তৈরি পোশাক মালিক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান জানিয়েছেন, প্রায় দেড় যুগ ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানির সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২ হাজারেরও বেশি কাভার্ড ভ্যান থেকে শত শত কোটি টাকার রফতানিযোগ্য তৈরি পোশাক পণ্য চুরি করেছে একটি চক্র। বিগত ২০২২ সালেই প্রায় ২০-২২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে।
মহাসড়কটিতে চুরি বন্ধে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের চলমান কাজ মার্চের মধ্যে শেষ করার পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় পোশাক শিল্পে আইন-শৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিজিএমইএ নেতারা এসব দাবি জানান।
সাম্প্রতিক সময়ের একটি ঘটনা উল্লেখ করে সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে ব্রাজিল থেকে ক্রেতা ভিডিও এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারককে জানায় যে, প্রায় বেশিরভাগ কার্টনের ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ পোশাক তারা বুঝে পায়নি। এমনকি কিছু কার্টন খালি ছিলো। ঐ শিপমেন্টে ২৬ হাজারের বেশি পোশাক ছিলো। প্রায় ৮ হাজারের মতো পোশাক চুরি হয়।
এরই মধ্যে র্যাব এই চুরির সঙ্গে জড়িত চক্রের হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার এবং যে কাভার্ড ভ্যানে করে তারা ব্রাজিলের পণ্য চুরি করেছিলো, সেই কাভার্ড ভ্যান আটক করেছে।
তিনি বলেন, কার্টনে পোশাকের পরিবর্তে ঝুট বা মাটি প্রদান করা হয়েছে, যেন ওজন ঠিক থাকে। এতে করে ক্রেতা-বিক্রেতার আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে, দেশ মূল্যবান বৈদেশিক মূদ্রা হারাচ্ছে।
মহাসড়কে পোশাক চুরি বন্ধে বেশকিছু দাবি তুলে ধরে ফারুক হাসান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের চলমান কাজ দ্রুততার সঙ্গে আগামী মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। চুরি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দরকার।
বিজিএমইএ সভাপতি আরো বলেন, কতিপয় নাম সর্বস্ব কোম্পানি এসব চুরির মালামাল ক্রয় করে স্টকলট হিসেবে বিভিন্ন দেশে রফতানি করে। স্টকলট রফতানির ক্ষেত্রে মালের উৎস নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বিজিএমইএ বা বিকেএমইএ থেকে সনদপত্র গ্রহনের মাধ্যমে রফতানির অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি, কাভার্ড ভ্যান চালক এবং হেলপারদের ডাটাবেইজ প্রস্তত করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সসেঙ্গ শেয়ার করার ব্যবস্থা রাখার দাবি করেন তিনি।