আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

মহাকাশে মানুষের নতুন অভিযান, সফল হবে কি?

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মহাকাশে তৈরি হচ্ছে শক্তির নতুন এক বিন্যাস, আমেরিকা ও চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতা। কিন্তু মহাকাশ অন্বেষণের যে চাহিদা তৈরি হয়েছে, এই দুইটি পরাক্রমশালী দেশও নিজেরা এককভাবে এই কাজ করতে পারবে না।

এর আগে প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল নানা লক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে, জানানো হয়েছে আগামী ১০ বছরের মধ্যে অন্য গ্রহে মানুষের বসবাস ও কাজ করার কথাও কিন্তু বিভাজিত এই বিশ্বে, যেখানে আন্তর্জাতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে, সেখানে এই স্বপ্ন কি বাস্তবসম্মত?

আর্টেমিস কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নাসার চাঁদে প্রত্যাবর্তনের অভিযান শুরু হয়েছে। এর তিনটি মিশনের প্রথমটি শুরু হয়েছে সফলভাবে। মানববিহীন এই ফ্লাইট দেখিয়ে দিয়েছে রকেট ও প্রযুক্তি ঠিকভাবেই কাজ করছে। দ্বিতীয় মিশনটি মানুষকে মহাকাশের আরো গভীরে নিয়ে যাবে।

এতোটা দূরে সে আগে কখনো যায় নি। আর তৃতীয় মিশনে নভোচারীরা চাঁদে যাবেন এক সপ্তাহের জন্য। সেখানে তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবেন। দীর্ঘ মেয়াদে এই আর্টেমিস মিশনের লক্ষ্য হচ্ছে চাঁদকে মহাকাশের এমন একটি স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যেখান থেকে মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালানো যাবে। কিন্তু এই কর্মসূচির পেছনে খরচ পড়বে প্রায় ৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এজন্য আমেরিকার করদাতাদের প্রচুর মূল্য দিতে হবে, যারা ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক চাপ অনুভব করছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের অডিটর জেনারেলের অফিস থেকে কংগ্রেসের কাছে একটি রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল।

তাতে অবাস্তব উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তারা খরচের হিসাবের ব্যাপারে নাসাকে আরো বেশি নির্ভরযোগ্য ও স্বচ্ছ হতে বলেছে। যদিও নাসা যতো অর্থ চেয়েছে ২০২৩ সালে তার চেয়েও কম অর্থ পাবে, তবে কংগ্রেস এখনও নাসার মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনাগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে।

চীনের মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং তাদের নির্ধারিত সময়সূচীর মধ্যেই কক্ষপথে পুরোপুরি কাজ করতে শুরু করেছে। চীনের মহাকাশ কর্মসূচিতে চাঁদে ও মঙ্গল গ্রহে মহাকাশ যান পাঠানো হয়েছে। তাদের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে চাঁদে মনুষ্যবিহীন একটি গবেষণা স্টেশন প্রতিষ্ঠা করা।

এর পরে ২০৩০ সালের মধ্যে তারা চাঁদের বুকে নভোচারী পাঠাবে। এর আগেও নভোচারীরা চাঁদে গেছেন। কিন্তু এর পরের ধাপ মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানো। এই কাজটি অনেক বেশি কঠিন। মঙ্গলগ্রহ চাঁদের চেয়েও ২৫০ গুণ বেশি দূরে এবং এই লাল গ্রহটিতে মানুষ পাঠাতে সক্ষম এরকম কোনো মহাকাশযান এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি।

এমনকি বিজ্ঞানীরা যদি সেখানে একটি জ্বালানি ভর্তি রকেট প্রেরণ করা এবং সেই রকেট পাতলা বায়ুমণ্ডলের ওই গ্রহটিতে অবতরণ করানোর জন্য নিরাপদ উপায় খুঁজে বের করতে পারেন, তার পরেও কয়েক মাস মহাকাশে অবস্থানের পর নভোচারীদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসার ব্যাপারে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে, পরাশক্তি দেশগুলো পৃথিবীর বাইরে আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। ১৯৫০ ও ১৯৬০ এর দশকে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এই প্রতিযোগিতা ছিল আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে।

রাশিয়া প্রথম পৃথিবীর কক্ষপথে মানুষ পাঠিয়েছিল। এর কয়েক বছর পর আমেরিকা চাঁদে তাদের নভোচারী পাঠায়, যিনি সেখানে মার্কিন পতাকা পুঁতে আসেন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস নির্মাণের মধ্য দিয়ে সহযোগিতার এক সুবর্ণ যুগের সূচনা ঘটে ১৯৭০ এর দশকে।

এটি শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। আরো ১৩টি সহযোগী দেশকে সঙ্গে নিয়ে এই দুইটি শক্তিধর দেশ এই স্টেশনটি নির্মাণ করে যা আজকের দিনে মহাকাশে সর্ববৃহৎ কোনো কাঠামো। এর মালিকানা  কোনো দেশের একার নয়। এই স্টেশনটি পরিচালনার জন্য একটি দেশ আরেকটি দেশের ওপর নির্ভরশীল।

বিভিন্ন দেশ তাদের মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে একসঙ্গে কাজ করলে মানবজাতি কী অর্জন করতে পারে, এই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন তার একটি প্রতীক। কিন্তু বাস্তবতা ছিল কিছুটা ভিন্ন।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে চীনের অংশীদার হওয়াতে বাধা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ফলে চীন তাদের নিজেদের পথে অগ্রসর হয়। অতি সম্প্রতি, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই, বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। চাঁদে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ও রাশিয়ার দুইটি যৌথ মিশন বাতিল করা হয়।

মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধানে তাদের একটি যৌথ কর্মসূচিও রয়েছে। এর পরেও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ব্যাপারে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। স্টেশনটিকে কক্ষপথে পরিচালনার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে হবে।

আমেরিকান ও ইউরোপীয়রা এখনও মস্কোতে রাশিয়ার মহাকাশ বিষয়ক সদরদপ্তর স্টার সিটিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ২০৩০ সালে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের আয়ু শেষ হয়ে যাওয়ার পর কী হবে?

লন্ডনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের মহাকাশ নীতি বিষয়ক বিশ্লেষক জুলিয়ানা সুয়েস জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রযুক্তি সেকেলে হওয়ার কারণে তারা অংশীদার দেশগুলোকে আগের মতো সহযোগিতা করতে পারে না। যে দেশটি প্রথম মহাকাশে গিয়েছিল, সেটি মহাকাশ থেকে প্রথম ছিটকে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

আন্তর্জাতিক স্টেশনটিকে নামিয়ে আনার আগে রাশিয়া যদি বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে না পারে, অথবা তারা যদি নিজেদের মহাকাশ স্টেশন তৈরি না করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ও নিষেধাজ্ঞার কারণে, তাদের হয়তো কোনো মানব মহাকাশ মিশন নাও থাকতে পারেবলে জানান তিনি।

রাশিয়ার এই দুর্দশা এমন এক সময়ে তৈরি হয়েছে যখন চীনের মহাকাশ কর্মসূচি খুব দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। গত ১০ বছরে তারা ২০০টিরও বেশি রকেট উৎক্ষেপণ করেছে। যদিও মহাকাশ কর্মসূচির পেছনে যুক্তরাষ্ট্র যতো অর্থ খরচ করে তার তুলনায় চীনের খরচের পরিমাণ অনেক কম।

প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও অর্থের ব্যাপারে চীন সচেতন। যেসব দেশকে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, চীন সেসব দেশের প্রতি আহবান জানিয়েছে তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে চীন এসব দেশের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষারও আহবান জানিয়েছে।

বর্তমানে ৭২টি দেশের নিজস্ব মহাকাশ কর্মসূচি রয়েছে। কারণ তারা আর পেছনে পড়ে থাকতে চায় না, যার ফলে মহাকাশকে কেন্দ্র করে নতুন এক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, মহাকাশ।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস, যোগাযোগ, ব্যাঙ্কে লেনদেনের মতো বিষয়ের জন্য আমরা স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করি। বিভিন্ন দেশ তাদের গুরুত্বপূর্ণ নজরদারি কর্মসূচির জন্যও এর ওপর নির্ভরশীল। এর ফলে মহাকাশ ক্রমশই আরো বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।

২০২১ সালে প্রায় ৫ হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০ বছর পেছনে গেলে দেখা যাবে, প্রতি বছর ৮০০টির মতো স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হতো। মহাকাশে কোনো কর্মসূচি চালানো প্রযুক্তিগত দিক থেকে কঠিন এবং ব্যয়বহুল বিষয়।

কোনো দেশই তা এককভাবে চালাতে পারে না। ফলে নতুন নতুন অংশীদারত্ব গড়ে ওঠছে, বিশেষ করে বিত্তশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে। ইলন মাস্কের কোম্পানি, স্পেস এক্স, ইতোমধ্যেই যাত্রীদের মহাকাশে নিয়ে যাচ্ছে। পুনরায় ব্যবহার করা যায় এমন রকেট তৈরির মাধ্যমে বিত্তশালী এই ব্যবসায়ী মহাকাশ ভ্রমণের খরচ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমাজনের জেফ বেজোসও কক্ষপথে একটি বাণিজ্যিক স্টেশন গড়ে তুলতে আগ্রহী। এই স্টেশনের নাম দেওয়া হয়েছে 'অরবিটাল রিফ'। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত মহাকাশ স্টেশন 'মিরে' যুক্তরাজ্যের প্রথম নভোচারী ছিলেন হেলেন শারম্যান। তিনি বিশ্বাস করেন, বেসরকারি খাতে যে উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে তার ফলে বর্তমান আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঢাকা পড়ে যেতে পারে।

সত্যিকার অর্থেই এমন বাণিজ্যিকীকরণ ঘটবে যা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কোম্পানিকে একত্রিত করবে। এসব কোম্পানি কোথায় নিবন্ধিত সে ব্যাপারে আমরা খুব বেশি চিন্তা করবো না। মূল বিষয় হচ্ছে বিশ্বের উপকারের জন্য তারা কী করছে সেটা বলে জানান তিনি।

আর্থিক লাভের সম্ভাবনা ও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সহযোগিতার পথ তৈরি করে। বেসরকারি কোম্পানিগুলো হয়তো মহাকাশে নতুন এক সহযোগিতা তৈরি করবে, কিন্তু এসব কোম্পানিকে তাদের দেশের আইন মেনে চলতে হবে। ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশ যখন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন এসব কোম্পানি রাশিয়ার সঙ্গে তাদের চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার প্রধান ড. জোসেফ আশবাখার ইউরোপকে নতুন এই মহাকাশ প্রতিযোগিতায় রাখতে বদ্ধপরিকর। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকারের আর্থিক সঙ্কোচনের পরেও, সম্প্রতি তিনি তার সংস্থার তহবিলের পরিমাণ প্রায় ২৪০ কোটি ডলার বৃদ্ধি করেছেন।

তিনি বলেন, মহাকাশ হচ্ছে এমন একটি খাত যা খুব দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। এবং গত কয়েক দশকের তুলনায় এখন এটি আরো দ্রুত গতিতে হচ্ছে। এখানে আমরা হেরে যেতে পারি না। এই খাতে আমাদের আরো জোরালোভাবে অংশ নিতে হবে। কারণ আমাদের সদস্য দেশগুলোর বিভিন্ন কোম্পানির জন্য আমি ব্যবসার নতুন সুযোগ তৈরি করতে চাই, যাতে তারা এগুলোতে অংশ নিতে পারে।

ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণায় বিভিন্ন দেশই নেতৃত্ব দেবে। কিন্তু এজন্য যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার মধ্যে আছে একক 'গ্রুপ' অথবা 'ব্লক' হিসেবে তাদের একত্রিত হওয়া যাতে তারা নিজেদের মধ্যে তথ্য বিনিময় এবং অন্যান্য ব্লকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে পারে।

এই কাজটিই ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা বহু বছর ধরে সফলভাবে করে আসছে।তবে অন্যান্য গ্রহের ব্যাপারে এর পরের বড় উদ্যোগকে সম্ভবত যা আটকে রাখতে পারে তা হচ্ছে মহাকাশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন।

১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ ৩১টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই 'আউটার স্পেস ট্রিটি' আইনটি আর আপডেট করা হয়নি। এই চুক্তিতে দেশগুলো মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের জুলিয়ানা সুয়েসের মতে, লক্ষ্য পূরণের জন্য এই আইনটি এখন আর উপযোগী নয়।

তিনি জানান, এতে কোম্পানিগুলোর ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি, বিত্তশালী ব্যক্তিদের বিষয়েও কিছু বলেনি। ১৯৬৭ সালে মহাকাশ যা ছিল, আজকের দিনে তা একবারেই আলাদা।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ১৯৭৯ সালে চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ ও এসবের বাইরেও বাণিজ্যিক অভিযান নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া তারা সবাই এতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার জোসেফ আশবাখার বিশ্বাস করেন আউটার স্পেস অর্থাৎ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বাইরের জগতের বিষয়ে নতুন কোনো চুক্তি না হলে মহাকাশ সংক্রান্ত নতুন প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, মহাকাশে স্যাটেলাইটের জন্য আমরা একই কক্ষপথ ব্যবহার করছি। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জন্য চাঁদের পৃষ্ঠদেশও একই। সেখানে আমরা কিভাবে একসঙ্গে কাজ করবো সে বিষয়ে একটি কর্মপদ্ধতি ও নিয়ম কানুন তৈরি করতে হবে।


আরও খবর
গুগল ডুডলে মহান স্বাধীনতা দিবস

মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪




বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত নস্যাৎ হয়েছে: আমু

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

Image

স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। তবে কোন ষড়যন্ত্রই তাকে দেশপ্রেম থেকে বিচলিত করতে পারেনি। দেশকে স্বাধীন করে দেশের মানুষকে, তিনি পরাধীনের শৃঙ্খল মুক্ত করেছেন। ঠিক তেমনি তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একইভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। সবকিছুই পিছনে ফেলে দৃঢ় প্রত্যয়ে দেশকে উচ্চতার শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। এভাবেই তিনি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত মোকাবেলা করে সুষ্ঠভাবে, ভোটারদের স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতিতে অংশীদারিত্ব ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন।

রবিবার (৩ মার্চ) বিকেল ৫টায় শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে ঝালকাঠি জেলা পরিষদ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি এসব কথা বলেছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম, সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়াম্যান খান আরিফুর রহমান, সহ-সভাপতি ও নলছিটি উপজেলা চেয়াম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান শামসুল ইকরাম পিরু।

সংবর্ধিত আমির হোসেন আমু আরও বলেন, দেশের ভোট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন জিয়াউর রহমান। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও হ্যাঁ-না ভোটের নামে ব্যালট পেপারে সিল মেরে মানুষের ভোটাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। সেই জিয়াউর রহমান সৃষ্ট বিএনপি তত্ত্বাবধায়কের হাস্যকর দাবি করছে।

এই নেতা আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছিলো। জনগণই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। সেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে। কারো ভয়ভীতিতে নয়, এই দেশ পরিচালিত হচ্ছে সংবিধান অনুযায়ী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা এ দেশের পবিত্র সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেছে, জাতীয় চার মূলনীতিকে ভূলুন্ঠিত করে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা, দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার বিষয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ নেতা এমপি আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নতুন নিমৃত মুক্তমঞ্চ ফিতা কেটে উদ্ধোধন করেন প্রধান অতিথি।


আরও খবর



মুন্সিগঞ্জে সুপার বোর্ড কারখানায় আগুন

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সাকিব আহম্মেদ, মুন্সিগঞ্জ

Image

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় পারটেক্স বোর্ড তৈরির কারখানায় আগুন লেগেছে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট।

রবিবার (২৪ মার্চ) বেলা ১টা ১১মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সংস্থাটির মিডিয়া সেল কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গজারিয়ার জামালদি এলাকায় অবস্থিত কারখানাটি আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ১টা ২২ মিনিটে। একে একে ১০ ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

তালহা বিন জসিম আরও জানান, সুপার বোর্ড নামের কারখানাটি সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন। তবে কারখানাটিতে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত তা নিশ্চিত করতে পারননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।


আরও খবর



অবন্তিকার আত্মহত্যা: দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন বাতিল

প্রকাশিত:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার আসামি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন বাতিল করেছেন আদালত। বুধবার (২০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুনানি শেষে কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিকী জামিন আবেদন বাতিল করেন। অবন্তিকার আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) একদিনের রিমান্ড শেষে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠান আদালত।

গত শুক্রবার রাতে জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। এরপর থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।

পরদিন শনিবার রাতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর শনিবার রাতে রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে আটক করে ডিএমপি পুলিশ।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, অবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী অফলাইনে ও অনলাইনে অবন্তিকাকে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে অভিযোগ করলে তিনি অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অবন্তিকাকেই নানাভাবে অপমান করে আসছিলেন।

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা নামের ওই ছাত্রী জবির আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী। অবন্তিকা কুমিল্লা নগরের শাসনগাছা এলাকার প্রয়াত জামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার বাবা কুমিল্লা সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। তার মা তাহমিনা শবনম কুমিল্লা পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক।


আরও খবর



২০ দিনে আড়াই হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

চলতি মাসে কার্যকর করা অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় নথিবিহীন ২ হাজার ৫৩০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। গত ১ মার্চ দেশটিতে অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। বুধবার মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বারনামার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ১ মার্চ থেকে অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি চালু করেছে মালয়েশিয়া। এই কর্মসূচির আওতায় গত ২০ দিনে ১১ হাজার ৯৪৩ জন অবৈধ অভিবাসীকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি আছেন ২ হাজার ৫৩০ জন।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৮২৪ জন নথিবিহীন অভিবাসী নিজ নিজ দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে এই কর্মসূচিতে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। নিবন্ধনকৃতদের মধ্যে ১২ হাজার ৪৯৫ জন পুরুষ, ৩ হাজার ৭২৮ জন নারী, ৩১০ জন তরুণ এবং ২৯১ জন তরুণী রয়েছেন।

দেশটির এই কর্মকর্তা বলেন, কর্মসূচিতে অবৈধ অভিবাসীদের সর্বোচ্চ সংখ্যক নিবন্ধনের রেকর্ড করেছেন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা। ৭ হাজার ৭৮২ জন ইন্দোনেশীয় দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন।

তিনি বলেন, এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ২ হাজার ৫৩০ জন বাংলাদেশি দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন। এরপরই ভারতের ২ হাজার ৪৫৪ জন এবং পাকিস্তানের এক হাজার ৬১৭ জন নাগরিক কর্মসূচিতে নিবন্ধন করেন।

রুসলিন বলেন, বাংলাদেশিদের মধ্যে অন্তত ৯৪ জন তাদের নিয়োগকর্তার মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন। তাদের সবাইকে চাকরির নিয়োগের সাথে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‌‌আমরা এই কর্মীদের কাউকে আটক করিনি। আমরা তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা দিয়েছিলাম। কারণ তারা অভিবাসন আইনে কোনও অপরাধ করেননি। নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশি এই কর্মীদের সাথে প্রতারণা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।


আরও খবর



জেলেনস্কির গাড়ি বহরের কাছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির গাড়ি বহরের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউক্রেনের বন্দর নগরী ওডেশাকে লক্ষ্য করে বুধবার (০৬ মার্চ) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি গিয়ে পড়েছে জেলেনস্কি থেকে মাত্র ১৬০০ ফুট দূরে। সে সময় তার সঙ্গে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ক্রায়াকোস মিসোতাকিস ছিলেন। হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই নেতার গাড়ি বহর হামলার তীব্রতা টের পেয়েছে এবং তারা ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখেছেন। ইউক্রেনের নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো প্লেটেনচুক জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাঁচজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে আহত হয়েছে।

হামলায় জেলেনস্কি ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কেউই আহত হননি। তবে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এতটাই কাছে ছিলেন যে এটির শব্দ শুনতে পেয়েছেন।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে বলেছেন, আমরা আজ হামলা হতে দেখেছি। আপনারা দেখেছেন কারা এগুলো মোকাবিলা করছে। আমি বিস্তারিত এখনও জানি না। কিন্তু আমি এটা জানি অনেকে আহত ও নিহত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, আমাদের দ্রুত নিজেদের রক্ষা করতে হবে। আর নিজেদের রক্ষায় সবচেয়ে ভালো উপায় হল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।”


আরও খবর