আজঃ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24
শিরোনাম

মেধাশূন্য ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকছে দেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

ফিরোজ মাহমুদ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের মধ্যে মোবাইল আসক্তি বাড়ছে। তাদের মেধা-মননে জায়গা করে নিচ্ছে ভার্চুয়াল এক অস্বাভাবিক জগত, যে কারণে অনেক শিশুর মধ্যেই আচরণগত পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। এমন অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন মা-বাবারা।

অভিভাবকরা বলছেন, স্কুল খোলা থাকলে পড়াশোনা কিছুটা হয়। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় বাচ্চারা সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে। গেমস ছাড়া তারা কিছুই বোঝে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেধাশূন্য ও পঙ্গু এক ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকছে বাংলাদেশ। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রæত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার তাগিদ দেন তারা।

করোনা ভাইরাসের কারণে দুবছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, দীর্ঘসময় স্কুলের বাইরে থাকার কারণে অনেক শিশুর মধ্যেই আচরণগত পরিবর্তন আসতে পারে। একের পর এক নয়া প্রজাতির দাপটে বিপন্ন শৈশব, প্রায় দুবছরের বেশি সময় ধরে স্কুলের গেটে তালা ঝুলছে। অনলাইন ক্লাস, আর বাড়ির একঘেয়ে পরিবেশ শিশুদের মানসিক বিকাশ অনেকাংশেই ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি করছেন চিকিৎসকরা। জোরালো হচ্ছে স্কুল খোলার দাবিও।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা বাড়ি থেকে স্কুলের পরিবেশে অনেকে বেশি স্বচ্ছন্দ। সম্প্রতি শিশুদের মানসিক বিকাশের উপর করা এক সমীক্ষায় জানা গেছে, শিশুর জীবনে পরিবারের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তার স্কুল জীবন। যুক্তরাজ্যে করা এক গবেষণায় এমনটাই বলা হয়েছে। গবেষণায় জড়িত গবেষকরা দেখেছেন যে স্কুলে শিশুরা নিরাপত্তা এবং সম্মানের পরিবেশ উপভোগ করেছে, তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে ভাল সংযোগ ছিল, সেই স্কুলের শিশুদের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা ভালো ছিল। কিছু শিশু বাড়ির নেতিবাচক পরিবেশ ইতিমধ্যে তাদের অনেক মানসিক চাপ বাড়ছে। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতি একদিকে যেমন তাদের সঠিক মানসিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে অন্যদিকে নিয়মতান্ত্রিক জীবনে অনভ্যস্ত হওয়ার প্রবণতা তৈরি হতে পারে শিশুদের মধ্যে।

এর মধ্যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করছে। চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, অনলাইন ক্লাসের কারণে শিশুদের মোবাইল এবং ইন্টানেটের প্রতি আসক্তি বাড়ছে।

রোকেয়া বেগম, চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে, স্বামী সরকারি কর্মচারী। তার এক সন্তান, ক্লাস টুতে পড়ে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় সারাক্ষণই প্রায় বাড়িতে থাকছে তার সন্তান। আসক্ত হয়ে পড়ছে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের প্রতি। মনোযোগ হারাচ্ছে পড়াশোনার ক্ষেত্রেও। অনেক বেশি খিটখিটে স্বভাবের হয়ে পড়ছে সে। সারাক্ষণই ওদের মাথায় থাকে যে কখন মোবাইলটা নিয়ে গেমস খেলতে বসবে। পড়াশোনার কথা বললে সেখানে কোন কান দেয় না। যেটুকু সময় অনলাইন ক্লাস চলছে সেটুকু সময় ধরে বেধে পড়াতে হয়, বাকি সময়ে চলে দস্যিপনা!

তার কথায়, অবিলম্বে স্কুল খোলা দরকার, না হলে বাচ্চাদের পড়াশোনার অভ্যাসটাই নষ্ট হয়ে যাবে। বিপন্ন হবে শৈশব!

সবরকম ক্লাস কোচিং অনলাইনে হওয়ার কারণে সারাক্ষণই ঘরবন্দি, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী তিশা। তার সঙ্গে কথা বলতেই তার গলায় শোনা গেল আক্ষেপের সুর, তিশা জানালো, কতদিন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়না। এভাবে আর ভালো লাগছে না। কবে যে স্কুলটা খুলবে। সারাদিন প্রায় দুবছর ধরে একঘেয়ে রুটিনে বিরক্ত হয়ে পড়েছে ছোট্ট তিশা। বাবা-মায়েরা বলছেন, শিশুরা বাড়িতে থাকলেও নিয়মতান্ত্রিক জীবনে আর অভ্যস্ত নয় তারা।

ইউনেসকোর তথ্য অনুযায়ী, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের তালিকায় বিশ্বে সবার ওপরে বাংলাদেশ। কিন্তু উল্টো অবস্থা আক্রান্তের হারে। শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ টিকাও দেওয়া হয়ে গেছে। তারপরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ, এমন প্রশ্ন অনেকের।

ইউনিসেফের তথ্য বলছে বিশ্বে প্রতি তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একজন শিশু। আর প্রতিদিন এক লাখ ৭৫ হাজার অর্থাৎ প্রতি আধা সেকেন্ডে একজন শিশু নতুন করে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ২৫ শতাংশের বয়সই ১০ বছরের কম এবং ফেসবুকসহ সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ার ৯০ শতাংশ ব্যবহারকারীর বয়সই ১৮ থেকে ২৯-এর মধ্যে। বাংলাদেশেও ইন্টারনেট প্রসারের মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী, যার মধ্যে শিশুরাও আছে। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের প্রায় ৩.৫ শতাংশ নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে, যার বড় একটা অংশই যুক্ত থাকে নানা ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের সঙ্গে।

শিশু ও কিশোরদের ভার্চুয়াল জগতের প্রতি এই আসক্তি কতটা বিপদ ডেকে নিয়ে আসছে, সেটা কি আমরা কখনও গভীরভাবে ভেবে দেখেছি?

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ মোহিত কামাল বলেন, শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিনোদনের জায়গা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় সেই বিনোদন আর পাচ্ছে না। এতে শিশুরা দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার কারণে বিরক্তি প্রকাশ করছে, রেগে যাচ্ছে। অল্পতেই ভাঙচুর করছে। শিশুদের শান্ত করতে গিয়ে বাবা-মা তাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দিচ্ছেন। ফলে টেলিভিশন ও ভিডিও গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। এর ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও হীনমন্যতার শিকার হচ্ছে তারা। এতে অনেকের অটিজম, মনোযোগ হ্রাস ও তীব্র বিষণœতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

তার কাছে আসা রোগীদের মধ্যে একাধিক কেস স্টাডির কথা উল্লেখ করে দেশের খ্যাতনামা এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, কোনো গেমসের মধ্যে ঢুকে পড়লে তার ব্রেন নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তখন গেমস ছাড়া অন্য কিছু কাজ করে না। সৃজনশীলতা নষ্ট হয়ে যায়।

করোনাকালে শিশুর এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় বলতে গিয়ে মোহিত কামাল বলেন, স্মার্টফোনে কবিতা আবৃত্তি, চিত্র আঁকা, গান ও ছড়া পরিবেশন করে শিশুর সৃজনশীলতা বাড়ানো যেতে পারে। অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইসের ইতিবাচক দিকগুলোতে শিশুদের ব্যস্ত রাখতে পারেন অভিভাবকরা। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণ রাখার কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া করোনাভাইরাস সম্পর্কে বেশি আতঙ্কিত না করে এ বিষয়ে শিশুদের বুঝিয়ে বলতে হবে।

এডুকেশন ওয়াচের গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা পঙ্গু এক ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছি। তাই স্বাস্থ্যবিধি আরও শক্তিশালী করে হলেও স্কুলগুলো খুলে দিতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলছেন, করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করেই বেঁচে থাকতে হবে; যার কারণে বৃহত্তর পরিকল্পনার দিকে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে অনেকগুলো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে টিভি ক্লাস, অনলাইন ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে।

তবে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে অভিভাবক, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের।

নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. প্রাণগোপাল দত্ত শিশুদের মোবাইল ফোন আসক্তি বিষয়ে বলেছেন, এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মোবাইল ফোন থেকে নির্গত রশ্মি শিশুদের দৃষ্টিশক্তির ভীষণ ক্ষতি করে। যেসব শিশু দৈনিক পাঁচ-ছয় ঘণ্টা মোবাইল ফোনে ভিডিও গেমস খেলে, খুব অল্পবয়সে তাদের চোখের সমস্যা হবে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যখন মোবাইল ফোনকে সিগারেটের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

করোনার প্রাদুর্ভাবে আগের চেয়ে বেশি শিশুরোগী পাচ্ছি। একথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেটিনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারিক রেজা আলী বলেন, চোখের জ্বালাপোড়া, চোখ লাল হওয়া, চোখ পিটপিট করা, চোখ দিয়ে পানি পড়া এসব অভিযোগই বেশি শিশুদের।

তিনি বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে শিশুদের চোখের মাইনাস পাওয়ার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। যাকে বলে মায়োপিয়া। এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা কাছের জিনিস ভালো দেখলেও দূরের জিনিস দেখতে পায় না। এ সমস্যা বাড়লে দূরের বস্তু আর দেখবেই না। দূর থেকে আসা যানবাহনও দেখতে পাবে না।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, একটানা কম্পিউটার, মোবাইল বা যে কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে তাকিয়ে থাকাটা বড় ছোট সবার চোখের জন্যই ক্ষতিকর। ছোটদের বেলায় সেটা আরও বেশি বিপজ্জনক। অভিভাবকদের অনেকে ভাবেন, শিশুদের চোখের সমস্যা বোধহয় কম হয়। এই ধারণা থেকে তারা ওদের চোখ পরীক্ষাও করান না। এসব শিশুর জন্য তখন সমস্যাটা আরও প্রকট হয়।

তিনি জানান, গত কয়েক মাস ধরে শিশুরা চোখ আর মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে বেশি আসছে। এর কারণ, রিফ্লেক্টিভ এরর। অর্থাৎ তাদের চশমার প্রয়োজন হচ্ছে।


আরও খবর



জনতা ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৫ কোটি টাকা চুরি, তিন কর্মকর্তা আটক

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জনতা ব্যাংকের তামাই শাখা থেকে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষিতে ওই তিনজনকে (৫৪ ধারায়) আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

রবিবার (২৪ মার্চ) রাতে তাদের আটক করে আজ সকালে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এরপর দুপুরের দিকে আদালত এই নির্দেশ দেন। এছাড়াও বিষয়টি দুদক দেখবে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান ও আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান।

অভিযুক্তরা হলেন জনতা ব্যাংক তামাই শাখার ব্যবস্থাপক আল আমিন শেখ (৪২), সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম (৩৪) ও ব্যাংক কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান (৩৪)।

জনতা ব্যাংক পিএলসি সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নজরুল ইসলামের লিখিত অভিযোগ ও জিডির সূত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংক তামাই শাখা পরিদর্শনে গিয়ে হিসাবে গরমিল ও সন্দেহ পরিলক্ষিত হলে গত রবিবার তামাই শাখায় উপস্থিত হয়ে লেনদেনের সমস্ত কিছু অডিট শেষে ক্যাশ ভোল্টে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হিসেবে গরমিল পাওয়া যায়। এ সময় তামাই জনতা ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক ও অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি এবং পরে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বেলকুচি থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরে রাতে পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে পাঠায়। যেহেতু বিষয়টি টাকা লেনদেন সংক্রান্ত তাই জিডির কপি দুদকে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, আমরা জনতা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জিডির প্রেক্ষিতে জনতা ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে আটক করি। ঘটনাটি অর্থ আত্মসাৎ সম্পর্কিত হওয়ায় এটা দুদক দেখবেন। এরপরও তারা যেহেতু অপরাধ করেছেন তাই তাদেরকে সকালে (৫৪ ধারায়) আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দুদক দেখবে কিন্তু ধর্তব্য অপরাধ হওয়ায় থানা পুলিশ তাদেরকে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করেন। আদালত তাদেরকে জেলা হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক (ডিডি) মো. খায়রুল হক বলেন, তাদের জিডির কপিটি হাতে এসেছে। এখন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতির জন্য কমিশনে আবেদন পাঠানো হবে। অনুমতি আসার পরে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংক পিএলসি সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নজরুল ইসলাম জানান, জনতা ব্যাংক ঢাকা অফিসের নির্দেশনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



ঈদের কেনাকাটা করে ফেরা হলো না মা-ছেলের

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

Image

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ঈদের কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ সময় একই পরিবারের তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন উপজেলার উত্তর উল্যাবাজার এলাকার আব্দুল আজিজের স্ত্রী শান্তা বেগম (৩৬) ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম (১৪)।

রবিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমতাজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাঘাটা-গাইবান্ধা আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার বিলবস্তা নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পার্শ্ববর্তী বগুড়া থেকে ঈদের কেনাকাটা শেষে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে একই পরিবারের পাঁচজন উপজেলার উল্যাবাজারের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। অটোরিকশাটি সাঘাটা-গাইবান্ধা আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার বিলবস্তা নামক এলাকায় পৌঁছলে রাস্তার পাশে রাখা মিস্কার ঢালাই মেশিনের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ওই পরিবারের পাঁচজনই গুরুতর আহত হন।

তাদের উদ্ধার করে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তির পরামর্শ দেন। অ্যাম্বুলেন্স যোগে বগুড়ায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ৩টার দিকে মা-ছেলে দুজনই মারা যান।

সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি আটক করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।


আরও খবর



টাঙ্গাইলে মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

টাঙ্গাইলে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃ‌ষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভো‌গে পড়েছেন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ। গভীর রাতে শুরু হওয়া এ যানজট ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাস‌ড়কের টাঙ্গাইল সদরের আশেকপুর বাইপাস থেকে সেতু টোলপ্লাজা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়কে এ যানজটের সৃ‌ষ্টি হয়েছে। এর আগে ভোরে সেতুর উপর ২২ নম্বর পিলারের কাছে এক‌টি ডাবল ডেকার বাস বিকল হয়ে যাওয়ার পর সে‌টি উদ্ধারে ৫‌ মি‌নিট টোল আদায় বন্ধ ছিল। এতে মহাসড়কে প‌রিবহনের চাপ আরও বেড়ে যায়।

এর আগে সোমবার সেতুর উপর বাস বিকল ও সেতুতে টোল আদায় বন্ধ থাকার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে রাত যত গভীর হয়েছে যানজটের আকার তত বেড়েছে বলে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও সেতুর উপর প‌রিবহনের দীর্ঘ সারি তৈ‌রি হয়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, মহাসড়কে প‌রিবহনের খুব চাপ রয়েছে। এতে পরিবহনগুলো খুবই ধীরগ‌তিতে চলাচল করছে। এ ছাড়া সেতুর উপর এক‌টি বাস নষ্ট হওয়ায় ৫‌ মি‌নিট বন্ধ ছিল প‌রিবহন চলাচল। পরিবহনগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কারণেও অন‌্য প‌রিবহনগুলোতে ধীরগ‌তির সৃ‌ষ্টি হয়েছে।


আরও খবর



লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

লালমনিরহাটের বুড়িরহাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মুরুলী চন্দ্র (৪৩) নামে এক বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন। এ সময় বিএসএফের গুলিতে আরও ২ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে কালীগঞ্জ উপজেলার বুড়িরহাট সীমান্তের ৯১৩ নম্বর পিলারের একশত গজ ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

মুরুলী চন্দ্র কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের উত্তর বালাপাড়া গ্রামের সুশীল চন্দ্রের ছেলে। আহতরা হলেন একই এলাকার চন্দ্রপুর গ্রামের আজিমুল হকের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৩) ও নুর ইসলামের ছেলে লিটন মিয়া (৪৩)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে ৪/৫ জনের একটি পাচারকারী চক্র ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গরু পাচার করতে ভারতে প্রবেশ করেন। গরুর রাখালরা ভারতীয় গরু নিয়ে বুড়িরহাট সীমান্ত দিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় বিএসএফ তাদেরকে লক্ষ করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে ৩ জন বাংলাদেশি রাখাল গুলিবিদ্ধ হন। পরে বাকিরা আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে রংপুরে নেওয়ার পথে মুরুলী চন্দ্র মারা যান। বাকি দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, সীমান্ত এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মুরলী চন্দ্র নামে একজনের মরদেহ আমরা উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোফাজ্জল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

নিউজ ট্যাগ: লালমনিরহাট

আরও খবর



কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাংলাদেশি জন্মসনদ!

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

দেশের জন্ম ও মৃত্যুসনদ সার্ভারে পাওয়া গেছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাংলাদেশি জন্মসনদ! সেখানে দেখা যাচ্ছে, আবেদনকারীর নাম জাস্টিন ট্রুডো। তিনি আবেদন করেছেন বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধনের জন্য। সেই জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে পাবনা থেকে।

এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল মির্জা তারিক হিকমত বলেন, ওই লোকের আসল নাম ছিল আজিজুল। সেটাকে বদলে করা হয়েছে জাস্টিন ট্রুডো। মানুষের কাছে যেকোনো ক্ষমতা দিলে তার অপব্যবহার হতে পারে। এটাকেও সেভাবেই দেখছেন তিনি।

এরইমধ্যে পাওয়া গেছে পাবনার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়ন থেকে করা আরও কিছু অবৈধ জন্মসনদ। জানা গেছে, টাকার বিনিময়ে এসব অবৈধ জন্মসনদ করে দেন ওই ইউনিয়নের কম্পিউটার অপারেটর নিলয় পারভেজ ইমন।

টাকার বিনিময়ে আবেদনের পর নিজেই সব অ্যাপ্রুভ করিয়ে দেন। জাস্টিন ট্রুডোর নামে আবেদনটি হয়েছিল এভাবেই।

এ বিষয়ে আহম্মদপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্লার কাছে জানতে চাওয়া হয় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জন্মসনদ আপনার ইউনিয়ন থেকে সম্পন্ন হয়েছে। এর জন্য আপনার কি গর্ববোধ হচ্ছে? তিনি বলেন, আমার কাছে এটি লজ্জার বিষয়। কারণ, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, তার নিবন্ধন হয়েছে আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। এটা আমার জন্য খুবই লজ্জার।

বৈধভাবে জন্মসনদের সংশোধন করানোর সময় নানা ঝক্কিতে পড়েন মানুষ। উল্টোদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর নামেও এক রাতে করা যায় জন্মসনদ। তাহলে কতটা সুরক্ষিত দেশের এই নিবন্ধন সার্ভার?

ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল মির্জা তারিক হিকমত বলেন, আমরা এখন বুঝতে পারলাম। যেহেতু আমরা সার্ভার নিয়ে কাজ করি, সুতরাং কে কয়টায় কাজ করেছে, তা ধরা পড়েছে আমাদের কাছে। এখন আমরা অ্যাকশন নেব।


আরও খবর