আজঃ বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪
শিরোনাম

মাচুপিচু: পেরুর বিস্ময়কর ইনকা নগরী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ভ্রমণ ডেস্ক

Image

পেরুর দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সবুজের মাঝে আশ্চর্য সুন্দর এক ইনকা নগরী মাচুপিচু। বহু বছর আগেই পরিত্যক্ত এই শহরের ধ্বংসাবশেষের দুনিয়াজোড়া খ্যাতি পর্যটক আর গবেষকদের কাছে। পেরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতার  কারণে আপাতত পর্যটক প্রবেশ বারণ ইনকাদের শহরটিতে। তবে মাচুপিচু নিয়ে লেখাপড়ায় নিশ্চই বাধা নেই।

অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার: ১৯১১ সালের ২৪ জুলাই, সকাল। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক ও অভিযাত্রী হিরাম বিংহ্যাম পেরুর প্রাচীন ইনকা ধ্বংসাবশেষের কিংবদন্তি সত্যি কি না, তা অনুসন্ধানে বের হয়েছেন। তাঁর সঙ্গী দুজন গাইড। গভীর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পথ করে এগোতে হচ্ছে তাঁকে। হামাগুড়ি দিয়ে গাছের গুঁড়ির একটি প্রাকৃতিক সেতু পেরোলেন। তারপর বিষধর পিট ভাইপার সাপেদের আড্ডাখানা হিসেবে পরিচিত এমন একটি ঝোপঝাড়ময় এলাকা অতিক্রম করলেন খুব সাবধানে।  দুই ঘণ্টা হাঁটার পর বিংহ্যাম ও তাঁর সঙ্গীরা এক কুঁড়ের সামনে চলে এলেন। সেখান থেকে স্থানীয় দুজন কৃষক তাঁদের কিছুটা পথ এগিয়ে দিয়ে ছোট্ট এক ছেলের দায়িত্বে ছেড়ে দিলেন। আর ওই ছেলের পেছনে পেছনে চলতে চলতে বিংহ্যাম অপ্রত্যাশিতভাবে এমন একটি কিছুর খোঁজ পেয়ে গেলেন, যাকে বিবেচনা করা হয় বিংশ শতকের সেরা প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার হিসেবে। ২০০৭ সালে এই আবিষ্কার মানে মাচুপিচুর নাম ওঠে নতুন সপ্তাশ্চর্যের তালিকায়।

বিংহ্যাম যার খোঁজ পেলেন, সেটি পাহাড় কেটে বানানো বিশাল এক পাথরের নগরী। শহরের দালান-কোঠাগুলোতে চুন-সুরকির মিশ্রণ ছাড়া একটার পর একটা পাথর গায়ে গায়ে এভাবে লেগে আছে যে একটি ছুরির ফলা ভেতরে ঢুকবে না। অবাক বিংহ্যাম ভাবলেন, কিন্তু কেন? কারাই বা এটা করল? পেরুর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কালচারের একসময়কার পরিচালক ও পেরুভিয়ান বিশেষজ্ঞ লুই লামবরারারস পরে মাচুপিচুকে পরিচয় করিয়ে দেন, প্রাসাদ, মন্দির, বসতঘর, গুদামের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এক নগরী হিসেবে; যেখানে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় রীতি উদযাপন করা হতো। মাচুপিচুতে দালান, চত্বর আর চাতালগুলো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত সরু লেন বা পথের মাধ্যমে। শহরটির বিভিন্ন অংশ ঘিরে রাখা বেষ্টনী, পরিখা সবকিছু মিলিয়ে একে সামরিক ঘাঁটি মনে হলেও লামবরারারসের ধারণা ছিল এই নিরাপত্তাব্যবস্থা গোপনীয় ধর্মীয় আচার পালনের জন্যই।

সেই হারানো শহর নয়: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের ১৯১৩ সালের এপ্রিল সংখ্যায় বিংহ্যামের আবিষ্কারের কাহিনি ছাপা হয়। সেই সঙ্গে পেরুর পাহাড়রাজ্যের এই আশ্চর্য নগরী পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়ে যায়।  বিংহ্যামের বিশ্বাস ছিল, তিনি ইনকাদের সেই হারানো শহর ভিলকাবামবার খোঁজ পেয়েছেন, যেখানে শেষ স্বাধীন ইনকা শাসক স্পেনীয় আক্রমণকারীদের সঙ্গে এক বছর মরণপণ লড়াই করেছিলেন। প্রায় অর্ধশতাব্দী বিংহ্যামের ওই ধারণাই সত্যি বলে ধরে নিয়েছিল সবাই। তবে সত্যি হলো, বিংহ্যাম যে নগরী আবিষ্কার করেছেন, সেটি সেই হারানো শহর নয়, বরং নতুন এক হারানো শহর।  ১৯৬৪ সালে অভিযাত্রী গেনে সেভয় ওই শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। তিনি প্রমাণ করেন, মাচুপিচুর পশ্চিমে এসপিরিতো পাম্পা হলো বিংহ্যামের খোঁজ করা সেই হারানো শহর। আশ্চর্যজনক হলেও ১৯১১ সালের সেই অভিযানের সময় বিংহ্যাম এসপিরিতো পাম্পার সেই ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেয়েছিলেন। ইনকাদের কিছু পাথরের দেয়াল আর সেতু খুঁজে বেরও করেছিলেন। তবে এগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে এগিয়ে যান মাচুপিচুর দিকে। সেভয় বাকি বেশির ভাগ ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পান।

মাচুপিচু তাহলে কী: সেভয়ের এই আবিষ্কারে একটা নতুন প্রশ্ন চলে এলো সামনে, তাহলে বিংহ্যামের সন্ধান পাওয়া শহরটির পরিচয় কী? স্প্যানিশদের কোনো নথিতে সেভাবে আসেনি মাচুপিচুর কথা। তার মানে, ইনকাদের রাজধানী কাস্কো থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত হলেও ইউরোপীয় আক্রমণকারীরা এই নগরের খোঁজই পাননি আদতে। এমনকি এর অস্তিত্ব সম্পর্কেও নেই কোনো তথ্য।  বিংহ্যাম ধারণা করেন, এখানে ইনকা সাম্রাজ্যের নির্বাচিত নারীদের রাখা হতো, যারা ইনকা রাজা ও তাঁর সভাসদদের সেবা করতেন। তিনি শতাধিক কঙ্কাল পান এলাকাটিতে। তাঁর মতে, এগুলোর ৭৫ শতাংশ নারীর। তবে পরবর্তী গবেষণায় এখানে বাস করা নারী-পুরুষের সংখ্যা মোটামুটি সমান ছিল বলেই প্রমাণ মেলে।

আধুনিক ধারণা: মাচুপিচু নিয়ে জন রো, রিচার্ড বারগার, লুসি সালাজারদের গবেষণায় অনুমান করা হয় ইনকা শাসক পাচাচুটি শহরটি স্থাপন করেন বিশ্রাম নেওয়ার কেন্দ্র হিসেবে। বারগার যেমন মনে করেন অভিজাতরা যেন শহরে কোলাহল, কর্মব্যস্ততা থেকে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য বানানো হয় শহরটি।  আরেক গবেষক ব্রায়ান বউয়ারের ধারণা, ১৪৫০ সালের দিকে স্থাপন করা হয় শহরটি। এটির আয়তন ইনকা শহর বিবেচনায় বেশ ছোট। আর এখানে সাধারণত ৫০০-৭৫০ জন মানুষ থাকত।  কোনো কোনো গবেষকের ধারণা, নির্মাণের ১০০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। সম্ভবত স্পেনীয়রা এ এলাকায় আগমনের আগেই শহরটির অধিকাংশ অধিবাসী গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল।

মাচুপিচুতে কী দেখবেন: মাচুপিচু শব্দের অর্থ পুরোনো পর্বত। শহরটির অবস্থান পেরুর উরুবাম্বা উপত্যকায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৪০০ মিটার (৭ হাজার ৮৭৫ ফুট) উচ্চতায়। মাচুপিচুতে দেখার মতো অনেক কিছু আছে। প্রতিটি স্থাপনা, জায়গা বা জিনিসের নিজস্ব ইতিহাস, অর্থ আছে। তবে সবই পুরাতাত্ত্বিক সৌন্দর্যের বিচারে অতুলনীয়। এই নগরীর মধ্যে ১৯৬টির মতো পর্যটন স্পট আছে। এর মধ্যে আছে মন্দির, ঝরনা, বসতঘরসহ আরও কত কী! মাচুপিচু ভ্রমণের সময় প্রায় ৪০০ মিটার দীর্ঘ এক দেয়াল দিয়ে আলাদা দুটি অংশ পাবেন। একটি অংশ মূলত কৃষিকাজের জন্য নির্ধারিত এলাকা, অপর অংশকে মূল শহর বলতে পারেন। কৃষি এলাকাটায় বিভিন্ন ফসল চাষের জন্য ধাপে ধাপে কাটা জমি আর চাতাল চোখে পড়ে। সেখানেই ছোট ছোট কিছু বাড়ি আছে, ধারণা করা হয়, এগুলো কৃষকদের থাকার জায়গা।  অন্য অংশে পাবেন রাজাসহ অভিজাতদের বাড়ি। আছে শহরের বিভিন্ন আচার পালনের মূল কেন্দ্র প্লাজা সাগরাদা। এখানেই পাবেন ইনতিহুয়ানতানা পাথর, একে সূর্যপাথর নামেও চেনে। গ্রুপো দেল কনডর নামে পরিচিত ধর্মীয় আচার পালনের মন্দির এলাকার অবস্থানও এখানে।

আপাতত বন্ধ মাচুপিচুর দুয়ার: মাচুপিচুতে যেতে হলে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে কাস্কো শহরে। সেখান থেকে ট্রেনে চাপবেন কিংবা শুরু করবেন হাঁটা। ট্রেনে চাপলে পৌঁছাবেন এগুয়েস কেলুয়েন্তেস স্টেশনে। এখান বাসের ছোট্ট একটি ভ্রমণই আপনাকে পৌঁছে দেবে ইনকাদের রহস্যময় নগরী মাচুপিচুর কাছে। তবে আপাতত চাইলে আশ্চর্য সুন্দর জায়গাটিতে যেতে পারবেন না। পেরুর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাচুপিচু ও ইনকা ট্রেইল আপাতত পর্যটকদের জন্য বন্ধ। কাজেই পরিকল্পনা করতে থাকুন, আপনি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হতে এবং যোগাড়যন্ত্র শেষ করতে করতে আশা করা যায় ইনকা নগরীর দুয়ার খুলে যাবে আবার!

নিউজ ট্যাগ: মাচুপিচু

আরও খবর



গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলার বিএনপি নেতা বাবু গ্রেফতার

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা সৃষ্টির মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামি মোঃ ইয়াহিয়া ওরফে কাজী বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩।

র‍্যাব এক বিবৃতিতে জানায়, রাজধানীর সবুজবাগ থানাধীন খিলগাঁও এলাকায় ২০১২ সালে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে ব্যাপক নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালায়। উক্ত ঘটনায় রাজধানীর সবুজবাগ থানায় দায়েরকৃত নাশকতা মামলার ২০১২ সাল থেকে পলাতক এজাহার নামীয় কুখ্যাত আসামী রাজধানীর সবুজবাগ থানার দক্ষিণ বাসাবো এলাকার মৃত আব্দুল মজিদ এর ছেলে মোঃ ইয়াহিয়া ওরফে কাজী বাবু (৫২)-কে গ্রেফতার করা হয়।

বিবৃতিতে আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা একত্র হয়ে রাজধানীর সবুজবাগ থানাধীন খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রাস্তা অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চালায়। উক্ত সময় সেখানে বিআরটিসির একটি দোতলা বাস আসলে রাস্তা অবরোধ করে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা গাড়ি থামিয়ে লাঠি-সোটা, ইট-পাটকেল দিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে এবং গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এছাড়াও গাড়ির ড্রাইভার, হেলপার এবং গাড়ির যাত্রীদের এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করে। বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখে গাড়ির যাত্রী এবং এলাকার সাধারণ লোকজন উক্ত স্থান থেকে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের লাঠি ও ইট-পাটকেলের আঘাতে কিছুসংখ্যক সাধারণ লোকজন গুরুতর আহত হয়। গাড়ী ভাংচুরের শিকার ড্রাইভার বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী ১৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে।

গ্রেফতারকৃত কাজী বাবু ২০১২ সালে রাজধানীর সবুজবাগ থানার ৪নং ওয়ার্ড এর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ছিল। উক্ত সময়ে তার নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা একাধিক নাশকতা কার্যক্রম চালায়। সে ২০১৩ সালের নাশকতা মামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে ২০ দিন জেল খেটে  জামিনে মুক্তি পায়। জামিনে মুক্তির পর থেকেই ধৃত আসামী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পলাতক জীবন যাপন করে আসছে। উক্ত মামলায় কাজী বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্য পলাতক সকল আসামিদের গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। উল্লেখ্য গ্রেফতারকৃত কাজী বাবুর বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় ০৩ টি নাশকতা মামলা রয়েছে। উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‍্যাব।


আরও খবর



পতাকার আদলে ধানক্ষেত, প্রশংসায় ভাসছেন স্কুলশিক্ষক

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ মাসুদ রানা, কুড়িগ্রাম

Image

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকার আদলে ধান ক্ষেত সাজিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন মোঃ আবু জাফর (৩৫) নামের এক স্কুল শিক্ষক।

ওই স্কুল শিক্ষক উলিপুর পৌর এলাকার নাওডাঙা বাকরের হাট গ্রামের মোঃ আবু বক্করের ছেলে। তিনি উলিপুর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলে জানা গেছে। স্বাধীনতার মাসে ধান ক্ষেতের মাঝে চারা গাছ দিয়ে ফুটে উঠা জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি দেখতে উৎসুক জনতা ভীড় করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আবু জাফরের এক একর ৩০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ক্ষেতের এক শতক জমি জুড়ে ফুটে উঠেছে সবুজ রঙের চারা দিয়ে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি জমির আইলের পাশ দিয়ে বেগুনি ধান গাছের চারা রোপন করে ফুটিয়ে তুলেছেন পতাকার খুঁটি। বিরি-১০৪ জাতের ধানের সবুজ চারাকে পতাকার জমিন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ বেগুনি ধানের চারাকে বৃত্ত ও পতাকার খুঁটি স্বরুপ সারিবদ্ধ ভাবে রোপন করেছেন তিনি। প্রথমের দিকে ধান গাছের পাতায় সমৃদ্ধ রঙ না আসায় স্পষ্ট চিত্র বুঝা না গেলেও বর্তমানে ধান গাছের পরিপক্বতার কারণে দৃশ্যমান হয়েছে ক্ষেতটি। এমন ব্যতিক্রমি পতাকার আদলে ধান ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন লোকজন ছুটে আসছেন সেখানে।

আবু জাফর বলেন,আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি চাষাবাদ করে থাকি। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ব প্রকাশে মানুষজন বিভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চায়। তেমনি আমিও চেষ্টা করছিলাম মাত্র। স্বাধীনতার মাসে জাতীয় পতাকার আদলে করা ধানক্ষেতটি দৃশ্যমান হওয়ায় মানুষজনের দেখার আগ্রহ বেড়েছে।

ধান ক্ষেত দেখতে আসা লিটন মিয়া বলেন, মানুষজন দেশের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ থেকেই মুলত ব্যতিক্রমী কাজ করে থাকে। আবু জাফর ভাইয়ের জাতীয় পতাকার আদলে করা ধানক্ষেতটি সত্যি প্রশংসনীয়। এমন দৃশ্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এটি দেখে অনেকের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে বলে জানান তিনি।

শিক্ষার্থী মোঃ রাজু মিয়া বলেন, আমি বিভিন্ন কারুকার্য যেমন বইয়ের পাতা ও কাপড়ের তৈরি, পাথরের তৈরি সাজানো পতাকা দেখেছি। তবে ধানের চারা লাগিয়ে যে জাতীয় পতাকার প্রতিচ্ছবি বানানো যায় তা প্রথম দেখলাম সত্যি ভালো লাগলো।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, একজন কৃষক দেশের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে জমিতে জাতীয় পতাকার আদলে যে শস্যচিত্র ফুটিয়ে তুলেছে সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতায়

কৃষি বিভাগ সব সময় পাশে থাকবে বলে তিনি জানান।


আরও খবর



ইসরায়েলে হামলায় যেসব ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবহার করল ইরান

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করেছে ইরান। মূলত চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলার জবাবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে এই পাল্টা হামলা শুরু করেছে তেহরান। হামলার পরপর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইরান।

ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম করপোরেশন জানিয়েছে, শনিবারের হামলায় ইরান ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করেছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইরানের এই সমন্বিত আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনার সামান্য ক্ষতি হয়েছে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইরান।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকেও দাবি করা হয়, ইসরায়েলে হামলায় ব্যবহারের জন্য শতাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করেছে ইরান। যে কোনো সময় এ অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানায় ইসরায়েল।


আরও খবর



গরম কমাতে কী কী করেছেন, জানালেন চিফ হিট অফিসার

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

গরমের তীব্রতা বাড়ায় শনিবার থেকে সারা দেশে চলছে তিন দিনের হিট অ্যালার্টের সতর্কতা। সোমবার সেটি আরও ৭২ ঘণ্টার জন্য বাড়ানো হয়েছে। তীব্র গরমে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশের মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন?

এক বছর আগে দায়িত্ব নেওয়া বুশরা দেশের একটি টিভি চ্যানেলের মুখোমুখি হয়ে নিজের কাজ ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সবাইকে একসাথে নিয়ে হিট মোকাবিলা করবো, এটাই আমার কাজ। তবে আমি স্বাধীনভাবে কাজ করছি না, আমাকে সিটি করপোরেশনের অধীনে কাজ করতে হচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে প্রায় ৩০ মিলিয়নের বেশি মানুষের বসবাস, শহর খুব দ্রুত বড়ো হচ্ছে। পরিস্থিতিও খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, হিট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে এখানে প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন।

অনুন্নত এলাকায় গরমের প্রকোপ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর আমরা শহরের অনুন্নত অন্তত ১৫টি এলাকায় সবুজায়ন প্রোগ্রাম করেছি। যেখানে পাঁচ হাজারেরও বেশি বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদেরকে সবুজায়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের আমরা বুঝিয়েছি, নিজে ও পরিবারের সদস্যদের কীভাবে তীব্র গরম থেকে বাঁচাতে পারবো।

গত বছর হিট মওসুমে নিয়োগ হওয়ায় তখন বেশি কাজ করতে পারেননি জানিয়ে বুশরা বলেন, কাজ শুরু করলে রাতারাতি পরিবর্তন হবে না। আস্তে আস্তে এই পরিবর্তনের ফল পাওয়া যাবে। তবে পরিকল্পনা তিনি নিজে বাস্তবায়ন করতে না পারায় সময় বেশি লাগছে বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ পেলেও টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করতে বেশি সময় লেগে যায়। এছাড়া আমলাতন্ত্রও কাজের ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে জানান বুশরা।

চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন তীব্র গরম থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি চাইলেও একরাতে সব পরিবর্তন করে দিতে পারবো না। গরমে বেশি বেশি পানি পান ও শরীরের প্রতি নজর রাখতে হবে। যেহেতু এমন গরম আগে বাংলাদেশে ইতিহাসে হয়নি, তাই এই পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে আগের অভ্যাস বাদ দিতে হবে।

মানুষকে সচেতন করতে একটি সহজ ভাষায় ছবি সম্বলিত বুকলেট প্রকাশের কাজ চলছে বলে জানান এই চিফ হিট অফিসার। তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হবে, এমন প্রত্যাশা করা উচিত হবে না। আমি মনে করি, সব আলোচনাই ইতিবাচক। সমালোচনার দিকে নজর না দিয়ে কাজ করেই সময় পার করছেন বলেও জানান বুশরা আফরিন।

নিউজ ট্যাগ: বুশরা আফরিন

আরও খবর
ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




শ্রীলঙ্কায় রেসিং কারের ধাক্কায় নিহত ৭

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

শ্রীলঙ্কায় কার রেসিং ইভেন্টে রেসিং কারের চাপায় দর্শকসারিতে থাকা ৭ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছে। ইভেন্ট চলাকালীন একটি রেসিং কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে দর্শকদের মধ্যে ঢুকে পড়লে ঘটনাস্থলেই সাতজনের মৃত্যু হয়। দেশটির ফক্স হিল অঞ্চলের সামরিক এলাকা দিয়াতলাওয়ায় রবিবার (২১ এপ্রিল) কার রেস ইভেন্টে এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসি।

নিহতদের মধ্যে চারজন রেসার ছিলেন। তবে ঘটনার দিন তারা দর্শক হিসেবে ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে চার বছরের শিশু এজিনও ছিল।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন ট্র্যাকে দুর্ঘটনার বিষয়ে পরিপূর্ণ পুলিশ তদন্ত চলছে।

পুলিশের মুখপাত্র নিহাল তালডুয়া বলেন, গাড়িটি চলমান লেন থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আরেকটি গাড়ি ট্র্যাকে উল্টে যাওয়ার পর পরই দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়।

কর্মকর্তারা হলুদ বাতি জ্বালিয়ে দর্শক সারির কাছাকাছি চলে আসা গাড়ির গতি কমানোর চেষ্টা করেন। তাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও গাড়িগুলো দ্রুত গতিতে চলতে থাকলে একটি লাল গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্র্যাকের পাশে দর্শক সারিতে ঢুকে পড়ে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দুর্ঘটনার পর অনেকে চিৎকার করছেন এবং ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছেন।

গাড়ি চাপায় ঘটনাস্থলেই ৫ জন মারা যান। বাকি দুজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

শ্রীলঙ্কা অটোমোবাইল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা পরিচালিত ইভেন্টটি ১৯৯৩ সাল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে দেশটির অর্থনৈতিক সংকট এবং কভিডকালীন বিধিনিষেধের কারণে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটিই ছিল প্রথম রেস।

ইভেন্ট শুরুর আগে আয়োজকরা দর্শকদের জন্য অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রায় ১ লাখ লোক উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর