মানিকগঞ্জে কলেজছাত্রী ও গৃহবধূ সুপ্রিয়া
সাহা হত্যা মামলায় ৭ আসামির মধ্যে শ্বশুর শাশুড়িসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এদের
প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও করেছেন আদালত। এ মামলায় সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন
সরকার (২৭) বেকসুর খালাশ পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা
ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। এসময় ৩ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য আসামিরা
জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন সুপ্রিয়া সাহার
শ্বশুর দিলীপ সরকার (৬০), শাশুড়ি গীতা সরকার (৪৫) ও মানিকগঞ্জ পূর্ব দাশড়া গ্রামের দীলিপ রায়ের ছেলে
মহাদেব রায় (২৭)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছেন পূর্বদাশড়া
গ্রামের রবীদ্র সাহার ছেলে রঞ্জিত সাহা (২৬), একই গ্রামের অরুণ পালের ছেলে বিষ্ণু পাল
(২৬) ও একই গ্রামের রবি ঘোষের ছেলে রঞ্জিত
ঘোষ (২৭)।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জ পূর্ব দাশড়া গ্রামের সুকুমার
সাহা মেয়ে মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স (বাংলা) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী
সুপ্রিয়া সাহার সঙ্গে একই গ্রামের দিলীপ সরকারের ছেলে দিপাঞ্জন সরকারের বিয়ে হয়। পারিবারিক
কলহের জের ধরে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে সুপ্রিয়াকে হত্যা
করা হয়। শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিষয়টি ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়া চেষ্টা করেন। ২৮ সেপ্টেম্বর
সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা বাদি হয়ে সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন সরকার, শ্বশুর দিলীপ
সরকার ও শাশুড়ী গীতা সরকারকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন মানিকগঞ্জ থানার
উপপুলিশ পরিদর্শক মাসুদ মুন্সি। তদন্ত শেষে আলোচিত এই মামলায় আসামি করা হয় আরো ৪ জনকে। ২০১৬ সালে ২৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ
মুন্সি ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৪ জনের সাক্ষ্য
গ্রহণ করা হয়।
মামলার রায় ঘোষণার পর মামলার বাদি সুপ্রিয়ার
বাবা সুকুমার সাহা জানান, তিনি আসামি করেছেন সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন, শ্বশুর দিলীপ
সরকার ও শাশুড়ি গীতা সরকারকে। পুলিশ তদন্ত করে আরো ৪ জনের নামে চার্জশিট দেন। কিন্তু
অন্য আসামিদের শাস্তি হলেও মূল আসামি দিপাঞ্জনের শাস্তি হয়নি। এটা অত্যন্ত কষ্টের।
এরা জামিন নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি
আব্দুস সালাম ও এপিপি মথুর নাথ সরকার এবং আসামির
পক্ষে আব্দুর রহমান ও নজরুল ইসলাম বাদশা।