ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
কমিটির মেয়াদ শেষ হয়, নেতৃত্ব ফুরায় না। গত এক দশকের কার্যক্রম দেখলে ছাত্রলীগের ক্ষেত্রে কথাটি সহজেই বলা যায়। দেশের অন্যতম এই প্রাচীন ছাত্রসংগঠনটির কোনো কোনো ইউনিটের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৯ বছর আগে। অথচ এখনো দিব্যি সেই কমিটি নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে ইউনিটের। এভাবে বছরের পর বছর সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর কমিটি না করেই চলছে ছাত্রলীগ।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মেয়াদোত্তীর্ণ ও বিবাহিতদের দিয়ে চলছে উপজেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম। ফলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে গতি হারাচ্ছে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম।
৭ বছর আগে ২০১৫ সালে ২০ জুলাই এ কে এম ফরিদ উল্লাহকে সভাপতি এবং হাসান মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের ইউনিটগুলোকে পুনর্গঠন করা, সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার কথা ছিল। কিন্তু ওই কমিটি গঠনের পর আশানুরূপ অগ্রগতি দেখাতে পারেননি কমিটির নেতারা। এক বছর মেয়াদি কমিটি ৭ বছর পার হলেও কমিটির কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
শুরু থেকে উপজেলা ছাত্রলীগ দুই মেরুতে অবস্থান নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ছিল। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এ কে এম ফরিদ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ মধ্যে বরাবরই মনস্তাত্ত্বিক লড়াই বিদ্যমান ছিল।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি করা হলেও এগুলোর বেশির ভাগই মেয়াদ উত্তীর্ণ। বিবাহিত, অছাত্র দিয়েই করা হয় ইউনিয়ন কমিটি। ইউনিয়ন গুলোতে নতুন নেতৃত্ব না থাকায় গতি হারিয়েছে ছাত্রলীগের কার্যক্রম।
এ ছাড়াও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এক ছেলে সন্তানের পিতা হয়েছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকেন ঢাকায়। বিয়ে না করলেও নিজ উপজেলায় আসেন না, আওয়ামী লীগের কোন কার্যক্রমেও ঠিক মতো দেখা যায় না থাকে। নতুন কমিটি গঠন না হওয়ায় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিবাহিতরা আর অনেক আগেই ছাত্রত্ব শেষ হওয়া নেতার।
নতুন কমিটি গঠনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তৃণমূলের ছাত্রলীগের কর্মী সমথর্করা। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি একে এম ফরিদ উল্লাহ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন। এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় থাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের মধ্যে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী রানা আহমেদ বলেন, কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৭ বছর আগে। ছাত্রলীগের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। দীর্ঘ বছর ধরে ছাত্রলীগের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জেলা কমিটি যদি আমাকে ছাত্রলীগে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দেয় তাহলে উপজেলা ছাত্রলীগকে নতুন ভাবে ঢেলে সাজানো হবে। উপজেলায় ছাত্রলীগের প্রাণ ফিরিয়ে আনা হবে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এ কে এম ফরিদ উল্লাহ জানান, নানান জটিলতা কারণে তৎকালীন সময়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি। আমিও চাই ছাত্রলীগে নতুন নেতৃত্ব আসুক।