মালয়েশিয়ার আদালতের নির্দেশে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি পেলেন বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার খায়রুজ্জামান। মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় আজ দুপুর একটায় আইনজীবীদেরকে খায়রুজ্জামানের মুক্তির বিষয়টি জানানো হয়। পরে আইনজীবীরা গিয়ে তাকে নিয়ে আসেন।
গত সপ্তাহে মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর প্রদেশের আমপাং থেকে খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে দেশটির অভিবাসন পুলিশ। খায়রুজ্জামানের আইনজীবী এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, খায়রুজ্জামানকে মুক্তির সময় কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। এখন তিনি স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।
মুক্তির পর ফোনে ফ্রি মালয়েশিয়া টুডেকে
খায়রুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের মিথ্যা অভিযোগের কারণে
হয়রানি ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।’
তিনি দাবি করেন, তার কাছে জেলহত্যার ঘটনার
পর্যাপ্ত সরকারি রেকর্ড ও ডকুমেন্ট আছে। এসব তিনি প্রকাশ্যে আনবেন। যাতে প্রমাণ হবে
তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
খায়রুজ্জামানের স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের
নাগরিক। তিনি সেখানেই আছেন। তবে স্ত্রীর কাছে যেতে খায়রুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক
হওয়ার আবেদন করলেও মালয়েশিয়া পুলিশের ভেরিফিকেশনের কারণে তা আটকে আছে।
খায়রুজ্জামানকে মালয়েশিয়ায় একজন রাজনৈতিক
শরণার্থী উল্লেখ করে তার আইনজীবী এ এস ঢালিওয়াল বলেন, ‘তিনি জাতিসংঘের
শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কার্ডধারী। তাকে আটক করা বেআইনি। তার ভ্রমণের বৈধ কাগজ
আছে। তিনি অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেননি। তাকে বহিষ্কার করার অধিকার নেই মালয়েশিয়ার।’
খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে
স্থগিতাদেশ দিয়ে মঙ্গলবার রায় দেন দেশটির হাইকোর্ট। হস্তান্তরের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে
খায়রুজ্জামানের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে তা মঞ্জুর করেন বিচারপতি মোহাম্মদ জাইনি মাজলান।
খায়রুজ্জামানের পক্ষে করা আবেদনের শুনানির
জন্য মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট আগামী ২০ মে পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত
মেজর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন এবং পরে খালাস
পান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নিযুক্ত হন।
পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাকে দেশে ফিরতে বলা হয়। তখন থেকেই তিনি জাতিসংঘের
শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।