পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় পুলিশের পরিচয়ে ঘরে ঢুকে মেয়ের মাকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের রাহুতকাঠি গ্রামে। কলেজ ছাত্রীটির মা আহত হয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ শনিবার এ ঘটনায় সাইদুল (৩৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করে পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে। ওই কলেজছাত্রী ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মা তাছলিমা বেগম জানায়, কলেজছাত্রীর বাবা ও একমাত্র ভাই ঢাকায় থেকে পাপশের ব্যবসা করেন। বাড়িতে তাছলিমা তার কলেজ পড়ুয়া ও ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। কিছুদিন পূর্ব থেকে কে বা কারা ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় কু-প্রস্তাব ও হুমকি দিয়ে চিঠি লিখে তাদের অগোচরে প্রতিনিয়ত তাদের বাসায় রেখে যায়। এমনকি রাতে বাসায় চালে ঢিল ছোড়ে তারা। ওই পরিবার বিষয়টি এলাকার ইউপি সদস্যসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে জানালে তারা কোন রকম সহযোগীতা না করে পরিবারটিকে ফাঁদ পেতে ওই ছেলেদেরকে ধরার পরামর্শ দেয়।
গত ২৯ জুন এ বিষয়ে ওই মেয়েটির মা তাছলিমা বেগম নেছারাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। ঈদে ছাত্রীর বাবা বাড়িতে এসে নিয়মিত বাসায় পাহারায় থাকেন তিনি। গত ১১ জুলাই রাতে প্রতিবেশি আবু নোমান কায়েসের ছেলে মাইদুল চিঠি রাখতে এলে মেয়েটির পরিবার তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
এসময় ওই এলাকার ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য মো. দুলাল ও মো. শাহিন ধৃত ছেলেকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়াসহ ছাত্রীটির পরিবারকে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দিলে পরিবারটি আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও এ নিয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি আশ্বাস দেয়া গন্যমান্যরা।
গত ১৩ জুলাই রাতে পুলিশের পরিচয়ে মুখোশ পরিহিত অবস্থায় ৩/৪ জন ছাত্রীটির ঘরে প্রবেশ করে তার মা তাছলিমার বাম হাতের কাঁধের নিচে ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে। পরে পরিবারের লোকজনের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা চলে যায়। আহতবস্থায় পরিবারের লোকজন তাছলিমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে সেখানে ভর্তি করান। পরে এ বিষয়ে ১৪ জুলাই ছাত্রীটির বাবা মো. আসলাম বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মো. সোলায়মান জানান, মামলায় এজাহারভুক্ত নামীয় আসামী সাইদুল নামের একজনকে শনিবার গ্রেফতার করে পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে।