জাতীয় শহীদ
দিবসে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে হাতে লেখা দেয়াল পত্রিকা ‘সবুজ পাতা’র চতুর্দশতম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। এবারের ‘সবুজ পাতা’য় লিখেছেন কথাসাহিত্যিক মনজুর শামস, আহমাদ মোস্তফা কামাল, আবু জাহিদ মোল্লা, তৈয়বুল আজহার প্রমুখ।
১৯৭২ সালে প্রথম
প্রকাশ হওয়া এই দেয়ালিকা ১৯৮৪ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ঊনচল্লিশ বছর পর মঙ্গলবার ফের তা
প্রকাশিত হয়েছে উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির দেয়ালে।
জানা যায়, সদ্য
স্বাধীন দেশের এক সুবর্ণ বিকালে স্বপ্নমাখা চোখ আর আশাবাদী হাতে কলম ধরেছিলেন পাটগ্রাম
অনাথ বন্ধু স্কুলের এক প্রগতিশীল তরুণ শিক্ষক হরিপদ সূ
ত্রধর। তার
সম্পাদনায় যাত্রা শুরু হয় ‘সবুজ পাতা’ দেয়াল পত্রিকার।
অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক প্রয়াত সামসুদ্দিন আহমেদ। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের
সিনিয়র সহকারি সচিব (অতিরিক্ত জেলা জজ) তৈয়বুল আজহার বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত
এই ‘সবুজ
পাতা’ দেয়ালিকা
প্রকাশিত হয়েছে। সে সময়ে মানিকগঞ্জ শহরে পুরো জেলার দেয়াল পত্রিকার প্রতিযোগিতা হতো।
‘সবুজ
পাতা’ সেই
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতো।
“পত্রিকাটির উদ্দেশ্য ছিল কিশোর, তরুণদের মননশীলতা, সৃষ্টিশীলতার উন্মেষ
ঘটানো। নানা প্রতিকূলতায় ১৯৮৪ সালে ‘সবুজ পাতা’র প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেলেও পরবর্তীতে ‘সবুজ পাতা’ নামে স্কুল বার্ষিকী প্রকাশ হয় বাবু হরিপদ সূত্রধরেরই সম্পাদনায়।”
সবুজ পাতা পত্রিকার লেখক তৈয়বুল আজহার আরও বলেন, “এই অনাড়ম্বর এবং জৌলুসহীন দেয়ালের সাদামাটা ‘সবুজ পাতা’ দেখে আপনাদের পছন্দ নাও হতে পারে। তাতে ক্ষতি নেই!
‘সবুজ পাতা’য় কথাসাহিত্যিক মনজুর শামসের স্মৃতিচারণ
“তবে রাত জেগে হাতে দেয়াল পত্রিকা লিখে ৮৪ বছরের ‘চিরতরুণ’ বাবু হরিপদ সূত্রধর যে এখনো জীবনমনস্ক,
সুন্দরমনস্ক ‘পদ্মাপাড়ের সক্রেটিস’ হয়ে বেঁচে আছেন, ঊনচল্লিশ বছর পর ‘সবুজ পাতা’ দেয়ালে ওঠা সেই সাক্ষ্যই বহন করে।”
তিনি আরও জানান,
নবীন লেখকদের পাশাপাশি এবারের ‘সবুজ পাতা’য় লিখেছেন কথাসাহিত্যিক মনজুর শামস, আহমাদ মোস্তফা কামাল, আবু জাহিদ
মোল্লা, তৈয়বুল আজহার প্রমুখ। কথাসাহিত্যিক মনজুর শামস, আহমাদ মোস্তফা কামাল-এর হাতেখড়িও
এই ‘সবুজ
পাতা’ দেয়াল
পত্রিকায়।