মাত্র ২৭ বছর বয়সে এক সন্তানের জননী আরিফা মাদকাসক্ত স্বামীর হাতে প্রাণ দিতে হলো। ঘটনার পরেই বেলাল বাড়ী ছেড়ে পালিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় উপশহরের হাউজিং মোড় এলাকায় নিজ বাড়ীতে গৃহবধূ আরিফার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনদের দাবী গৃহবধূ আরিফাকে স্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এটি হত্যাকাণ্ড তবে তদন্তের পরেই আসল ঘটনা জানা যাবে।
স্বজনরা জানান, প্রায় বছর ১৫ বছর আগে বেলাল হোসেনের সাথে আরিফার বিয়ে হয়েছিল। তারা দিনাজপুরের পৌর শহরের উপশহরের হাউজিং মোড় এলাকায় ভাড়াটে বাড়ীতে বসবাস করতো। পেশায় হোটেল শ্রমিক বেলাল হোসেন বিভিন্ন ধরনের মাদকে আসক্ত। তাদের সংসারে প্রায় ১০ বছর বয়সি একমাত্র ছেলে আরিফ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সাহরি খেয়ে সকাল ৬ টার দিকে পাশের বোনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাড়ীতে ফিরে আসার পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে আরিফা। শিশু আরিফ আরবি পড়তে যাবার আগে সকাল ৬ টার দিকে তার পিতাকে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে যেতে দেখেন। ঘরে ঢুকে বিছানায় তাকে নিথর দেখতে পেয়ে প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনদের খবর পেয়ে ঘরে বিছানার উপর আরিফার নিথর দেহ দেখতে পেয়েছেন তারা। তবে হত্যার কারণ জানতে পারেননি স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ নেশার টাকার যোগান না দেওয়ায় স্ত্রী আরিফা বেগমকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী। ঘাতক বেলারের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত আরিফরা মা অভিযোগ করেন জামাতা বেলাল হোসেন মাদকাসক্ত ছিল, সে প্রায়ই মেয়েকে শারীরিক নির্যাতনসহ মাদকের টাকা চাইত। টাকার জন্যই আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে অন্যের বাড়ীতে ঝি এর কাজ করে সংসার চালাত।
এদিকে নিহত আরিফা ছেলে আরিফ জানালেন সকালে আরবি পড়তে যাবার আগে বাবাকে ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে যেতে দেখেন। ঘরে ঢুকে মাকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে ডাকাডাকি করতে গেলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে নানীকে খবর দেই।
৯নং ওয়াড কাউন্সিলর দিনাজপুর পৌরসভার ৯নং ওয়াড কাউন্সিলর আবু তৈয়ব দুলাল জানান, মাদকাসক্ত হয়ে বেলাল তার স্ত্রী আরিফাকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। আরিফা একজন নামাজী এবং ভালো মেয়ে ছিল, এই মাদকাসক্ত বেলাল হোসেন কে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতার এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করি।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাত আল মামুন জানান, বিষ প্রয়োগ এবং শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছেন তারা। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর সঠিক কারন জানতে পারবেন । সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তে লাশ এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের মর্গে প্রেরণ করেছেন তারা।
হত্যার শিকার গৃহবধু আরিফা গাইবান্ধা জেলা সদরের কামারপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ ওদুদের কন্যা। নিহত আরিফার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
আজকের দর্পণ/ দিনাজপুর/মনদি আলম শিমুল