দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলন করছে রাজপথের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। তারা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে তফসিল বাতিল করা। বিরোধীদের সঙ্গে নির্বাচন সামনে রেখে বেড়েছে বিদেশিদের দৌড়ঝাঁপ। বিদেশি কূটনীতিকদের এই তৎপরতা বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরকার বলেছে, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ নিয়ে নতুন তথ্য হাজির করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারবিরোধী আন্দোলন বা সভা-সমাবেশের পরিকল্পনা করার জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) এই ধরনের কর্মকাণ্ড অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্থূল হস্তক্ষেপের চেয়ে কম নয়।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। সবশেষ গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে তারা। এরপর ২৯ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী এক দিন বা দুই দিন বিরতি দিয়ে অবরোধ হরতাল পালন করে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এর মধ্যে ১৫ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তফসিল ঘোষণার এক দিন আগে ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রধান তিন দল– আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে (জাপা) চিঠি দেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তিন দলের মধ্যে সংলাপ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এই চিঠির বিষয়ে তফসিল ঘোষণার দিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলকে আমরা যে বার্তা দিয়েছি, এখানেও সেই কথা বলেছি। সেটা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষ থাকবে। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নেই। শান্তিপূর্ণভাবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছি আমরা।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে চাওয়ার আড়ালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্ররা প্রভাবিত করছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। বুধবার (২২ নভেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই অভিযোগ তোলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের এই ধরনের প্রচেষ্টাকে রাশিয়া বারবার প্রকাশ্যে তুলে ধরছে বলেও জানান মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘অক্টোবরের শেষে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সরকারবিরোধী সমাবেশের পরিকল্পনা করতে বিরোধীদলের একজন সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্থূল হস্তক্ষেপ।’