায়ে আগুন দেওয়া মার্কিন বিমান বাহিনীর আত্মহননকারী সদস্য অ্যারন বুশনেলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেদের সামরিক পোশাকে আগুন দিয়েছেন আমেরিকার কিছু সাবেক সেনা সদস্য।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যে বর্বর আগ্রাসন, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে বুশনেল গত রবিবার ওয়াশিংটন ডিসির ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার এই পদক্ষেপের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মার্কিন সাবেক সেনারা নিজেদের পোশাকে আগুন দেন। এর মধ্যদিয়ে মূলত তারা ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রতিবাদ জানালেন।

শুক্রবার (০১ মার্চ) সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়- কয়েক ব্যক্তি একটি ট্র্যাশ ক্যানের ভেতরে পেট্রোল ঢেলে তার মধ্যে নিজেদের সামরিক পোশাক ফেলে আগুন ধরিয়ে পোড়াচ্ছেন। সেখানে অবস্থান করা লোকজনকে ফিলিস্তিন মুক্ত করার পক্ষে স্লোগান দিতে শোনা যায়। ট্র্যাশ ক্যানের ভেতরে বেশ কয়েক ব্যক্তি নিজেদের সামরিক পোশাক ফেলে পুড়িয়ে দেন। যেখানে সামরিক পোশাকে আগুন দেওয়া হয় সেখানে ফিলিস্তিন মুক্ত করার পক্ষে স্লোগান সম্বলিত ব্যানার দেখতে পাওয়া যায়।

অ্যারন বুশনেল আত্মহত্যা করার আগে ফিলিস্তিন মুক্ত করার পক্ষে স্লোগান দিয়েছিলেন। সেসময় তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, আমাদের শাসক শ্রেণি ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়।’


আরও খবর



রেস্তোরাঁয় অভিযানকে বাড়াবাড়ি বলছে মালিক সমিতি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বিশেষ করে অনুমতি না নিয়ে যেসব ভবনে ব্যাঙের ছাতার মতো রেস্তোরাঁ করা হয়েছে সেখানে অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা। একে বাড়াবাড়ি বলছে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা কর্মে নিয়োজিত বাহিনী সমূহ যেমন- আনসার, পুলিশ ও এলিট ফোর্স র‍্যাব তাদের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। এটা হয়তো একটু বাড়াবাড়ি। কেননা নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সরকার একটি কর্তৃপক্ষই গঠন করেছেন। তাদের কাজটি করতে দিতে হবে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজধানীর বিজয়নগরে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ইমরান হাসান বলেন, বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডের দায় কেউ এড়াতে পারে না। পুরো ভবনটাই ছিল অনিয়মে ভরা, ভবনটির অনুমোদন দিয়েছে রাজউক। রেস্তোরাঁ সেক্টরটি তদারকি করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদফতর, সিটি করপোরেশন, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর। এছাড়া সংযুক্ত আছেন জেলা প্রশাসক-প্রশাসনসহ অনেক অধিদফতর ও সংস্থা।

তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ৪৬ জনের প্রাণহানির পর রাজউক ও সিভিল ডিফেন্সের টনক নড়েছে। ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডার জব্দ করছে এবং স্টাফদের আটক করছে। এটি সমস্যার সমাধান নয়।

তিনি আরও বলেন, তিতাস গ্যাসের পর্যাপ্ততা নেই। আবার লাইন সংযোগ থাকলেও লাইনে গ্যাস নেই। এখন বিকল্প ব্যবস্থা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার বা লাকড়ি ব্যবহার। লাকড়ি ব্যবহার করলে কিচেনসহ পুরো রেস্টুরেন্ট কালো হয়ে যায়, পরিবেশ ঠিক থাকে না। পুরো বিষয়টি নিয়ে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। ভবিষ্যতের জন্য নির্দিষ্ট একটি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে যাতে ব্যাঙের ছাতার মতো রেস্তোরাঁ গজিয়ে উঠতে না পারে।


আরও খবর



এক বছরে চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১৬ লাখ কৃষক

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে দেশ। তবে দেশের খাদ্যের জোগানদাতা কৃষকই এখন সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে কৃষির ওপর নির্ভরশীল ২৬.৫ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হিসেবেও সামনে আসছে কৃষি। এরই মধ্যে বিভিন্ন কারণে গত এক বছরে কৃষি পেশা ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় ১৬ লাখ মানুষ।

কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের কৃষকরা উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্য উৎপাদন করলেও নিজের জন্য কিছুই রাখতে পারেন না। এমনকি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে উৎপাদিত ফসল মাঠেই বিক্রি করতে বাধ্য হন। পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে কৃষক নিজে যে খাদ্য ফলান, একটি পর্যায়ে গিয়ে তিনি তা-ই বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিবিএসের খাদ্য নিরাপত্তা পরিসংখ্যান ২০২৩-এ বলা হয়েছে, পেশাগত জায়গায় শুধু কৃষির ওপর নির্ভরশীল পরিবারের মধ্যে গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২৬.৫ শতাংশ। অর্থাৎ এক-চতুর্থাংশেরও বেশি কৃষক পরিবার নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে সংকটে রয়েছেন। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অন্য পেশাগুলোর ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কৃষির ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর চেয়ে অনেক কম। যারা শিল্প খাতে কাজ করেন তাদের খাবারের বিপদ সব পেশার মধ্যে সবচেয়ে কম।

শিল্পের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ১৬.৬৪ শতাংশ। সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীলদের ক্ষেত্রে তা ২০.২৮ শতাংশ, প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবারের ২০.০৩ শতাংশ, অন্য পেশার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২১.৫৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে দেশের গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২১.৯২ শতাংশ। আর চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ০.৮৩ শতাংশ।

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপের ডিসেম্বরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কৃষিকাজ ছেড়েছেন ১৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ।

বিভিন্ন হতাশার কারণে তারা এ পেশাই ছেড়ে দিয়েছেন। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, আয়ের বৈষম্য, যান্ত্রিকীকরণের কারণে কাজের ক্ষেত্র কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে কৃষি পেশা ছাড়ছে মানুষ। অনেক কৃষকই এখন নিজের দেশে চাষ করার বদলে বিদেশে গিয়ে অন্যের জন্য ফসল ফলাচ্ছে। বর্তমানে বিদেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশই যাচ্ছেন কৃষিকাজে।

শ্রমশক্তি জরিপ (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তথ্য অনুযায়ী, কৃষি পেশায় যুক্ত কর্মী তিন কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষেও সংখ্যাটি ছিল তিন কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার।

কৃষকদের নিজের পেশা ছেড়ে দেওয়ার প্রভাব পড়েছে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে। বিবিএস এখন জিডিপির হিসাব প্রতি প্রান্তিকেই দিয়ে থাকে। সর্বশেষ চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশের জিডিপি দাঁড়ায় ৬.০৭ শতাংশ। এ প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি এতটা কমেছে যে দেশের খাদ্য উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ০.৮৪ শতাংশ। অথচ এর আগের অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই প্রান্তিকে দেশের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ২.০৭ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কৃষির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৯৬ শতাংশ। অর্থাৎ কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরই ধারাবাহিকভাবে কৃষি খাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমছে। ফলে খাদ্যপণ্যের আমদানিনির্ভরতা আরো বাড়ছে।

কৃষকদের এত বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষকরা বিশেষ করে এখন যে উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্য এসেছে সেগুলো উৎপাদন করে বিক্রি করে ফেলেন। তারা নিজের খাবারের জন্য যা রাখেন সেগুলো খুবই সামান্য, অপুষ্টিকর। কাজেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা তাদেরই বেশি হবে। যেমনতারা দুধ বিক্রি করে ফেলেন, নিজের জন্য রাখেন না। দুধ পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় খাবার হওয়া সত্ত্বেও নিজের জন্য রাখেন না। তারা দুধ বিক্রি করে খাদ্য, কাপড়সহ অন্য কিছু কেনেন।

খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষির ওপর নির্ভরশীল মানুষের আয় কম। সে হিসাবে তারা মাছ-মাংস কিনে খেতে পারেন না। তারা যেসব শাক-সবজি খান সেগুলোও একেবারেই নিম্নমানের, সব বিক্রি করার পর যা থাকে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পুষ্টি নিয়ে তাদের শিক্ষা বা সচেতনতা কম। সে জন্যও তাদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেশি।

দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়লেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা যে রয়েছে তা সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন কৃষিমন্ত্রী আবদুস শহীদ নিজে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ফসল সংগ্রহের পর বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ৩০ শতাংশ ফসল ও খাদ্য নষ্ট এবং অপচয় হয়। খাদ্য নষ্ট হওয়া ও অপচয় কমাতে পারলে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে।


আরও খবর