মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নানের ছেলে ফখরুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে খিলগাঁও দক্ষিণ গোড়ান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। বুধবার (১ মার্চ) বেলা ১টার দিকে এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মো. আসলাম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ফখরুজ্জমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তিনি ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুম করার সহযোগী ছিলেন। এ ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে অন্য আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
আসলাম খান আরও জানান, ২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলায় এম এ হান্নান, তার ছেলে মো. ফখরুজ্জামানকে আসামি করা হয়। ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নানের নির্দেশে পাক বাহিনী ও তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিচারক মামলার এজাহার গ্রহণ করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন। তাদের মধ্যে এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাত ও মিজানুর রহমান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেছেন। গ্রেফতার ফখরুজ্জামানকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।