দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ঢাকা জেলার আসনগুলো থেকে দুই দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন
৬৪ জন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের সুযোগ থাকলেও মূলত বৃহস্পতিবার
(২৩ নভেম্বর) থেকেই ঢাকার আসনগুলোর আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি
ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু); জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও ক্ষমতাসীন
জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খানসহ বর্তমান সংসদের বেশ কয়েকজন এমপিও
রয়েছেন। গতবার মনোনয়ন বঞ্চিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকও
ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়
সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী
লীগ, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল থেকে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা না হলেও প্রার্থীরা দলের নামে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু করেছেন।
এর মধ্যে ঢাকার আসনগুলোর মধ্যে ১৫টি আসন থেকে আওয়ামী লীগের নাম উল্লেখ করে ২৪ জন মনোনয়নপত্র
সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন স্থান থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু
হয়েছে।
ঢাকা জেলার
২০টি আসনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ১৬টি নির্বাচনি আসনের রিটার্নিং
কর্মকর্তা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার। মহানগরীর বাইরের ৪টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে
রয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসক।
ঢাকা বিভাগীয়
কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১ আসন (দোহার-নবাবগঞ্জ) থেকে আওয়ামী লীগের
হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সালমান ফজলুর রহমান। একই আসন থেকে
ওয়ার্কার্স পার্টির করম আলীও মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-৩ আসন
(কেরানীগঞ্জ) থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
এবং এই আসনের সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ (বিপু)। একই আসন থেকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ
জাফর আলী রেজা নামের আরেকজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-৪ আসন
থেকে জাতীয় পার্টির এই আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন এবং আওয়ামী লীগ থেকে আওলাদ
হোসেন, সানজিদা খানমসহ ৬ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-৫ আসন
থেকে তৃণমূল বিএনপির হয়ে আবু হানিফ নামের এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী
লীগ থেকে আওলাদ হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, ইসলামিক ফ্রন্ট
বাংলাদেশের আবু জাফর মো. হাবিব উল্লাহসহ ৫ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-৬ আসনে
বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও স্বতন্ত্র এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র
নিয়েছেন।
ঢাকা-৮ আসন
থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির
সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ ৫
জন।
ঢাকা-৯ আসন
থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এই আসন থেকে আরও একজন
ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। ঢাকা-১১ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম রহমতুল্লাহসহ
আওয়ামী লীগের ৩ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-১৩ আসন
থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, এই আসনের বর্তমান সংসদ
সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা সাদেক খান ও জাতীয় পার্টি থেকে শফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ঢাকা-১৪ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টুসহ আওয়ামী লীগের ৪ জন মনোনয়নপত্র
নিয়েছেন।
ঢাকা-১৫ আসন
থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ২ জন, ঢাকা-১৬ আসন থেকে বর্তমান সংসদ
সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও জাতীয় পার্টির আমানত হোসেন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
ঢাকা-১৭ আসন
থেকে ৭ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ)
সভাপতি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, নতুন নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, জাতীয়
পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতা রয়েছেন।
এছাড়া ঢাকা-১৮
থেকে ৩ জন, ঢাকা-১৯ থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানসহ বিভিন্ন
দলের ৫ জন এবং ঢাকা-২০ আসন থেকে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদসহ ৬ জন মনোনয়নপত্র
সংগ্রহ করেছেন।
গত ১৫ নভেম্বর
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার
শেষ সময়। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কিছুটা বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।