মেহেরপুরের বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যের কারণে ভোক্তাদের যখন নাভিশ্বাস ঠিক সেই মূহুর্তে আলোচনায় এসেছে কাঁচা মরিচ। বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচের দাম সপ্তাহ ব্যাবধানে বেড়ে হয়েছে দ্বিগুনের ও বেশি । বর্তমানে মরিচের বাজার দরে অতিষ্ঠ ক্রেতারা। কেউ কেউ কাঁচা মরিচ না কিনে শুকনো মরিচ কিনছেন।
বাজার মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়িরা চড়া দামে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগ বলছে বাজার দর স্থীতিশীল রাখতে অভিযান চালানো হবে।
জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, জেলায় ৩৯৬০ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে। প্রথমে আবহাওয়া অনুকুল না থাকলেও পরে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে, উৎপাদনও ভাল। তথাপিও কারণ ছাড়াই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহর ব্যবধানে দাম বেড়েছে দ্বিগুন। শুক্রবার বামন্দী বাজারে খুচরা কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় ৪০০ টাকা কেজি। শনিবার গাংনী, রাইপুর ও মড়কা বাজারে মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা। রবিবার জেলার বিভিন্ন বাজার ও আড়তে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায়।
গাংনীর কাঁচা বাজারের আড়ৎদার মামুন হোসেন জানান, তবে চাষিরা ক্ষেত থেকে বেশি করে মরিচ না তুলে অল্প মরিচ আড়তে নিয়ে আসছে এবং কৃত্রিম সংকট দেখানোর কারণে দাম বেশি। চাষিরা বেশি দামের আশায় মরিচ সংকট দেখাচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের উপর। একই কথা জানালেন আড়ৎদার রফিকুল ও আবুল। তারা আরো জানান, অনেক ফড়িয়া রয়েছে যারা চাষিদের কাছ থেকে গোটা মরিচ ক্ষেত কিনে নেন। পরে সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে আড়তে বিক্রি করে।
মেহেরপুর বড় বাজারের খুচরা মরিচ বিক্রেতা সোহেল রানা জানান, আড়তে বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দিন দিন আড়তে মরিচের দাম বাড়তে আছে। বেশি দাম হওয়ায় অনেকেই কাচা মরিচ কিনছেন না।
মরিচ কিনতে আসা মুজিবনগরের আমেনা ফাটি জানান, গরুর মাংস আর মরিচের দাম একই। ১০ কেজি চালের দামে এক কেজি মরিচ যা এ কৃষি প্রধান এলাকায় অকল্পনীয়। কাঁচা মরিচ না কিনে শুকনো মরিচের গুড়া কিনলেন তিনি। নওপাড়া গ্রামের আকতার জানান, বাজার এখন কাঁচা মরিচের দখলে। যা দাম আগামীতে মরিচের আবাদ বাড়বে।
মরিচ চাষি যুগিন্দা গ্রামের রুবেল হোসেন জানান, আবহাওয়ার কারণে অনেক মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। মরিচও তেমন ধরেনি। আবার অনেকে ফড়িয়া ক্ষেত ঠিকা বা চুক্তি নিয়ে কিনে রেখেছে। ফলে ওই সব ফড়িয়ারা বেশি দামে মরিচ বিক্রি করায় দাম বেড়েছে। একই কথা জানিয়েছেন গোয়াল গ্রামের রাব্বি।
মেহেরপুর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ জানান, আবহাওয়া অনুকুল না থাকায় মরিচের উৎপাদন কমেছে। ফলে দাম একটু বেশি। তবে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুয়েক দিনের মধ্যেই অভিযান চালানোর হবে।